এইদিন ওয়েবডেস্ক,ইসলামাবাদ,১৩ অক্টোবর : এতদিন পাকিস্থানের সেনাবাহিনীকে দেশের সর্বশক্তিমান হিসাবে মনে করা হত । সেনা কর্তৃক দেশের নির্বাচিত সরকারকে গদি থেকে হঠানোর একাধিক দৃষ্টান্তও আছে । তার ফলে এযাবৎ পাকিস্তানের কোনও সরকারের প্রধান সেনাপ্রধানের কোনও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায়নি । কিন্তু পাকিস্থানের ইতিহাসে এই প্রথমবার কোনও সরকারের প্রধান সেনার কোনও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গেলেন ।
প্রসঙ্গত,সপ্তাহ খানেক আগে বর্তমান আইএসআই প্রধান ফয়েজ হামিদকে হঠিয়ে নাদিম আহমেদ আনজুমকে নতুন প্রধান হিসেবে ঘোষণা করেছিল পাকিস্থানের সেনা । কিন্তু জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়ার নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনীর এই সিদ্ধান্তকে মেনে নেননি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান । সেনা ও সরকারের মধ্যে এই টানাপোড়েনের মাঝে বুধবার সংবাদমাধ্যমের কাছে এই বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্টীকরণ দিতে এসে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী চৌধুরী ফাওয়াদ হুসেন বারবার একটা কথাই পুনরাবৃত্তি করে বলেন, ‘আইএসআই প্রধান নিয়োগের ক্ষমতা একমাত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীরই আছে ।’ পাশাপাশি আইএসআই প্রধান নিয়োগকে কেন্দ্র করে সেনা-সরকারের বিবাদ মাথায় রেখে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এমন কোনো পদক্ষেপ নেবেন না যা সেনাবাহিনীর সম্মান হ্রাস করে । অন্যদিকে সেনাবাহিনীও এরকম কিছু করবে না যা প্রধানমন্ত্রীর সম্মানহানী হয় ।’
এই বিষয়ে ইমরান খানের পার্টি তেহরিক-এ- ইনসাফের চিফ হুইপ আমির ডোগার পাকিস্তানের এক সংবাদ সংস্থার কাছে জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির কারনে আরও কয়েকমাস ফয়েজ হামিদকে আইএসআই প্রধান হিসেবে ধরে রাখতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী । সোমবার রাতে ইমরান খান সেনাপ্রধান জেনারেল বাজওয়ার সঙ্গে দেখা করে এই প্রসঙ্গে নিজের মতামতও জানিয়ে দিয়েছেন ।’ পাশাপাশি তিনি কিছুটা চৌধুরী ফাওয়াদ হুসেনের সুরে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পুরো মন্ত্রিসভার সামনে বলেছেন যে তিনি দেশের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান নির্বাহী (chief executive) ।’
এদিকে আইএসআই প্রধান নিয়োগকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান আর্মি বনাম ইমরান খানের মতবিরোধ নিয়ে জোরদার চর্চা চলছে পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যমগুলিতে । এখন নিজের সিদ্ধান্তে ইমরান খান অনড় থাকেন নাকি তিনিও পূর্বসূরীদের মত সেনার কাছে মাথা নত করেন সেটাই দেখার ।।
ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া ।