দিব্যেন্দু রায়,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),০৯ ডিসেম্বর : পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের নতুনহাটে অজয় নদের উপর রয়েছে লোচন দাস সেতু । বাদশাহী রোডের উপর নির্মিত ওই সেতুটি পূর্ব বর্ধমান জেলার সঙ্গে বীরভূম ও মূর্শিদাবাদ জেলার মধ্যে সংযোগ রক্ষা করে । সেতুটির ঠিক পাশেই আছে একটি বালিঘাট ৷ অভিযোগ,সেতুর পিলারের কাছাকাছি এলাকায় মেশিন লাগিয়ে পাইপের সাহায্যে বালি উত্তোলন করাচ্ছেন বালিঘাটের ইজারাদার । যে কারনে সেতুর পিলারের গোঁড়ার বালি সরে যাচ্ছে । পাশাপাশি মেশিনের জোরালো কম্পনের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সেতুটি । স্থানীয়দের আশঙ্কা সেতুর কাছে মেশিন দিয়ে বালি তোলা অবিলম্বে বন্ধ করা না হলেও সেতুটি যেকোনো সময় ধসে গিয়ে বড়সড় দূর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে । সম্প্রতি এনিয়ে প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জানান স্থানীয়দের একাংশ ।
স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার সেতুর পাশে বালি তোলার কাজ খতিয়ে দেখতে আসেন প্রশাসনের একটি প্রতিনিধিদল । ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধক্ষ্য, কাটোয়া মহকুমা এসডিএলআরও রমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়,মঙ্গলকোট থানার আইসি, জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধক্ষ্য শ্যামাপ্রসন্ন লোহার, ব্লকের বিএলআরও সহ এসডিএলআর প্রমুখ । যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ প্রসঙ্গে এসডিএলআরও রমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘সেতু থেকে দূরত্ব বজায় রেখেই বালি তোলা হচ্ছে। তবে এটা ঠিক যে, যন্ত্র লাগিয়ে বালি তোলা যায় না । কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির কারনে বালি তোলার ক্ষেত্রে নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হচ্ছে । তবুও আমরা ইজারাদারকে নিষেধ করেছি ।’
এদিন বালিঘাটে গিয়ে দেখা গেলো পাইপের সাহায্যে বালি তোলার জন্য লোচন দাস সেতুর কাছাকাছি দুটি মেশিন লাগানো হয়েছে । একটি সেতু থেকে দু’ আড়াইশ ফুট দূরে হলেও অপরটি সেতুর কাছাকাছি জায়গায় বসানো রয়েছে । কাটোয়া মহকুমা এসডিএলআরও বিষয়টি বিশেষ আমল না দিলেও
মঙ্গলকোট ব্লকের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার বানীকুমার মুখোপাধ্যায় জানান, যদি যন্ত্র দিয়ে অনবরত বালি তোলা হয় তাতে সেতুতে ক্ষতি হবে । পূর্ত দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়ও একই কথা বলেছেন । তিনি বলেন,’সেতুর পিলারের কাছে প্রায়শই বালি সরে যায় ৷ আমরা এর আগে বহুবার জানিয়েছি সেতুতে ক্ষতি হচ্ছে ।’ পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক (ভূমি সংস্কার) রিসিন ইসমাইল বলেছেন, ‘প্রতিনিধিদলের কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পরেই বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।’ এদিকে ইজারাদারের তরফ থেকে শেখ গোলাম গাউস বলেন, ‘মেশিন লাগিয়ে পাইপের সাহায্যে বালি তোলা অনেক জায়গাতেই হয় । তবে আমরা আর এভাবে বালি তুলবো না বলে ঠিক করেছি ।’।