জয়দীপ মৈত্র,গঙ্গারামপুর (দক্ষিন দিনাজপুর) ,৩০ মার্চ : বুধবার থেকে মহাসাড়ম্বরে শুরু হল দক্ষিন দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের শিববাড়ির শতাব্দী প্রাচীন পবিত্র ও মহা বারুণী পূণ্যস্নান ও মেলা । এদিন ভোরে পুর্নভবা নদীতে পুণ্যস্নান করতে ভক্তদের ঢল নামে। স্নান সেরে পুণ্যার্থীরা বিরুপাক্ষ বাণেশ্বর শিব মন্দির ও শিববাড়ি কালীমন্দিরে পুজো দেন । গঙ্গারামপুর পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের শিববাড়িতে ঐতিহাসিক বারুণী স্নানের এই মেলা কতটা প্রাচীন তার সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি । তবে অনেকে মনে করেন ঐতিহাসিক বানরাজার সময় থেকে বারুণী স্নান ও মেলার সূচনা হয়েছিল ।
তবে পবিত্র ও মহা বারুণী পূণ্যস্নান ও মেলার সূচনা কাল নিয়ে যতই দ্বিমত থাকুক না কেন পূণ্যার্থীদের মধ্যে উৎসাহ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে । দক্ষিন দিনাজপুর জেলাবাসীর পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের প্রচুর মানুষ বারুনী স্নান উপলক্ষে গঙ্গারামপুর শিববাড়ীর পুনর্ভবা নদীতীরে সমাগত হন । দীর্ঘ লকডাউন কাটিয়ে এবারে বারুণী পূণ্যস্নান নিয়ে পূণ্যার্থীদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মত । জমে উঠেছে মেলাও । কয়েক’শ ব্যাবসায়ী পসরা নিয়ে বসেছেন গঙ্গারামপুরের শিববাড়ির প্রাঙ্গনে ।
গঙ্গারামপুর পুনর্ভবা নদীতীরের শিববাড়ী ।
নাগরদোলা ও বিভিন্ন রকম খাবারের দোকান ছাড়াও বিবিধ সামগ্রীর দোকান বসেছে । তার মধ্যে রয়েছে জিলিপি,বিভিন্ন মিষ্টি,শনপাপড়ি,পাপড় ভাজাসহ নিরামিষ ও আমিষ হোটেলসহ বিভিন্ন খাবারের দোকান । আর প্রতিটি দোকানই ছিল ভিড়ে ঠাসা ।
ঐতিহাসিক শিববাড়িতে বারুণী স্নানের মেলা ও দর্শনার্থীদের সহযোগিতায় পাশে রয়েছেন বারুনী মেলা কমিটির প্রতিটি সদস্য । পাশাপাশি অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং পূণ্যার্থীদের সাহায্যার্থে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতিনিধিরা সাদা পোশাকে কড়া নজর রাখছেন ।
ভোর থেকে মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশী তিথিতে শিববাড়িতে বারুণী স্নানের মেলাতে বহু দুরদুরান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা এসে ভিড় জমান এবং স্নান করেন পূণর্ভবা নদীতে। স্নান সারার পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ঐতিহাসিক বাণরাজার শিব মন্দির বানেশ্বরসহ বহু দর্শনীয়স্থান ঘুরে দেখেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়ে দর্শনার্থীদের ।
গঙ্গারামপুর শিববাড়ি বারুণী মেলা কয়েকদিন ধরে চলবে। গত দুই বছর ধরে চলতে থাকা করোনা মহামারীর বিধিনিষেধের কারণে গঙ্গারামপুর শিববাড়ির বারুণী মেলায় দর্শনার্থী ও পুণ্যার্থীদের ভিড় কম ছিল । বসেনি মেলাও । কিন্তু এবারে কোনও বিধিনিষেধ নেই । জমিয়ে মেলা বসেছে । বেড়েছে পূণ্যার্থীদের ভিড় । মেলাতে প্রচুর মানুষের উপস্থিতি দেখে খুশি মেলা কমিটির সদস্য,ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে এলাকার সকল মানুষ ।।