এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৮ আগস্ট : হিন্দু ওবিসিদের বঞ্চিত করে মুসলিমদের পাইয়ে দেওয়ার নামে তোষনের রাজনীতি বন্ধের দাবিতে শুক্রবার বিধানসভা ঘেরাও করবে বিজেপি । আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতার প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কর্মসূচি ঘোষণা করলেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ ও রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো । তিনি জানিয়েছেন, ২৯ আগস্ট দুপুর ১২ টার সময় বিধানসভা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে । কলেজ স্কোয়ার থেকে মিছিল করে তারা বিধানসভার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন । তিনি বলেন,’এটি হিন্দু ওবিসিদের বঞ্চনা এবং তোষণ নীতির বিরুদ্ধে একটা জোরালো আন্দোলন আগামীকাল সরকার দেখতে পাবে । লক্ষাধিকের উপর কর্মীরা অংশগ্রহণ করবে ।’ তিনি রাজ্যের সমস্ত হিন্দু ওবিসিদের এই আন্দোলনে সামিল হওয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়াতেও ব্যাপকভাবে প্রচারের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন । সাংসদ বলেন,’এটি কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি নয় । এটা নিজের অধিকার রক্ষার লড়াই ।’
সাংবাদিক সম্মেলনে একটি লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো । তিনি বলেন,’পশ্চিমবঙ্গে ওবিসি সংরক্ষণের নামে মমতা ব্যানার্জির সরকারের মুসলিম তোষণ করছে । ২০১০ থেকে ২০১২ সালের ৭৭ টি মুসলিম সম্প্রদায়, যেমন আনসারী,শেখ,পাঠানসহ সহ অনেককে ওবিসি ভুক্ত করা হয় শুধুমাত্র মুসলিম ভোট ব্যাংকের জন্য । কিন্তু আমাদের সংবিধান কি তাই বলে ? সংবিধান বলছে, সংরক্ষণ দেওয়া হয় শুধুমাত্র সামাজিক অনগ্রসতার ভিত্তিতে । ধর্মের ভিত্তিতে নয়।’
সাংসদ বলেছেন,’২০২৪ সালে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে । কারণ এটি ধর্মভিত্তিক এবং সংবিধান বিরোধী । কলকাতা হাইকোর্ট বলেছে এটি মুসলিম তোষণের ছদ্মবেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এই কাজ করছেন । আর হিন্দু ওবিসিরা বঞ্চনার শিকার হচ্ছে ।
যেমন : নাপিত, গোয়ালা, কুম্ভকার, কুর্মি, তন্তুবায়, স্বর্ণকার, তিলি প্রভৃতি এই সকল যে ব্যক্তিরা সংরক্ষণের অংশীদার কমে যাচ্ছে ।’
জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো বলেন, ‘৯৯ শতাংশ নুতনযুক্ত সম্প্রদায় হচ্ছে মুসলিম । যাতে হিন্দু যুবকদের চাকরি এবং শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করেছে । লক্ষ লক্ষ যুবকদের ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে । এই অবৈধ নীতির প্রভাবে কলেজে ভর্তি, যেমন ডব্লিউবিসিএপি বন্ধ হয়ে গেছে । ৮৫ শতাংশ আসন ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে৷ যার ফলে লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হতে পারছে না । পুলিশ শিক্ষক wbpsc প্রভৃতি চাকরির পরীক্ষা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে । যুবকেরা বেকার হয়ে যাচ্ছে । ভিন রাজ্যের পাড়ি দিতে বাধ্য হচ্ছে । পরিযায়ী শ্রমিক হচ্ছে । এই পরিস্থিতি করে রেখেছেন মাননীয়া ।’
এই সমস্ত মামলার রাজকোষ থেকে অর্থ খরচ করার বিষয়টিও উত্থাপন করে বিজেপি সাংসদ তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন৷ তিনি বলেছেন,’রাজ্য সরকার করদাতাদের অর্থ ব্যয় করে সুপ্রিম কোর্টে মামলার লড়ছে । এটা মমতা সরকার কেন করছে ?সরকারের অর্থ, করদাতাদের অর্থ ব্যয় করে মমতা ব্যানার্জির সরকার সুপ্রিম কোর্টে মামলার লড়ছে৷ কারণ হিন্দু অবিসিদের বঞ্চিত করে মুসলিম ওবিসিদের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে।’ তিনি বলেন, ৫ লক্ষ অবৈধ সার্টিফিকেট বাতিল করা হয়েছে । তারপরেও নতুন লিস্ট তৈরি করে আবার তোষণ চালাতে শুরু করেছেন উনি ।’
জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর কথায়,’সরকারের যে চরিত্র সেটা হল হিন্দু বিরোধী । সংবিধান বিরোধী । সংবিধানে অনুচ্ছেদ ১৫-১৬ লঙ্ঘন করে উনি এই সমস্ত কাজ কর্ম করছেন । সংরক্ষণ ধর্মের ভিত্তিতে নয়, সামাজিক অনগ্রসতার ভিত্তিতে করতে হবে ৷ আর সেটাই হওয়া উচিত । ন্যাশনাল কমিশন ফর ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস বারবার এনিয়ে বলছে, কিন্তু তাকে উপেক্ষা করা হচ্ছে ।’ তিনি বলেন,’তাই আমাদের দাবি অবৈধ কোটা বাতিল করুন । হিন্দু ওবিসিদের স্বার্থে নতুন জরিপ করুন । মাহিষ্য, চাষা, সদগোপদের ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে । এটা করুন । মামলায় রাজ্যের অর্থ ব্যয় বন্ধ করতে হবে । আমরা হিন্দু অনগ্রসর শ্রেণীর পাশে দাঁড়িয়েছি এবং মমতা সরকারের যে অত্যাচার তার শেষ থেকে ছাড়বো আমরা ।’।

