এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,১১ অক্টোবর : ভারতের মাটিতে থেকেও তালেবানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির নারীবিদ্বেষী মানসিকতা লক্ষ্য করা গেল । ৬ দিনের ভারত সফরে আসা আমির খান মুত্তাকি শুক্রবার নয়াদিল্লিতে শুক্রবার নয়াদিল্লিতে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন । যেখানে মহিলা সাংবাদিকদের অংশগ্রহণের অনুমতিই দেওয়া হয়নি।যাদের মধ্যে প্রধান সংবাদ চ্যানেলের সিনিয়র রিপোর্টার এবং দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের একজন রিপোর্টারও অন্তর্ভুক্ত ছিল, তাদের বাধা দেওয়া হয়েছিল । যানিয়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয় । সাংবাদিকরা তালি বানদের এই পদক্ষেপের নিন্দা করেছেন এবং তাদের নারী বিদ্বেষের প্রতিফলন হিসেবে বর্ণনা করেছেন । তালিবানের এই আচরণের জন্য নয়নিমা বসু,সুহাসিনী হায়দার, শশাঙ্ক মাত্তু ও আলিশান জাফরির মত কথিত ধর্মনিরপেক্ষ সাংবাদিকরাই এখন নরেন্দ্র মোদী সরকারকে দুষছেন৷ যারা বারবার ভারতে হিন্দু কট্টপন্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে অভ্যস্ত ।
বর্তমানে আফগানিস্তানে শাসনকারী তালিবান আফগান নারীদের প্রতি নারী বিদ্বেষী নীতির জন্য পরিচিত । মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চশিক্ষা এবং বেশিরভাগ কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে । সাংবাদিকরা ভারত সরকারের সমালোচনা করেছেন যে তারা দেশে এই ধরনের বৈষম্যমূলক নীতি অনুমোদন করেছে। লেখিকা এবং সাংবাদিক নয়নিমা বসু একটি এক্স- পোস্টে প্রশ্ন তুলেছেন,’রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে, ভারত সরকারের বিপরীতে, আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইচ্ছাকৃতভাবে কোনও মহিলা সাংবাদিককে বাদ দিয়ে একটি জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। এটি কীভাবে অনুমোদিত হতে পারে? কে এই ধরনের গুরুতর অবহেলা অনুমোদন করেছে?’
দ্য হিন্দুর সুহাসিনী হায়দার বলেন,’আরও হাস্যকর বিষয় হল, তালিবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নারীদের প্রতি ঘৃণ্য এবং অবৈধ বৈষম্যকে ভারতে আনার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে কারণ সরকার তালিবান প্রতিনিধিদলকে পূর্ণ সরকারি প্রোটোকলের সাথে আতিথ্য দেয়। এটি ব্যবসা নয়, এটি প্রার্থনা ।একই রকম কথা শোনা গেল সাংবাদিক শশাঙ্ক মাত্তুর গলাতেও৷ তিনি বলেন,’ভারতের নিরাপত্তা স্বার্থ অর্জনের জন্য তালেবানের সাথে যোগাযোগ করা বৈধ, কিন্তু তালিবানদের পক্ষে ভারতীয় মাটিতে নারী ভারতীয় সাংবাদিকদের উপর তাদের বৈষম্যমূলক এবং স্পষ্টতই ঘৃণ্য দৃষ্টিভঙ্গি চাপিয়ে দেওয়া হাস্যকর। আমাদের এটি সমর্থন করা উচিত নয়।’ সাংবাদিক আলিশান জাফরি কটাক্ষ করে বলেন, ‘স্পষ্টতই, ভারতীয় মহিলা সাংবাদিকরা ভারতে সাংবাদিক সম্মেলনে যোগ দিতে পারেন না কারণ তালিবানরা এটি পছন্দ করে । বিদেশ মন্ত্রক (MEA) এখনও এই ঘটনার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।’
এদিকে, কাবুলে তালিবান শাসনের প্রতি নয়াদিল্লির অবস্থান পরিবর্তনের অংশ হিসেবে, ভারত শুক্রবার আফগানিস্তানে তার দূতাবাস পুনরায় চালু করার ঘোষণা করেছে।নয়াদিল্লিতে তালিবানের মন্ত্রীকে আতিথ্য দেওয়ার সময় তার উদ্বোধনী ভাষণে জয়শঙ্কর বলেন,’ভারত আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং স্বাধীনতার প্রতি সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ । আমাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা আপনাদের জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখবে, সেইসাথে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করবে ।’।

