এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),৩০ অক্টোবর : বিজয়া সম্মিলনী ও সম্বর্ধনা সভায় যোগ দিয়ে ভাতার এমপি হাইস্কুলের মাঠের নামকরন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে করার প্রস্তাব দিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ । অনুষ্ঠানে উপস্থিত ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারীসহ তৃণমূল নেতারা তাঁর এই প্রস্তাবে সমর্থনও করেন । এদিকে স্কুলের মাঠের নামকরন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে করার তীব্র বিরোধিতা করেছেন স্থানীয় সিপিএম ও বিজেপি নেতৃত্ব ।
শনিবার বিকেলে ভাতার এমপি হাইস্কুল মাঠে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজয়া সম্মিলনী ও সম্বর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল । মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ও ভাতারের বিধায়ক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়,পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া,যুব তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সম্পাদক শান্তনু কোঁয়ার প্রমুখ ।
এদিনের সভায় স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘ভাতারের এই স্কুলের মাঠের সঙ্গে অনেক ইতিহাস জড়িয়ে আছে । এই মাঠে ৯৮ সাল থেকে দলের সভাপতি হিসাবে আমি বহু সভা করেছি । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সভা করেছেন করেছেন । এই মাঠ থেকেই অত্যাচারী সিপিএমকে উৎখাতের ডাক উঠেছিল । তাই ব্রিগেড, ঝাড়গ্রামের ফুটবল মাঠের মত এই মাঠেরও যাতে নাম হয় তাই এই মাঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে উৎসর্গ করে দেওয়ার প্রস্তাব রাখলাম স্কুল পরিচালন কমিটি ও স্থানীয় বিধায়কের কাছে । মাঠের নামকরন করা হোক “ভাতার ফুটবল মাঠ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফুটবল গ্রাউন্ড” । ভাতার হাইস্কুলও থাকলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও থাকলো ।’ এদিকে স্বপনবাবুর প্রস্তাব সমর্থন করেন বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারীসহ স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও কর্মীরা । মাঠের নামকরনের বিষয়ে মানগোবিন্দবাবু জানিয়েছেন, এই বিষয়ে তিনি স্কুলের পরিচালন সমিতির কাছে প্রস্তাব রাখবেন ।
এদিকে এই নামকরনের তীব্র বিরোধিতা করেছেন স্থানীয় সিপিএম নেতা নজরুল হক । তিনি বলে, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে স্কুলের মাঠের নামকরন কি করে হয় ? তাহলে গোটা পশ্চিমবঙ্গকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে করে দিতে হয় । কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের আমলে কখনও তো কোনও নেতার নামে ওই মাঠের নামকরনের প্রশ্ন ওঠেনি । কোনও মনিষী বা স্থানীয় কোনও স্বাধীনতা সংগ্রামীর নামে নামকরন করলে ঠিক ছিল ।’
সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘সিপিএমের সঙ্গে লড়াইয়ের কারনে যদি ভাতার হাইস্কুলের মাঠের নামকরন করা হয় তাহলে সিঙ্গুরের নামকরনও তো ওনার নামেই করতে হয় । সিঙ্গুরে উনি ৯০ শতাংশ তৈরি হওয়া কারখানা ভেঙে দিলেন । কত কর্মসংস্থান হত । আজ না হচ্ছে ফসল না হচ্ছে কারখানা ।’ নজরুল হকের কথায়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন কোনও ব্যক্তিত্ব নন যে ভাতারের মত জায়গায় কোনও ফুটবল মাঠের নামকরন ওনার নামে করতে হবে । উনি গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মাত্র । আমরা এই নামকরনের তীব্র বিরোধিতা করছি ।’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্ববরেণ্য কম্যুনিস্ট নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর নামে নিউটাউনের নামকরন ‘জ্যোতি বসু নগর’ করলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তখন বিরোধিতা করেছিলেন ।’
সিপিএমের পাশাপাশি বিজেপিও ভাতার এমপি হাইস্কুলের নামকরন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে । বিজেপির ভাতার ৩৩ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি রাজকুমার হাজরা বলেন, ‘কোনও স্কুলের বা সরকারি সম্পত্তির নামকরন কোনও নেতানেত্রীর নামে করা যায় না । দলের তরফ থেকে এই প্রস্তাবের আমি তীব্র বিরোধিতা করছি ।’।