সূচনা গাঙ্গুলি,হুগলি,২৬ সেপ্টেম্বর : আধ্যাত্মিক দেশ ভারতের মানুষ সুগার, থাইরয়েড, ব্লাড প্রেসার, ক্লোস্টেরল, ওবেসিটি ইত্যাদির হাত থেকে সুস্থভাবে বাঁচার তাগিদে ওষুধের বিকল্প হিসাবে বেছে নিয়েছে ‘যোগা’-কে । কারণ ভারতের মুনি-ঋষিরা প্রাচীন যুগ থেকেই ‘যোগা’-র হাত ধরেই দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের সুস্থ রেখেছিলেন ।
যোগ অভ্যাস হল দেহ, মন ও আত্মাকে যুক্ত করে সুস্থ থাকার এক প্রাচীন পদ্ধতি। এর আসল অর্থ হল চেতনা, মিলন। যোগা দেহ, মন ও শক্তি- এই তিনটির মধ্যে সমন্বয় সাধন করে, মিলন ঘটায়। নিয়মিত যোগচর্চার মাধ্যমে অসুস্থ শরীর রোগমুক্ত ও সুস্থ হয়ে ওঠে। সুস্থ শরীর আরও সতেজ হয়ে ওঠে। এই দিকে লক্ষ্য রেখে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে উঠেছে অসংখ্য যোগা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য আয়োজিত হচ্ছে যোগা প্রতিযোগিতা।
বেঙ্গল যোগা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালনায় গত ২৫ শে সেপ্টেম্বর হুগলির উত্তরপাড়া ভদ্রকালী হাইস্কুলে আয়োজিত হয় ৫৪-তম সারা বাংলা যোগাসন প্রতিযোগিতা। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে মোট ৪০০ জন প্রতিযোগী এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। যদিও সহস্রাধিক মহিলা ও পুরুষ প্রতিযোগী এই প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে ।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গল যোগা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দিব্যেন্দু সাহা, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দন গুপ্ত, ওয়ার্ড হোম ইংলিশ স্কুলের অধ্যক্ষ সন্দীপ কুমার দে, ভদ্রকালী হাইস্কুলের প্রেসিডেন্ট শরদ আব্দুর রহমান ও উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষক সঞ্জয় কুমার দে, চিত্তরঞ্জন সামন্ত প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বেশ কিছু যোগা প্রেমী মানুষ। প্রতিযোগিতার বিচারক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ও রাজ্য স্তরের বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব যারা যোগা বিচারক হিসাবে যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছেন।
এই প্রতিযোগিতায় ৮ বছর বয়স পর্যন্ত বালিকা বিভাগে প্রথম হয় আমন্যা ভৌমিক এবং বালক বিভাগে তথাগত দাস। ৮ থেকে ১২ বছর বিভাগে বালিকাদের মধ্যে প্রথম হয় রিসিকা মাইতি ও বালকদের মধ্যে গৌরাঙ্গ কর্মকার। ১২ থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত বালিকা বিভাগে প্রথম হয় প্রিয়াঙ্কা ঘানা ও বালক বিভাগে আকাশ দাস। ১৬ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত বালিকা বিভাগে প্রথম হয়েছে শম্পা সাহা ও বালকদের মধ্যে সায়ন সামন্ত। এই প্রতিযোগিতায় সেরা (বেস্ট) ক্লাব নির্বাচিত হয় পূর্ব মেদিনীপুরের সিদ্ধেশ্বরী যোগা শিক্ষা কেন্দ্র এবং দ্বিতীয় স্হান অধিকার করে হাওড়া মঙ্গলদীপ শিশু কল্যাণ সমিতি ।
জাতীয় যোগা বিচারক মুনমুন ভৌমিক বললেন – করোনার আতঙ্ক কাটিয়ে যেভাবে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য প্রতিযোগী এই অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে তাতে আমরা অভিভূত। এই সংখ্যা বৃদ্ধি এই রাজ্যে যোগার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির প্রতি ইঙ্গিত করে। আশা করা যায় আগামী দিনে মানুষ সুস্থ থাকার জন্য ওষুধের পরিবর্তে যোগাকেই আঁকড়ে ধরবে ।।