শ্যামসুন্দর ঘোষ,মন্তেশ্বর(পূর্ব বর্ধমান),০৭ আগস্ট : ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩ কিমি দূরে খড়ি নদীর জলে ভেসে উঠল নদীর স্রোতে তলিয়ে যাওয়া বৃদ্ধ কৃষকের মৃতদেহ । শুক্রবার সকালে গ্রামের পাশে খড়ি নদী পারাপার করতে গিয়ে স্রোতের টানে তলিয়ে যান পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর থানার ভোজপুর গ্রামের বাসিন্দা শাহাদুত মোল্লা(৬০) নামে ওই কৃষক । ওইদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত বোট নিয়ে নদীতে তল্লাশি অভিযান চালায় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের বাহিনী। কিন্তু ওই বৃদ্ধের কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি । শেষে এদিন শনিবার দুপুর ১২.৩০ নাগাদ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩ কিমি দূরে কাটোয়া-মেমারি রোডের উপর সেতুর পাশে শ্মশানের কাছে ঝোপের মধ্যে ওই কৃষকের মৃতদেহ আটকে থাকতে দেখেন স্থানীয় গ্রামবাসী । খবর পেয়ে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের লোকজন গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে আনে ।
ভোজপুর গ্রামের বাসিন্দা পেশায় কৃষক শাহাদুত মোল্লার বাড়িতে আছেন স্ত্রী, এক ছেলে, পুত্রবধু, নাতি-নাতনি নিয়ে ৬-৭ সদস্য । ছেলে চাষবাসের কাজ করেন । অল্পসল্প জমিজমা রয়েছে । পাশাপাশি ভাগ চাষও করতেন শাহাদুত । হতদরিদ্র পরিবার । মূলত চাষ থেকে উপার্জনের উপরেই অতিকষ্টে সংসার চলে ।
শুশুনিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ভোজপুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে খড়ি নদী । নদীর অন্য প্রান্তেই অধিকাংশ জমি রয়েছে শাহাদুত মোল্লার । সম্প্রতি জমিতে আমন ধান রোয়ানোর কাজ চলছিল । তাই প্রতিদিনের মত শুক্রবার সকালেও সাঁতরে নদী পারাপার করছিলেন ওই কৃষক । সেই সময় প্রবল স্রোতে তিনি তলিয়ে যান । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন কালনার এসডিও, মন্তেশ্বরের বিডিও ও মন্তেশ্বর থানার ওসিসহ পুলিশবাহিনী । পরে দুপুর নাগাদ কালনা থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের ডুবুরিরা এসে তল্লাশি অভিযান শুরু করে ।
কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত তল্লাশি অভিযান চালানোর পরেও ওই কৃষকের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি । শেষে প্রায় ১৮ ঘন্টা পরে ঘটনাস্থল থেকে ৩ কিমি দূরে খড়ি নদীর জলে ওই কৃষকের মৃতদেহ ভেসে ওঠে । এদিন দুপুরে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ । এদিকে দেহ উদ্ধার হতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবার পরিজন ও প্রতিবেশীরা । স্থানীয় গ্রামবাসীদের দাবি, অসহায় ওই পরিবারটিকে সরকারিভাবে সাহায্য করা হোক ।
এই বিষয়ে শুশুনিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান পার্থসারথি ঘোষ বলেন, ‘আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন বণ্যা পরিস্থিতিতে মৃতদের ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে । ভোজপুর গ্রামের ওই কৃষকের পরিবার যাতে ওই ক্ষতিপূরণ পান তার জন্য চেষ্টা চলছে ।’।