প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,৩১ আগষ্ট : বুধবার বামেদের আইন অমান্য কর্মসূচী ঘিরে বুধবার বিকালে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল শহর বর্ধমানের কার্জনগেট চত্ত্বর । সেখানে থাকা বিশ্ববাংলা লোগো পর্যন্ত ভেঙে উল্টে দেয় বাম কর্মীরা । ক্ষোভে ফুঁষছে শাসক দলের নেতৃত্ব ।
এদিন বর্ধমানের বড়নীলপুর ও বর্ধমান স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় দুটি বড় সমাবেশের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। বড়নীলপুরের সভায় বক্তব্য রাখতে উঠে রাজ্যের শাসক দলকে তুলোধনা করেন সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য মহঃ সেলিম। দুটি মিছিল শহরের দুই প্রান্ত থেকে কার্জনগেটে সমবেত হয়। এরপর স্টেশন ও নীলপুর থেকে দুটি মিছিল শুরু হয়ে কার্জনগেট চত্ত্বরে পৌছায় । মিছিল জেলা শাসকের দপ্তরের সামনে এগোতে চেষ্টা করলে পুলিশ ব্যারিকেড করে আটকে দেয় । সেখানে দুপুর থেকেই বিরাট পুলিশবাহিনী মোতায়েন ছিল ।পুলিশ মিছিল আটকালে বাম কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায় । বামকর্মী ও সমর্থকরা পুলিশের উপর চড়াও হয়ে ইট পাটকেল ছুড়লে পাল্টা পুলিশও লাটিচার্জ করে । তা নিয়ে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে কার্জন গেট চত্ত্বর সহ সংলগ্ন এলাকা । তারই মধ্যে কার্জগেট চত্ত্বরে থাকা বিশ্ববাংলা লোগো ভেঙে উল্টে দেয় বাম কর্মীরা । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানোর পাশাপাশি জল কামানও ব্যবহার করে।
জেলা পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন নিজে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসরে নামেন । মিছিল থেকে ছোড়া ইঁটের আঘাতে ৭ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন । পুলিশ সূত্রে এও জানা গিয়েছে,এদিন ৫ টি পুলিশ গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এছাড়াও বর্ধমান দক্ষিনের বিধায়ক খোকন দাসের কার্যালয়সহ প্রায় এক কিমি এলাকা জুড়ে বাম কর্মীরা সরকারী সম্পত্তি ভাঙচুর ও নষ্ট করেছে। ওই এক কিমি রাস্তা জুড়ে পড়ে থাকা বড় বড় ইট পাথর পুলিশ সরানোর ব্যবস্থা করে। জানা গিয়েছে,
পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে । এদিনের ঘটনার পর পুলিশ সিপিআইএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আভাস রায়চৌধুরী সহ ১৪০ জন বাম কর্মীকে আটকও করেছে।
গোটা ঘটনার জন্য সিপিআইএম নেতা মহম্মদ সেলিম এদিন পুলিশকে দায়ী করে বলেন,’পুলিশ জোরপূর্বক মিছিল আটকেছে ,টিয়ার গ্যাসের সেল ছুড়েছে । তারপর পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে দেয় । পুলিশ কোন প্রটোকল মানেনি । বেপরোয়া লাঠি চার্জ করেছে ।’ পুলিশকে লক্ষ করে সিপিএম কর্মীদের ঢিল ছোড়া ও কোন পুলিশ কর্মী আহত হওয়ার কথা মহম্মদ সেলিম মানতে চান নি । একই ভাবে জেলা সিপিএম নেতা অমল হালদারও দাবি করেন,’কোন বাম কর্মী সমর্থক পুলিশের উপর চড়াও হয় নি । বরং পুলিশই উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আমাদের মিছিলে অংশ নেওয়া বাম কর্মী ও সমর্থকদের পিটিয়েছে । অনেক বাম কর্মী আহত হয়েছেন বলে অমল হালদার দাবি করেছেন ।’
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যর মুখপত্র দেবু টুডু বলেন, ‘ফের পুরানো কায়দায় বামেরা বর্ধমান সহ গোটা রাজ্য অশান্ত করা শুরু করেছে । এদিন ইট ছুড়ে মেরে পুলিশ কর্মীদের জখম করা থেকে শুরু করে বর্ধমান শহরের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর চালাচ্ছে । এমনকি কার্জনগেট এলাকায় থাকা বিশ্ববাংলা লোগো পর্যন্ত সিপিএম কর্মীরা ভেঙে দিয়েছে । ধ্বংসের রাজনীতি ছাড়া সিপিএম আর কিছু বোঝে না । তৃণমূল রাজনৈতিক ভাবেই ওদের এই নোংরা রাজনীতির মোকাবিলায় নামবে ।’।