এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া,২০ ফেব্রুয়ারী : বাবা মায়ের সামনেই শবজি কাটার বঁটি দিয়ে নিজের গলার নলি কেটে আত্মঘাতী হলেন মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে । শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার অগ্রদ্বীপ গ্রামে । মৃতের নাম কিরণময় সরকার(৩৫) । শনিবার দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ । মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকে বিহ্বল পরিবার । শোকস্তব্ধ গ্রামবাসী।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অগদ্বীপের মাস্টারপাড়া এলাকায় বাড়ি কিরণময় সরকারের । তাঁরা দুই ভাই । সে ছোট । বড় জ্যোতির্ময় বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন । সেই সুত্রে সূত্রে তিনি বাইরে থাকেন। তাঁদের বাবা বৃদ্ধ জীবন সরকার জনমজুরির কাজ করেন । জীবনবাবুর স্ত্রী সুনীতিবালাদেবী বাড়িতেই থাকেন । কিরণময় কয়েক বছর ধরেই মানসিক রোগের শিকার । তাঁর চিকিৎসা চলছিল বলে পরিবার সুত্রে জানা গেছে ।
জানা গেছে, ছোটে ছেলের রোগের কারনে তাঁকে সর্বদা কার্যত আগলে আগলে রাখতেন মা সুনীতিবালাদেবী । ছেলে যাতে কিছু বিপদ আপদ ঘটিয়ে না ফেলে সেই ভয়ে ছেলেকে নিয়ে একটি পৃথক ঘরে ঘুমতে যেতেন তিনি । শুক্রবার রাতে খাওয়া দাওয়ার পর যথারীতি ছোট ছেলেকে নিয়ে ঘরে ঘুমতে চলে যান সুনীতিবালাদেবী । পাশের ঘরেই ছিলেন জীবনবাবু । শোবার ঘরে আসার কিছুক্ষনের মধ্যেই ঘরে থাকা শবজি কাটার বঁটি দিয়ে নিজের গলার নলি কাটতে শুরু করেন কিরণময় । এই দেখে সুনীতিবালাদেবী চিৎকার করে ওঠেন । তখন পাশের ঘর থেকে জীবনবাবু ছুটে আসেন । তারপর বৃদ্ধ-বৃদ্ধা মিলে ছেলের হাত থেকে বঁটি কেড়ে নেন । কিন্তু তার আগেই কিরণময়ের গলার নলি কার্যত দু’ফালা হয়ে যায় ।
জানা গেছে,এদিকে ছেলের গলা থেকে রক্তের স্রোত দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন সুনীতিবালাদেবী । তারপর জীবনবাবুর চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন । পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে কাটোয়া থানার পুলিশ এসে যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় । কিন্তু তার আগেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের । এদিন দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় । পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করেছে ।।