এইদিন ওয়েবডেস্ক,বরিশাল,০৬ নভেম্বর : বাংলাদেশের বরিশালের “লাভ জিহাদ”-এ ফেঁসে এক হিন্দু তরুনী গোপনে ধর্মান্তরিত ও প্রেমিককে নিকাহ করার পর করুন পরিনতির মুখে পড়তে হল ৷ প্রেমিক মহম্মদ রনির প্রতারণার শিকার হয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার ব্রাহ্মণদিয়া গ্রামের ২২ বছরের স্বর্ণা রানী রায় নামে ওই তরুনী । মরার পরেও লাশ নিয়ে চলে টানাপোড়েন । স্বর্ণার মা তার মেয়ের লাশ হিন্দু রীতিতে দাহ করতে চেয়েছিলে ৷ কিন্তু তার ধর্মান্তরিত ও ইসলামি রীতিতে নিকাহের কাগজপত্র দেখিয়ে মহম্মদ রনি ও তার বন্ধুবান্ধবরা জোর করে কবরস্থ করে দেয় ।
জানা গেছে, বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার ব্রাহ্মণদিয়া গ্রামের স্বর্ণা রানী রায় ও তার মা শহরের কাউনিয়া থানার ক্লাবরোড এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। তিনি বগুড়া রোডের “বরিশাল মেডিনোভা” নামের একটি বেসরকারি মেডিকেল প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মেডিনোভা প্রতিষ্ঠানের মালিকের বন্ধু এবং একসময়ের ব্যবসায়িক অংশীদার মহম্মদ রনির সঙ্গে স্বর্ণার পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। ধীরে ধীরে সম্পর্ক প্রেমে রূপ নেয়, এবং পরে নিজের মায়ের কাছে গোপনে ধর্ম পরিবর্তন ও রনিকে নিকাহ করেন স্বর্ণা।
কিন্তু সুখ বেশিদিন টেকেনি। স্বর্ণা জানতে পারেন, রনি আগেই বিবাহিত এবং তার স্ত্রী ও তিন সন্তানের সংসার রয়েছে। এই বিষয়টি জানার পর থেকেই তাদের মধ্যে শুরু হয় অশান্তি। স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি দুজনের মধ্যে একাধিকবার তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর (মঙ্গলবার) রাতে স্বর্ণাকে নিজ ঘরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। খবর পেয়ে কাউনিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে।
জানা যায়, স্বর্ণা ইতিমধ্যে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে এবং তার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘সুমাইয়া’ । পুলিশ তদন্তে জানতে পারে যে মহম্মদ রনির সহযোগীরা দ্রুত ধর্মান্তর ও বিবাহের কাগজপত্র দেখিয়ে প্রশাসনের অনুমতিতে মৃতদেহ কবরস্থ করে দেয় যাতে তাকে দাহ না করতে পারে । মৃতার মা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, “আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। সে কখনোই এমন কিছু করতে পারে না। প্রেমের জালে ফেলে ওকে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা। কাউনিয়া থানার ওসি বলেন, “প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা মনে হলেও তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে স্বর্ণার স্বামী রনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা বলছেন,’ভালোবাসার নামে ধর্মান্তরিত করে প্রতারণার ফাঁদে ফেলা এখন এক ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হচ্ছে। এমন ঘটনা আর যেন না ঘটে, প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।’হিন্দু সমাজে আলোড়ন সৃষ্টি করা এই মৃত্যু এখন এক বড় প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে — এটি কি নিছক প্রেমের পরিণতি, নাকি ধর্মান্তরিত এক মেয়ের ওপর নির্মম প্রতারণার শিকার হয়ে ঘটে যাওয়া এক পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ?

