জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),১৯ জুন : গ্রীষ্মকাল এলেই প্রায় প্রতিবছরই রাজ্যের বিভিন্ন ব্লাডব্যাংকে দেখা দেয় রক্ত সংকট। রক্তের অভাবে চরম বিপদে পড়ে যায় মুমূর্ষু রুগী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। পরিস্থিতির মোকাবেলায় এগিয়ে আসে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা । তাদের উদ্যোগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আয়োজিত হয় স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির। এই ব্যাপারে পেছিয়ে থাকল না পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা পুরসভা।
রবিবার(১৯ শে জুন) গুসকরা পুরসভার উদ্যোগে এবং বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের শাখার সহযোগিতায় গুসকরা বালিকা বিদ্যালয়ে আয়োজিত হল স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির । শিবির থেকে প্রায় ৬০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করা হয়। রক্তদাতাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মহিলা ছিলেন। গুসকরা শহরের বাইরে থেকেও অনেকেই রক্তদান করতে এগিয়ে আসেন।সংগৃহীত রক্ত ব্লাডবব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রক্ত সংগ্রহ করার জন্য যে ‘কিট’ এর প্রয়োজন হয় উপস্থিত রক্তদাতার থেকে তার সংখ্যা কম থাকায় রক্তদান করতে এসেও অনেককে ভগ্নহৃদয়ে ফিরে যেতে হয়। খুব শীঘ্রই তাদের জন্য আরও একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করার আশ্বাস দেওয়া হয়। রক্তদান শিবিরকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীদের মধ্যে যথেষ্ট উৎসাহ দ্যাখা যায়।
রক্তদান শুরুর আগে কউন্সিলর ও রক্তদাতাদের উপস্থিতিতে একটি ছোট্ট অনুষ্ঠান হয় । সেখানে বিভিন্ন বক্তা প্লাস্টিকের কুফল সম্পর্কে প্রত্যেককে সচেতন করেন এবং প্লাস্টিক মুক্ত গুসকরা শহর গড়ে তোলার জন্য প্রত্যেকের কাছে আবেদন করেন। শিক্ষক জীবন বাবু – সহজ সরল ভাষায় বর্তমান যুগে সমাজের উপর থ্রি ‘পি’ এর সমস্যা ব্যাখ্যা করেন ।
রক্তদাতাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য শিবিরে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার, গুসকরা বিট হাউসের ওসি অরুণ কুমার সোম, ট্রাফিক গার্ড আধিকারিক অনন্তদেব সাহা, বিশিষ্ট ডাক্তার শ্যামল দাস, শিক্ষক জীবন চৌধুরী, গুসকরা পুরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর দেবাশীষ গোস্বামী সহ বেশ কয়েকজন কর্মী এবং চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী, ভাইস চেয়ারম্যান বেলি বেগম সহ প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা ।
রক্তদাতাদের অভিবাদন জানিয়ে বিধায়ক বলেন – বিকল্প কিছু না আসা পর্যন্ত ব্লাড ব্যাংকে রক্তের অভাব মেটাতে প্রতিটি মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে ও স্বেচ্ছায় রক্তদান করতে হবে। তবেই মুমূর্ষু রুগীরা বাঁচবে।
চেয়ারম্যান কুশল বাবু বললেন,’সামাজিক জীব হিসাবে প্রতিবেশিদের পাশে থাকা ও রক্তের অভাবে যাতে কেউ সমস্যায় না পড়ে সেটা দ্যাখা আমাদের নৈতিক কর্তব্য। তাই আমরা এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছি। আমাদের ইচ্ছা আগামী দিনে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা। তিনি আরও বললেন- যারা আজ কিটের অভাবে ইচ্ছে থাকলেও রক্তদান করতে পারেননি তাদের জন্য শীঘ্রই আরও একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হবে ।’।