এইদিন স্পোর্টস নিউজ,০৪ মার্চ : ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের ১ লক্ষ ৩০ হাজার দর্শককে চুপ করিয়ে দিয়ে নিজেদের ষষ্ঠ শিরোপা ঘরে তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া । এরপর সবশেষ বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে রোহিত-কোহলিদের বিধ্বস্ত করে ফাইনালের লড়াই থেকে ছিটকে দিয়েছিল অজিরা । যা নিয়ে টিম ইন্ডিয়ার মধ্যে জ্বলছিল প্রতিশোধের আগুন৷ মাঝেই প্রতিশোধ নেওয়ার সেই সুযোগ ছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে । আজ মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে অজিদের মুখোমুখি হয়েছিল রোহিত শর্মার দল। যেখানে অস্ট্রেলিয়াকে বাড়ির পথ দেখিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে ভারত। সেই সঙ্গে ফাইনালের টিকিট পেয়েছে ভারত ।অস্ট্রেলিয়াকে ৪ ইউকেটে হেলায় হারিয়ে দিল কোহলি- রাহুল-পান্ডিয়ার ব্যাট ।
আজ ) টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ৯ শূন্য রান করে শুরুতেই সাজঘরে ফেরেন শর্টের বদলে একাদশে সুযোগ পাওয়া কোপার। এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করতে থাকেন ট্রাভিস হেড। তবে অর্ধশতক তুলতে পারেননি এই মারকুটে ব্যাটার। ৩৩ বলে ৩৯ রান করে বরুণ চক্রবর্তীর বলে ক্যাচ আউট হন তিনি। তিনতে ব্যাট করতে নেমে লাবুশেনকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক স্মিথ। ইনিংস বড় করতে পারেনি লাবুশেনও । ৩৬ বলে ২৯ রান করে জাদেজার লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন এই ডান হাতি ব্যাটার। এতে ১১০ রানে ৩ উইকেট হারায় অজিরা। এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি জস ইংলিশও। ১২ বলে ১১ রান করেন তিনি।
তবে অপর প্রান্ত থেকে ৬৮ বলে ফিফটি তুলে নেন স্মিথ। তবে সেঞ্চুরির কাছে যেতে পারেননি তিনি। ৯৬ বলে ৭৩ রান করে বোল্ড আউট হন অজি অধিনায়ক। ৫ বলে ৭ রান করে তাকে সঙ্গ দেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এতে ৭ রানের ব্যবধানে দুই উইকেট হারানোই রানের গতি কমে যায় অস্ট্রেলিয়ার। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে দলের হাল ধরেন অ্যালেক্স ক্যারি। ৪৮ বলে ৫০ তুলে নেন তিনি। কিন্তু ৪৮তম ওভারে এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার রান আউট হলে আবারও ছন্দ হারায় অজিরা। ৫৭ বলে ৬১ রান করেন তিনি। শেষ দিকে বেন ডারশুইস (৭), নাথান ইলস (১০) এবং ৭ রান করে অ্যাডম জাম্পা আউট হলে ৩ বল হাতে থাকতে ২৬৪ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ শামি। এ ছাড়াও বরুণ চক্রবর্তী ও রবিন্দ্র জাদেজা নেন দুটি করে, আর হার্দিক পান্ডিয়া ও অক্ষর প্যাটেল শিকার করেন একটি করে উইকেট।
অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২৬৫ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে, ভারতীয় দল রোহিত শর্মা (২৮ রান) এবং শুভমান গিলের দুর্দান্ত শুরু করে। প্রথম উইকেটে এই জুটি ৩০ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু গিল মাত্র ৮ রানে দ্বারশুসের হাতে উইকেট তুলে দেন। পরে, রোহিত শর্মাও ২৮ রান করেন এবং কুপার কনলির বলে আউট হওয়ার আগে দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন। এরপর বিরাট কোহলি এবং শ্রেয়স আইয়ার ভারতের রান সংগ্রহকে ত্বরান্বিত করার জন্য একজোট হন। এই জুটি তৃতীয় উইকেটে ৯১ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়ে তোলে। কিন্তু ৪৫ রান করে অর্ধশতকের দ্বারপ্রান্তে থাকা শ্রেয়স আইয়ার অস্ট্রেলিয়ান অ্যাডাম জাম্পার বলে ক্লিন বোল্ড হন। পরে, কোহলির সাথে যোগ দেওয়া অক্ষর প্যাটেল ২৮ রান করেন, কিন্তু অক্ষরকেও নাথান এলিসের বলে বোল্ড হন । অক্ষর প্যাটেলের আউটের পর দলকে জয়ের পথে নিয়ে যাওয়া বিরাট কোহলি ৮৪ রানে আউট হয়ে যান, যখন অ্যাডাম জাম্পার বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডোয়ার্শোসের হাতে ধরা পড়েন।
এরপর হার্দিক পান্ডিয়া ক্রিজে আসেন এবং ২৮ রান করেন, যার ফলে ভারতের জয় সহজ হয়ে যায়। কিন্তু তিনি ম্যাক্সওয়েলের হাতে ধরা পড়েন এবং আউট হন। এরপর রবীন্দ্র জাদেজা (২ রান) এবং কেএল রাহুল ক্রিজে আসেন এবং অপরাজিত ৪২ রান করে জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন রাহুল।
শেষ পর্যন্ত, ভারত ৪৮.১ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৬৭ রান করে এবং ৪ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে নাথান এলিস এবং অ্যাডাম জাম্পা ২টি করে উইকেট নেন, আর কুপার কনলি এবং ডোয়ার্শোস ১টি করে উইকেট নেন।ভারতের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী বিরাট কোহলিকে ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার দেওয়া হয়।
দুবাইয়ের দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচে বিরাট কোহলি এই কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। আজকের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার জশ ইংলিসের ক্যাচ নিয়ে ভারতের হয়ে সর্বাধিক ক্যাচ নেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন কোহলি।এটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার ৩৩৫তম ক্যাচ, যা কোহলিকে সর্বকালের সর্বোচ্চ ভারতীয় ক্যাচারে পরিণত করেছে।।