মনখারাপ শীতকালের কুয়াশার মতই ক্ষণস্থায়ী
কোনো শিশির স্নাত সকালের ঝলমলে দিনে সে এক সময় মিলিয়ে যায় !
কিন্তু জমাটবাঁধা অভিমান হিমশীতল বরফের মতই কঠিন !
শীত জড়তা ডেকে আনে, আর জড়তা মৃত্যুর প্রতীক !
সম্পর্কের শীতলতা শীতকালীন জড়তার অন্তরের অন্দরমহলে লিখে রাখে ঝরাপাতার বিবর্ণতা !
পাতাহীন বৃক্ষ এক শিরদাঁড়া সোজা রাখা সফল মানুষের মতই আকাশচুম্বী অথচ সে ভিতরে ভিতরে নিঃস্ব, রিক্ত অসহায় ! পৃথিবীর রোদ, আলোবাতাস, নির্লিপ্তের মত গায়ে মেখে বসন্তের অপেক্ষায় তাঁর যাপন !
এরই মাঝে হঠাৎ করে কোনো ঝড়ের দাপটে সেই মহীরুহ শিকড়ের বন্ধন ছিঁড়ে
বীর সৈনিকের মতো মাটিতে লুটিয়ে পড়ে !
যে স্বর্গরাজ্য খুঁজতে তাঁর একটা গোটা জীবন কেটে যায়, হৃদয়ের স্পন্দন থেমে যেতেই সেই স্বর্গদ্বার খুলে যায় ! ধূপগন্ধী বাতাসে ম’ম পরিবেশ ! স্বর্গরাজ্য দেখতে সটান শুয়ে থাকা এক নিথর বৃক্ষ গায়ে সাদা থান জড়িয়ে, গলায় রজনীগন্ধার মালা পরে, কপালে শ্বেতচন্দন এঁকে সোজা স্বর্গরথে উঠে পড়ে।
পৃথিবীর চাকা গড়াতে থাকে !
শ্মশান চন্ডালের রক্তজবা চোখে চোখ রেখে
ঠান্ডা দৃষ্টি যেন বলে ওঠে — ও হে চন্ডাল তোমার ওই বজ্রমুঠির প্রজ্বলিত মশাল আমার রক্ত মাংস, হাড়, মজ্জা, ঘিলু দলা পাকিয়ে ঝলসিয়ে, পুড়িয়ে একমুঠো ছাই করে দিতে পারে,
কিন্তু চিতার ওই গনগনে আগুন
আমার আত্মা স্পর্শ করতে অপারগ !
হিমেল রাতে তারাভরা আকাশে লেলিহান লালসার অনলে মহাকাল মায়াজাল বিছিয়ে মিটিমিটি হাসে!
শ্মশান বৈরাগ্য থেকে নতমুখে কারা যেন মাটির পৃথিবীতে ফিরে আসে…।।