অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে বাংলাদেশের “জুলাই যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চ”-এর মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদির । তার মৃত্যুর আগে ও পরে বাংলাদেশ জুড়ে উগ্রপন্থীদের হিংসা দেখছে গোটা বিশ্ব । এদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মহম্মদ ইউনূস ঘোষণা করেছেন যে মৃত ওসমান বিন হাদির আদর্শেই বাংলাদেশ চলবে । কিন্তু কি আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিল ওই যুবক ? তার ব্যাখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশের প্রাক্তন শাসকদল আওয়ামী লীগ । আওয়ামী লীগ মৃত ওসমান বিন হাদিকে রাজাকারের বাচ্ছা(স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানপন্থী) ও ভারত বিদ্বেষী বলে অবিহিত করেছে।
জয় বাংলা(Joy Bangla) নামে একটি এক্স হ্যান্ডেলে (@VoiceOfTheAwami) লেখা হয়েছে, ধৈর্য সহকারে পড়বেন । ১) এই কুলাঙ্গার রাজাকারের বাচ্চা শরীফ ওসমান হাদী যে মুক্তিযুদ্ধকে ভারতের ষড়যন্ত্র বলে প্রচার করতো, আওয়ামী লীগ আর ভারতের চক্রান্তে লাখ লাখ বাঙালি মরেছে বলে বিষোদগার করতো, এই জঙ্গি শুকরের কবর এখন কাজী নজরুল ইসলামের পাশে! কী অপমান! কী লজ্জার ব্যাপার!
২)এই মূর্খ গর্ধভটা প্রচার করতো যে স্বাধীনতার পর ভারতের সাথে গোপন চুক্তি ছিল বলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তৈরি করতে পারেনি, শুধু প্যারামিলিটারি ছিল। এই অজ্ঞ কুকুর জানতো না যে আমেরিকার পর বাংলাদেশ একমাত্র দেশ যার সেনাবাহিনী যুদ্ধ ৭১ এ চলাকালীনই তৈরি হয়ছে।
৩)মুক্তিযুদ্ধে তিন মিলিয়ন শহীদ, লাখ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি – এই রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা এনে এই জঙ্গি হাদী বলে ভারতের ষড়যন্ত্র? এরা রাজাকারের উত্তরসূরি, পাকিস্তানের দালাল, জামায়াতের পোষা কুকুর! এদের জন্যই আজ দেশে অশান্তি এবং ধ্বংসের পথে!
৪)এই হাদী নামের পাকিস্তানি দালাল, ভারত-বিদ্বেষী জিহাদি কীড়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কলঙ্কিত করেছে জীবিত অবস্থায়। মরার পরেও তার নোংরা লাশ দিয়ে দেশের গৌরবকে অপমান করা হচ্ছে ।
৫)কাজী নজরুল – যিনি বিদ্রোহী কবি, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, দুঃখে-কষ্টে জীবন কাটিয়েছেন, দুখু মিয়া নামে পরিচিত – তার মৃত্যুর পরেও শান্তি নেই। এই কুলাঙ্গারের কবর তার পাশে দিয়ে নজরুলকে চিরকাল অপমান করা হচ্ছে!
৬)নজরুলের আত্মা কাঁদছে এই রাজাকার-জঙ্গির কবর দেখে। এই অপমান সহ্য করা যায় না! এই হাদী নামের নোংরা লাশ একদিন সরিয়ে ফেলা হবে নজরুলের পাশ থেকে। তুমি কে? আমি কে? মুক্তিবাহিনী মুক্তিবাহিনী,জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ।
গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনে নির্বাচনী প্রচারণার সময় বন্দুকধারীদের গুলিতে গুরুতর আহত হয় ওসমান হাদি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) ভর্তি করা হয়, সেখানে প্রাথমিক অস্ত্রোপচার করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।সেখানে তিন দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যু হয় তার ।
গতকাল কবি নজরুল ইসলামের কবরের পাশে কবর দেওয়া হয় । শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মহম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘প্রিয় ওসমান হাদি, আমরা তোমাকে বিদায় দিতে আসিনি। তোমার শেখানো মন্ত্র বুকে ধারণ করতে এসেছি। আমাদের শির কখনো নত হবে না—এই মন্ত্র তুমি আমাদের দিয়ে গেছ।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘ওসমান হাদি তুমি হারিয়ে যাবে না। যুগ যুগ ধরে তুমি আমাদের মনে বেঁচে থাকবে। তোমার স্মরণ করে জাতির অগ্রগতির পথে আমরা এগিয়ে চলবো।’।

