প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৮ জুন : শ্বশুর বাড়ির চিলেকোঠার ঘর থেকে উদ্ধার হল ৭ বছর বয়সী শিশু পুত্র ও তাঁর মায়ের মৃতদেহ । ঘটনা জানাজানি হতেই শুক্রবার সকাল থেকে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ থানার অমরপুর গ্রামে ।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে । পুলিশ জানিয়েছে মৃতদের নাম মহাদেব মালিক (৭) ও তাঁর মা সুষমা মালিক (২৫) । ময়নাতদন্তের জন্যে শুক্রবার মৃতদেহ দুটি পাঠানো হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান সন্তানকে
প্রাণে মারার পর মহিলা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন । অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে এই জোড়া মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ,বছর আট আগে খণ্ডঘোষের অমরপুর গ্রামের যুবক
বিপুল মালিকের সঙ্গে বিয়ে হয় বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের গোস্বামী গ্রামের তরুণী সুষমার। মৃতার দাদা প্রশান্ত দলুই বলেন ,তাঁর বোনের বিবাহিত জীবন সুখের ছিল না।বিয়ের বছর দেড়েকের পর থেকেই বিভিন্ন কারণে সুষমার সঙ্গে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মধ্যে অশান্তি লেগে থাকতো । বাবার বাড়ি থেকে টাকার আনার জন্যেও তাঁর বোনের উপরে চাপ সৃষ্টি করা হত ।বোনের চরিত্র নিয়েও সন্দেহ করতো স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন।এইসবের কারণে মাঝে মধ্যে বোনের সংসারে অশান্তিও হত।পূর্বে অশান্তি থানা পর্যন্ত গড়িয়েছিল।পুলিশী হস্তক্ষেপে তখনকার মত সব ঠিক ঠাক হয়ে যায় ।
মৃতার আত্মীয় বামাপদ দলুই বলেন,বৃহস্পতিবার রাতে কি ঘটনা ঘটেছিল তা এখনও তাঁদের কাছে পরিস্কার নয় । অঘটন ঘটেছে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে তাঁরা অমরপুর গ্রামে সুষমার শ্বশুর বাড়িতে পৌছান ।সেখানে গিয়ে দেড় বছর বয়সী সুষমার মেয়ের কোনও খোঁজ পান না ।জানতে পারেন সুষমার স্বামী ,শ্বশুর ও শাশুড়ি গা ঢাকা দিয়েছে।প্রতিবেশীরা শ্বশুর বাড়ির চিলেকোঠার ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকা সুষমার ঝুলন্ত দেহ নামায়।ওই ঘর থেকেই সুষমার ৭ বছর বয়সী শিশুপুত্র মহাদেবের ঝুলন্ত মৃতদেহও উদ্ধার হয় । খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পাঠায় । বধূর বাবার বাড়ির লোকজন সন্দেহ করছেন সুষমা ও মহাদেবকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অভিযোগের তীয় বধূর স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে । যদিও এই মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত খণ্ডঘোষ থানায় লিখিত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি বলে পুলিশ জানিয়েছে ।
এসডিপিও( বর্ধমান দক্ষিন )আমিনুল ইসলাম খান জানিয়েছেন , ‘খণ্ডঘোষ থানার অমরপুর গ্রামে একটি বাড়ি থেকে এক বধূ ও তাঁর পুত্র সন্তানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে । পুলিশ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে নিজের সন্তানকে প্রাণে মেরে দেওয়া পর মহিলা আত্মঘাতী হয়েছেন । এখনও পর্যন্ত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ।স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে সাংসারিক অশান্তি ছিল বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার পর থেকে মহিলার স্বামী ,শ্বশুর ও শাশুড়ি পলাতক। মৃতদের বাবার বাড়ির তরফে কেউ যদি কোনও অভিযোগ জানান তার ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।’।