এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৭ আগস্ট : আরজি কর কান্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পদত্যাগের দাবিতে আজ মঙ্গলবার ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর ডাকা নবান্ন অভিযানে অংশ নেওয়া প্রতিবাদীদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ, জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগে বহু মানুষ আহত হয়েছে বলে জানা গেছে । একজন পড়ুয়া পুলিশের ছোড়া গুলি অথবা কাঁদানে গ্যাসের সেল লেগে গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । তিনি জানান ওই পড়ুয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । পুলিশের এই প্রকার আক্রমণের প্রতিবাদে বুধবার ১২ ঘন্টার বাংলা বনধের ডাক দিয়েছেন তিনি । সুকান্ত বলেন,’আজকে প্রতিবাদীদের ওপর যে বর্ববোরিত আক্রমণ হয়েছে তার তীব্র নিন্দা করে আমরা সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি যে রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে সকলে পথে নামুন । ছাত্রদের ওপর এই বর্বরোচিত আক্রমণের প্রতিবাদে আগামীকাল ১২ঘন্টার সাধারণ বনধ সফল করুন ।’ তিনি বলেন,’এটা শুধু বিজেপির বনধ নয় । আমি সাধারণ মানুষের কাছে হাতজোড় করে বলবো আজ যে ছেলেমেয়েদের ওপর লাঠিচার্জ হয়েছে কাল আপনার বাড়ির ছেলেমেয়েদের ওপর হবে । তাই আমরা রাজ্যের সাধারণ মানুষকে বলছি, আরজি করেন সেই বোনটা যেমন অত্যাচারিত হয়েছে কালকে আপনার বাড়ির মেয়েটা সেই রকম অত্যাচারিত হতে পারে । তাই এই বনকে সফল করুন । এই বনধ স্বেচ্ছাচারী ও স্বৈরাচারী সরকারের হাত থেকে রাজ্যকে রক্ষা করার জন্য ।’
পাশাপাশি তিনি মুখ্যমন্ত্রীর মমতা ব্যানার্জীর উদ্দেশে প্রশ্ন করেন,’যদি কোন ভাই তার দিদির ধর্ষণের প্রতিবাদে রাস্তায় নামে তাহলে কি তারা কোন অন্যায় করেছে ? কোন দাদার বোন যদি ধর্ষিতা হন তিনি যদি মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন আমি ব্যর্থ পদত্যাগ করুন, তাহলে কি সে কোন অন্যায় করেছে ? পুলিশ আজ কেন শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপরে লাঠিচার্জ করলো ? কেন কাঁদানে গ্যাস ছুড়লো ?’ সুকান্তর অভিযোগ,’এমনকি বয়স্ক মানুষ এবং মহিলারা পর্যন্ত ছাড় পায়নি । পুলিশ বলছে আন্দোলনকারীরা নাকি পাথর ছুড়েছে । কিন্তু কোথাও পুলিশের লাঠিচার্জ এর আগে পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটেনি । ছাত্রদের কাছ থেকে আমরা অভিযোগ পাচ্ছি যে কেমিক্যাল মেশানো জল স্প্রে করা হয়েছে তাদের ওপর । এটা কেমন আচরণ ? আমাদের ছাত্র-ছাত্রী বেকার যুবক যুবতীরা বাংলায় জন্ম নিয়ে কি কোন ভুল করেছেন ?’ তিনি বলেন,’দমদমে কাছে এক মহিলা আন্দোলনকারীর মাথায় একজন মদ্যপ পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে শুনলাম । পুলিশের এই আচরণ কোনভাবেই মানুষ মেনে নিতে পারছে না । যে মুখ্যমন্ত্রীকে এত দমনপিড়ন করে ক্ষমতায় থাকতে হচ্ছে, সেই মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতায় থাকার কি কোন অধিকার আছে ?’
তিনি বলেন,’এই আন্দোলনকে নতুন ভাবে চিন্তা ভাবনা করতে আমরা বাধ্য হয়েছি । এবার এটা হবে বিজেপির আন্দোলন । এই আন্দোলন স্বৈরাচারীকে হারানোর আন্দোলন, গণতন্ত্রকে পুণঃপ্রতিষ্ঠা করার আন্দোলন ।’
তিনি দলীয় আন্দোলনের সূচি প্রকাশ করে বলেন, ‘আগামী ৩০ আগস্ট বিজেপির মহিলা মোর্চার নেতৃত্বে রাজ্য মহিলা কমিশনা অফিস ঘেরাও । ৪ সেপ্টেম্বর বিডিও অফিস দিনভর ধর্ণা কর্মসূচি । ৬ সেপ্টেম্বর প্রতিটি মন্ডলে দুপুর বারোটা থেকে দুটো পর্যন্ত চাক্কা জ্যাম। মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফার দাবিতে সাত আগস্ট জেলাশাসকের অফিস ঘেরাও কর্মসূচি । এদিন আহত এবং গ্রেফতার হওয়া ছাত্র সমাজের মেডিকেল এবং আইনি সহায়তা দেয়ার জন্য একটি হেল্প লাইন নম্বর (8929759578) ঘোষণা করেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি । পাশাপাশি সুকান্ত আজ চাঞ্চল্যকর দাবি করে বলেন,’আর জি কর কাণ্ডে সঞ্জয় না যে সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে যে মোটরসাইকেল টা ব্যবহার করত সেটা রেজিস্ট্রেশন করা আছে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের নামে ।’।