দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২১ মার্চ : বেলা পর্যন্ত বন্ধ ঘরের দরজা । ডাকাডাকি করেও কারোর কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না । সন্দেহ হওয়ায় পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকতেই চমকে যান । তাঁদের নজরে পরে ঘরের সিলিং থেকে ঝুলছে যুবকের দেহ । মেঝেতে পড়ে গলায় গামছা জড়ানো তাঁর স্ত্রীর মৃতদেহ । তাঁদের কিশোরী মেয়ের মৃতদেহ পড়ে রয়েছে খাটের উপরে । ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার খাজুরডিহি অঞ্চলের পানুহাট বৈদ্যপাড়ায় । সোমবার সকালে একসঙ্গে তিন জনের মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে ব্যপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় । খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় । পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম নইম শেখ(৩৪), কামরুন বিবির (২৯) ও পিঙ্কি খাতুন(১৪) । এদিকে ওই দম্পতির ও তাঁদের কিশোরী কন্যার মৃত্যুর কারন নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে ।
জানা গেছে,পানুহাট বৈদ্যপাড়ার বাসিন্দা নইম শেখরা ৬ ভাই । তিনি ছোট । পেশায় গাড়িচালক নইম স্ত্রী কামরুন বিবি ও একমাত্র সন্তান পিঙ্কি খাতুনকে নিয়ে পৃথক সংসারে থাকতেন । পিঙ্কি জন্ম থেকেই মূক ও বধির । সে স্থানীয় একটি স্কুলে নবম শ্রেণীতে পড়াশোনা করত । অভাবের সংসার ছিল নইমের ।
পরিবার সুত্রে জানা গেছে,রবিবার রাতে খাওয়া দাওয়ার পর নইমরা নিজের ঘরে ঘুমতে চলে যান । সাধারণ খুব সকালেই উঠে পড়েন তিনজনে । কিন্তু এদিন সকাল দশটা পর্যন্ত তাঁরা ঘরের দরজা খুলছেন না দেখে সন্দেহ হয় পরিবারের সদস্যদের । প্রথমে তাঁরা ডাকাডাকি করেন । এরপর ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকতেই তিন জনের মৃতদেহ দেখতে পান তাঁরা । খবর পেয়ে সকাল প্রায় এগারোটা নাগাদ তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় কাটোয়া থানার পুলিশ ।
এদিকে দম্পতি ও তাঁদের কিশোরী কন্যার মৃত্যুর কারন নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে । পারিবারিক অভাব এবং সেই সঙ্গে প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে দুঃশ্চিতার কারনেই মেয়েকে মেরে ওই দম্পতি আত্মঘাতী হয়েছেন নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারন আছে তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ ।।