প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৯ মে : রবীন্দ্রভবনের সংগ্রহশালা থেকে রবীন্দ্রনাথের নোবেল পদক চুরি যাওয়ার বিষয়টি ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ সকালে জানাজানি হয়। এর কয়েকদিন পরেই নোবেল চুরির ঘটনার তদন্তে নামে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই )। কিন্তু আজ অবধি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পদক চুরির কোন কিনারা হয় নি।সিবিআইও তদন্তে সফলতা না পেয়ে ২০১০ সালে হাত তুলে দিয়েছে ।
আর সিবিআইয়ে এই ব্যর্থতাকে বড় করে তুলে ধরতে গিয়ে সোমবার বিস্ফোরক দাবি করে বসলেন পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের তৃণমূল বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী।এদিন ভাতারে কবিগুরুর জন্মদিবস অনুষ্ঠানের মঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠে মানগোবিন্দ বাবু বলেন,’রবীন্দ্রনাথকে নোবেল দিয়ে অপমান করা হয়েছিল।সেই কারণেই বাংলার ছেলেরা সেটি চুরি করে নিয়েছিল ।’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল চুরি যাওয়া নিয়ে বিধায়কের এমন মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে । সরব হয়েছে বিরোধীরাও ।
২৫ শে বৈশাখ কবিগুরুর জন্মদিবস উপলক্ষে
তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ভাতারে বিশেষ
অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে
যোগ দিয়ে বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী
কবিগুরুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন। এর পর অনুষ্ঠান মঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠে কবিগুরুর নোবেলচুরি যাওয়া নিয়ে বিধায়ক মানগোবিন্দ বাবু আরও বেশ কিছু কথা বলেন । তাঁর কথায়, ‘আমাদের বাংলায় বিজেপি কর্মীরা সবাই এখন সিবিআই-সিবিআই করে লাফাচ্ছে । সিবিআই কিন্তু চুরি যাওয়া সেই নোবেল খুঁজে বের করতে পারেনি।সেটি বের করার জন্য বাংলার পুলিশকে আবার লাগানো হচ্ছে। সিবিআইকে বলা হয়েছে, আপনারা সব তথ্য আমাদের দিন । আমরা সেটাকে (নোবেল) খুঁজে বার করার চেষ্টা করবো ।’ মানগোবিন্দবাবু প্রশ্ন তোলেন, সিবিআই করে কি ভিখারি পাসোয়ান কেশের ফায়শালা হয়েছে ? তাই সিবিআই-সিবিআই করে লাফিয়ে কিছু লাভ নেই। সিবিআইকে বলা হয়েছে,আপনারা সমস্ত তথ্য আমাদের দিন। আমরা সেটা(নোবেল)খুঁজে বার করার চেষ্টা করবো ।’ এরই পাশাপাশি রবীন্দ্র বন্দনা করে বিধায়ক বলেন, ‘আপনারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে জানুন শিখুন । রবীন্দ্রনাথকে না জানলে কিচ্ছু করার নাই ।’
রবীন্দ্রনাথের নোবেল চুরি নিয়ে তৃণমূল বিধায়কের এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন জেলা যুব কংগ্রেসের সভাপতি গৌরব সমাদ্দার । তিনি বলেন , তৃণমূলের নেতাদের কাছ থেকে এইসব বক্তব্যই প্রত্যাশিত । নোবেল দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে নাকি অসন্মান করা হয়েছে । এর থেকে বড় দুর্ভাগ্যজনক মন্তব্য আর কিছু হতে পারে না । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচিৎ এখনি এই বিধায়ককে বরখাস্ত করানো ।’ রবীন্দ্রনাথ তৃণমূলের এমএলএ কিংবা এমপি ছিলেন না বলেই কি তাঁর নোবেল পাওয়া নিয়ে তৃণমূল বিধায়ক এই সব বললেন ? এই প্রশ্নও তুলেছেন যুব কংগ্রেস নেতা। অপর দিকে জেলা বিজেপি নেতা কল্লোল নন্দন বলেন,’তৃণমূল বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাহলে কি ধরে নিতে হবে তৃণমূলের যোগ সাজশেই কবিগুরুর নোবেল পদ চুরি হয়েছে ?’