এইদিন আন্তর্জাতিক ডেস্ক,১০ জুলাই : মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশকে রোহিঙ্গা শূন্য করে দিয়েছে আরাকান আর্মি । এখন রোহিঙ্গারা দলে দলে ঢুকছে বাংলাদেশে । যেকারণে ভারতেও অনুপ্রবেশের আশঙ্কা বেড়েছে । এদিকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করা এসব মানুষ ঠাঁই নিচ্ছে রোহিঙ্গা শিবিরের আত্মীয়দের কাছে। বাংলাদেশের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার জানিয়েছেন, নিবন্ধিত এক লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গার জন্য তৈরি হচ্ছে ঘর।
মিয়ানমারের বুথিডংয়ের বাসিন্দা জিয়াবুল হক নামে এক রোহিঙ্গা আরাকান আর্মির হামলায় এক পা হারিয়ে কোনোমতে পালিয়ে আশ্রয় নেন পাহাড়ে। সেখান থেকে সে আসে বাংলাদেশের উখিয়া সীমান্তে। জিয়াবুল হক বলেছে, আরাকান আর্মির সাথে যুদ্ধের সময় বোমার আঘাতে আমার পা হারিয়েছি। আমাদের এলাকার যুবকদের তারা ধরে নিয়ে আরাকান আর্মিতে যোগ দিতে বাধ্য করে। না হয় আরসার সদস্য দাবি করে নির্যাতন করে। এগুলো সহ্য করতে না পেরে পালিয়ে এসেছি।
রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, রাখাইন প্রদেশ এখন প্রায় রোহিঙ্গা শূন্য। আগে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী পরে আরাকান আর্মির অত্যাচারে তারা ভিটেমাটি ছাড়া। জান্তা বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করতে আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের দলে নিচ্ছে৷ এতে অসম্মতি জানালে চলে নির্যাতন। আরাকান আর্মির নির্যাতনে রাখাইন ছাড়া অনেকে এখন বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে। কেউ কেউ গেছে সাগর পথে মালয়েশিয়া বা থ্যাইল্যন্ডে।
এদিকে মিয়ানমারের জান্তা এবং আরাকান আর্মির সংঘাতে আটকে আছে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ। নেই সংকট সমাধানের লক্ষণ । রোহিঙ্গা বিশ্লেষক শেখ জাহাঙ্গীর হাছান মানিক বলেন, ‘তাদের প্রত্যাবাসন খুবই দরকার। তাদের পাঠিয়ে দেওয়ার বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে এবং বিভিন্ন অর্গানাইজেশনের সাথে। যেখানে নেক্সট ইয়ারে রোহিঙ্গা যেগুলো এখানে আগে থেকে এসেছে, তাদের চলে যাওয়ার কথা ছিল, আমরা দেখছি, ত্রিপল আরসির তথ্য মতে এক লক্ষ ১৮/১৩ হাজার রোহিঙ্গা এখানে চলে এসেছে। আমরা ওদের পাঠানোর বিষয় নিয়ে যেখানে কাজ করছিলাম, আমার মনে হয় সেটা ঠিকমত হচ্ছে না।’
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাতে বেড়েছে সংকট। বাংলাদেশে নতুন করে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা এক লাখ ১৮ হাজার। তিনি বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করেছিলাম রোহিঙ্গারা আবার আসা শুরু করবে। সেটিই হয়েছে। এখন পর্যন্ত জানুয়ারি থেকে শুরু হয় মে মাসের ১ তারিখ পযন্ত ১ লাখ ১৮ হাজার রেজিষ্ট্রেশন হয়। পরবতী সময়ে এখন টেকনিক্যল কারণে রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে।’
বর্তমানে বাংলাদেশের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয় শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লাখের বেশি। এর মধ্যে নতুন যোগ হয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা। বিগত আট বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ । এদিকে রোহিঙ্গাদের কট্টরপন্থী মানসিকতার জন্য মিয়ানমারও তাদের আর ফেরত নিতে চাইছে না।।

