এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৭ আগস্ট : লক আপে থাকা আসামীদের প্রতিদিন রুটিনমাফিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়ে থাকে । কড়া প্রহরার স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে আসামীদের ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয় । তাই নিয়ম অনুযায়ী মঙ্গলবার এক খুনের আসামিকে হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে নিয়ে গিয়েছিল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার পুলিশ । আসামীর পাহাড়ায় ছিলেন দু’জন পুলিশকর্মী ও একজন সিভিক ভলেন্টিয়ার । এদিকে ডাক্তারি পরীক্ষার শেষে যথারীতি আসামীকে গাড়িতে তুলে থানায় ফেরত আনার প্রস্তুতি চলছিল । কিন্তু গাড়িতে তোলার আগেই এক বয়স্ক পুলিশ কর্মীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে চম্পট দেয় ওই আসামি । তাকে ধরতে গিয়ে কার্যত নাজেহাল অবস্থা হয় পুলিশের । যদিও ওই পুলিশ কর্মী তার পিছু ধাওয়া করেন । কিন্তু অপেক্ষাকৃত অনেক তরুন আসামির সঙ্গে তিনি ছুটে বেশিক্ষন পেরে উঠতে পারেননি । শেষে এক সিভিক ভলেন্টিয়ার্স আসামির পিছু ধাওয়া করে ধরে ফেলেন । এই ঘটনাকে ঘিরে কার্যত ধুন্ধুমার কান্ড বেধে যায় এলাকায় । এদিকে ধরা পড়ার পর আসামী বলে, ‘আমি পালাইনি তো । এই একটু রাস্তার ধার দিয়ে পায়চারি করতে গিয়েছিলাম ।’
জানা গেছে,আসামীর নাম প্রসেনজিৎ দলুই(২৭) । তাঁর বাড়ি বীরভূম জেলার সিউড়ি থানার বাতরা গ্রামে । প্রসেনজিতের শাশুড়ি লীলা আগরওয়াল (৪৪)কে খুনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছে ভাতার থানার পুলিশ । গত সপ্তাহে ভাতার থানার মাহাতা গ্রামে ভাড়া বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল লীলাদেবীর মৃতদেহ । গত বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে তুলে পাঁচদিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল পুলিশ । হেফাজতের মেয়াদ শেষ হতেই এদিন তাকে বর্ধমান আদালতে তোলা হয় । তার আগে এদিন সকাল দশটা নাগাদ আসামীকে ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ।
জানা গেছে,আসামীর সঙ্গে ছিলেন কনস্টেবল নরেশ সোনার , হোমগার্ড ভাস্কর ঘোষ ও সিভিক ভলেন্টিয়ার মিঠুনচন্দ্র সাঁতরা । পুলিশের গাড়িটি আউটডোরের সামনে রেখে আসামীকে হাতকড়া পড়িয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় । চেক আপের পর ফের তাকে গাড়ির কাছে আনা হয় । হাতকড়ার একপ্রান্ত ছিল নরেশবাবুর হাতে । সেই সময় নরেশবাবুর হাত ফস্কে সোজা হাসপাতালের গেটের দিকে ছুট লাগায় আসামী । তারপর ভাতার-মালডাঙ্গা রোড টপকে সোজা কাঁটার গ্রামের রাস্তা ধরে দৌড়তে শুরু করে শাশুড়িকে খুনে অভিযুক্ত প্রসেনজিৎ ৷ নরেশবাবুর তার পিছু ধাওয়া করেন । কিন্তু ২৭ বছরের যুবকের সঙ্গে বেশিক্ষন দৌড়াতে পারেননি প্রৌঢ় নরেশবাবু । এদিকে নরেশবাবুর পাশাপাশি আসামীর পিছু পিছু দৌড়াচ্ছিলেন সিভিক ভলেন্টিয়ার মিঠুনও । শেষে তিনি কাঁটার গ্রামের একেবারে শেষ প্রান্তে মাঠ থেকে আসামী প্রসেনজিৎকে ধরে আনেন । শেষ পর্যন্ত হাঁফ ছেড়ে বাঁচে পুলিশ কর্মীরা ।
ভাতার থানার ওসি প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পালানোর চেষ্টার অভিযোগে ওই আসামীর বিরুদ্ধে পৃথক একটি মামলা রজু করা হয়েছে । এছাড়া সিভিক ভলেন্টিয়ার মিঠুনচন্দ্র সাঁতরাকে পুরস্কৃত করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে বলে তিনি জানান ।।