শেখ মিলন,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২৬ নভেম্বর : শোয়ার ঘর থেকে এক গৃহবধু ও তাঁর দেড় বছরের মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার হরিপুর গ্রামে । শুক্রবার দুপুরে চন্দনা বাউড়ি(ঘাটোয়াল) নামে বছর উনিশের ওই গৃহবধুকে ঘরের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় তাঁর পরিবারের লোকজন । ওই ঘরের মেঝেতেই পড়েছিল বধুর একমাত্র শিশুকন্যা নন্দিনীর নিথর দেহ । শিশুটির গলায় বধুর একটি ব্লাউজ প্যাচানো অবস্থায় ছিল । প্রাথমিকভাবে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান ওই গৃহবধু মেয়েকে শ্বাসরোধ করে মেরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে ।
মৃতার স্বামী সঞ্জীব ঘাটোয়াল জানান, এদিন সকালে তিনি ও তাঁর কাজে যাবার সময় তাঁর স্ত্রীও মাঠে কাজে যাওয়ার জন্য জিদ করে । কিন্তু বাচ্ছাটার কথা ভেবে তিনি রাজি হননি । এনিয়ে অল্পবিস্তর তর্কাতর্কিও হয় । সেই অভিমানেই চন্দনাদেবী মেয়েকে মেরে নিজে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে মৃতার শ্বশুরবাড়ির তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে । ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।
জানা গেছে,আউশগ্রামের বটগ্রামে বাপের বাড়ি চন্দনাদেবীর । হরিপুর গ্রামের পুরনদিঘির পাড়ের বাসিন্দা পেশায় জনমজুর সঞ্জীব ঘাটোয়ালের তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল । বছর তিনেক আগে তাঁদের বিয়ে হয় । তাঁদের একটিই সন্তান ।সঞ্জীবরা তিন ভাই স্ত্রী, কন্যা ও ভাই রাহুলকে নিয়ে পৃথক সংসারে সঞ্জীবের ৷ তাঁর অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া দু’কামরার মাটির বাড়ি । কিছুটা পাশেই আর এক ভাই তাঁদের বাবাকে নিয়ে আলাদা বাড়িতে বসবাস করেন । পরিবারের সকলের মূল পেশা জনমজুরি ।
স্থানীয় ও পরিবার সুত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মত এদিনও সঞ্জীব ও তাঁর ভাই রাহুল যথারীতি ধান কাটার কাজ করতে মাঠে চলে যান । বাড়িতে মেয়েকে নিয়ে ছিলেন চন্দনাদেবী । তারপর দুপুর নাগাদ সঞ্জীবরা বাড়িতে খেতে এসে দেখেন ভাইয়ের ঘর খোলা । কিন্তু তাঁদের ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ । অনেক ডাকডাকি করেও ঘর না খোলা হলে তখন তাঁরা দরজার খিল ভেঙে ভিতরে ঢোকেন । তখনই সঞ্জীববাবু তাঁর স্ত্রীকে ঘরের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় ও মেয়েকে ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখতে পান । সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের উদ্ধার করে ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে আনা হয় । কিন্তু মা ও মেয়েকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসরা । মর্মান্তিক এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে ।।