আমি বিশ্ব বন্দিত কবি হতে আসিনি।
আমার লেখার ওপর দিয়ে
প্রশংসার ঝড় বয়ে যাক
কিংবা নিন্দার দমকা হাওয়া–
কোনোটাতেই মাথা ব্যাথা নেই, আমার।
আমি রাজ্য বা রাষ্ট্র নিয়ে অযথা তোষামোদ
কিংবা উচ্ছ্বাস দেখাতে পারবো না;
তাতে তোমাদের সুনজরে বা বিদ্বেষে পড়ি,
তোমাদের বাহবা পাই বা না পাই
তাতে আমার কিছু যায়-আসে না।
মানুষের নামের আগে বা পরে
কখন, কার, কোথায়, কিভাবে
সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য বসানো হলো
সেটা নিয়েই আমার মাথা ব্যাথা,
অন্যথায় নয়।
কার মেনুতে পুষ্টিকর মাশরুম,
দেড়শো রকম পদে সাজানো টেবিল,
বড় এলাচ দিয়ে বানানো রেসিপি
ছুঁয়ে দেখার গল্প–
শুনতে শুনতে ভালই লাগে;
কিন্তু যখন কারো হেঁসেলে
রেশনের মোটা চালের ঘাটতি দেখি
অনেক কষ্ট পাই!
বুকের বাম পাশে ব্যথা শুরু হয়।
শুনেছি ওদের ঘাম আর চোখের জলে নাকি
পরিপুষ্ট হয় রাষ্ট্র নামক একটা দেহ যন্ত্র,
ফুলে ফেঁপে ওঠে নেতৃত্বের সারমেয় সত্তা,
বিমান ওড়ে সারি সারি,
নিরাপত্তার বেষ্টনীতে বিশ্ব ভ্রমণের রাজকীয় সংবর্ধনায়
দেশের মুখ উজ্জ্বল হয়,
বিশ্বনন্দিত হয় দেড়শো কোটির ভাগ্য–
আমি দাঁড়িয়ে থাকি অশ্রুসিক্ত নোনা কাদায়
দুপায়ের গোড়ালি পর্যন্ত ব্যথায়,
দেড়শো কোটির দেশের সাধারণ এক একজন নাগরিক হয়ে
মলিন পোশাকে। ক্ষুধা, বঞ্চনা, নির্যাতনের– প্রতিনিধি হয়ে।
বিশ্বাস কর–
তখন আমি রাম-রহিম-যীশু কাউকেই দেখতে পাই না,
দেখি মানুষের অধিকার চেয়ে
খাদ্যের সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা
ক্ষুধার্ত একদল মানুষ,
দেখি গরম ভাত আর আশ্রয়ের নিশ্চয়তা চাওয়া
কেবল একটা রাষ্ট্র।।