এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৫ জানুয়ারী : মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস এরাজ্যে ক্ষমতায় আসার অব্যবহিত পরেই আচমকা কলকাতা থেকে একটা সংস্থার আত্মপ্রকাশ ঘটে । ২০১৮ সালে গঠিত ওই ভুঁইফোড় সংস্থাটি হল ‘বাংলা পক্ষ‘ । যার প্রতিষ্ঠাতা কলকাতার বাসিন্দা গর্গ চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি । অনেকে অভিযোগ করেন যে তৃণমূলের ছত্রছায়ায় গজিয়ে ওঠা ওই সংস্থাটির আসল উদ্দেশ্য হল বাঙালিদের মনে ‘প্রাদেশিকতার বিষ’ ছড়িয়ে দেওয়া । সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে যে তারা কেন এটা করতে চাইছে ? কি উদ্দেশ্য তাদের ?
রাজ্য বিজেপির যুবমোর্চার সহ সভাপতি তথা কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি ‘বাংলা পক্ষ‘র গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের একটা পুরনো টুইটের স্ক্রীন শর্ট শেয়ার করে তার আসল উদ্দেশ্য প্রকাশ্যে এনেছেন । ২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বরের একটা টুইটে গর্গ চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন, ‘কাল ১৬ ডিসেম্বর। ১৯৭১-এ এই দিনেই বাংলার ২/৩ অংশ মুক্তি পায় বাংলার বাইরে থেকে শাসিত হবার ক্লেদ থেকে। জয় বাংলা ।’ এখন প্রশ্ন ওঠে যে ১/৩ বাংলা তাহলে কি এখনো পরাধীন আছে ? যদিও বাংলা পক্ষ নামে ওই গোষ্ঠীটি তখন তিনি গঠন করেননি । তবে এটা স্পষ্ট যে তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকেই গর্গর মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী মানসিকতা প্রবল হয় ।
তরুনজ্যোতির শেয়ার করা দ্বিতীয় একটা স্ক্রীন শর্টে বাংলার ম্যাপের মধ্যে মধ্যে লেখা আছে “স্টেট বেঙ্গল” । আর এতে আরও স্পষ্ট হয়ে যায় গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের আসল উদ্দেশ্য কি । আজ এক্স হ্যান্ডেলে একটা পোস্টে তাদের ওই উদ্দেশ্য পরিষ্কার করে দিয়েছেন তরুনজ্যোতি তিওয়ারি । তিনি লিখেছেন, ‘যারা বাংলা পক্ষকে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি হিন্দুদের রক্ষাকর্তা ভাবেন তাদেরকে অনুরোধ করব এই বাংলা পক্ষের গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের পুরনো পোস্টগুলো একটু খুঁজে দেখতে। যদিও প্রোফাইলটি এখন আছে কিনা সন্দেহ। জামাত যেই গ্রেটার বাংলাদেশের কথা বলে, গর্গ সেটাই করত। পরবর্তীকালে বাংলা পক্ষ নামে সংগঠন আনে এবং ইসলামের পুরনো খেলা অর্থাৎ আল তাকিয়ার সুযোগ নেন, Art of Deception কি জিনিস সেটা নতুন করে বোঝাতে হবে না নিশ্চয়ই।’
তিনি আরও লিখেছেন,’রাষ্ট্রকে অস্বীকার করতে শেখাচ্ছে এই সংগঠন এবং দেশবিরোধী একটা মনোভাব গড়ে তুলছে। খারিজি মাদ্রাসা ভারতবর্ষের মুসলিমদের নিয়ে যেটা করছে এই সংগঠন পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের নিয়ে সেটাই করছে। গতকাল একটা পোস্ট করেছি এবং সেটা দেখে যারা লাফাচ্ছে তাদেরকে ছোট্ট একটা উদাহরণ দিলাম । promo দেখেই খুশি থাকুন আপাতত,ছবি মুক্তি খুব তাড়াতাড়ি হবে ।’
অন্য একটা পোস্টে তরুনজ্যোতি লিখেছেন,’যারা পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালীদের বাংলাদেশী বলে তারা অপদার্থ। ঠিক একই রকম ভাবে যারা বাংলাদেশের মানুষ কে পশ্চিমবঙ্গের বলে চালাতে চায়, তারাও অপদার্থ। বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ থেকে হিন্দুরা বিতাড়িত হয়েছিল এবং এখনো তারা অত্যাচারিত হচ্ছে। ভাষা তো একই ছিল, অসুবিধা কোথায় ছিল বুঝতে পারেন না?’
ইতিমধ্যে বাংলা পক্ষের কর্মকাণ্ড নিয়ে বহু বিতর্ক হয়েছে । বিতর্কে নাম জড়িয়েছে খোদ সংস্থার স্রষ্টার বিরুদ্ধেই । তবে তোলপাড় হয় গত বছরের শেষের দিকে ৷ শিলিগুড়িতে পরীক্ষা দিতে আসা দুই বিহারি পড়ুয়ার ঘরে ঢুকে গর্গর দলের দুই পান্ডা তাদের হেনস্থা করলে দেশ জুড়ে আলোড়ন পড়ে যায় । চাপে পরে বাংলা পক্ষের ওই দুই পান্ডাকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয় পুলিশ । কিন্তু কার ইন্ধনে গর্গ চ্যাটার্জিরা পশ্চিমবঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদের আগুন ছড়িয়ে যাচ্ছেন তা এখনো স্পষ্ট নয় । তবে তার সংস্থার গ্রহনযোগ্যতা এরাজ্যে নেই বললেই চলে ।।