এইদিন ওয়েবডেস্ক,ওয়াশিংটন,২৩ জুন : আমেরিকা সফরে গিয়ে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । ফের তিনি বললেন, সন্ত্রাসবাদ মানবজাতির একটি হিংস্র শত্রু, যার জন্য কোন যুক্তি বা অজুহাত নেই । তিনি বলেন,৯/১১-এর দুই দশক এবং মুম্বইতে ২৬/১১-এর পর এক দশক পরেও, চরমপন্থা এবং সন্ত্রাসবাদ বিশ্বকে জর্জরিত করে চলেছে। সন্ত্রাসের ক্ষেত্রে কোনো অজুহাত নেই । যে সব শক্তি সন্ত্রাসবাদকে মদদ দিচ্ছে এবং প্রচার করছে, তাদের বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এবং যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনের পরে মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন । তিনি বলেছেন যে মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ দেওয়া সর্বদাই একটি বড় সম্মানের এবং এটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা । তিনি মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দুবার ভাষণ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন । তিনি বলেন,’আমি এই সম্মানের জন্য ভারতের ১.৪ বিলিয়ন জনগণের প্রতি আমার গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ।
প্রধানমন্ত্রী মার্কিন কংগ্রেসে ভারতীয়-আমেরিকানদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা নিয়েও কথা বলেছেন । তিনি বলেছেন, আমি শুনেছি যে মার্কিন হাউস এখন শিঙাড়ার স্বাদ নিচ্ছে । মোদী বলেন যে এটি এখানে ভারতীয় খাবারের সম্পূর্ণ বৈচিত্র্য নিয়ে আসবে । সেই সাথে তিনি বলেন,আমেরিকার ভিত্তি ছিল সকল মানুষের নিয়ে একটি জাতির ধারণা দ্বারা অনুপ্রাণিত। লক্ষ লক্ষ ভারতীয় বংশোদ্ভূত মানুষ এখানে রয়েছেন । তাদের মধ্যে কেউ কেউ এই হাউসেও রয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন আমার ঠিক পিছনে রয়েছে ।’ মোদী তার বক্তৃতায় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে উল্লেখ করে একথা বলেন । একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে তাঁর বক্তব্য পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং বলেছেন যে এটি যুদ্ধের সময় নয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও জো বাইডেন দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পরে একটি যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, এই সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি আমেরিকান সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
একজন সাংবাদিক ভারতে বৈষম্য নিয়ে একটি প্রশ্ন করেছিলেন, যার উত্তরে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, আমরা গণতন্ত্রে শ্বাস নিই এবং বাঁচি। আমাদের পূর্বপুরুষেরা আমাদের সংবিধানের প্রতি ছত্রে ছত্রে তা তুলে ধরেছেন । গণতন্ত্র দিয়ে আমরা কী অর্জন করতে পারি তা সংবিধান দেখিয়েছে। জাতি, ধর্ম বা লিঙ্গের ভিত্তিতে বৈষম্য অনুমোদিত নয় ভারতে ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,মানবাধিকার ছাড়া গণতন্ত্র নেই বা মর্যাদার জায়গা ছাড়া গণতন্ত্র নেই, যারা বেঁচে থাকে এবং গণতন্ত্রের শ্বাস নেয় তাদের মধ্যে বৈষম্যের প্রশ্নই ওঠে না । যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতাকালে, প্রধানমন্ত্রী মোদী রাজকীয় অভ্যর্থনার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন যে শক্তিশালী ভারত-মার্কিন সম্পর্ক নতুন শিল্প তৈরির সূচনা করবে । আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক ও বাণিজ্য ভালো। আমরা মহাকাশের ক্ষেত্রে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। হোয়াইট হাউসে বিপুল সংখ্যক অনাবাসী ভারতীয়ের আগমন ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে। উগ্রবাদের বিরুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করছে ভারত-মার্কিন। প্রধানমন্ত্রী বলেন,গণতন্ত্রের মূল উদ্দেশ্যকে শক্তিশালী করাই এই সফরের উদ্দেশ্য।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তৃতায় বলেন, মোদীর আমেরিকা সফর ফলপ্রসূ হয়েছে। কূটনীতির মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি তিনি বলেন, আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন খাতকে উচ্চতর অগ্রাধিকার দেওয়া হবে ।।