এইদিন ওয়েবডেস্ক,করাচি,০১ ডিসেম্বর : সামরিক উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত জমি দীর্ঘদিন ধরেই বানিজ্যিক স্বার্থে ব্যাবহার করে আসছে পাকিস্থানের সেনাবাহিনী । ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের জমিতে একের পর এক গড়ে তোলা হয়েছে বা হচ্ছে আবাসন,শপিং মল,বিয়েবাড়ি,পেট্রোল পাম্পসহ একাধিক বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান । এবার পাকিস্থান সেনার এই ক্রিয়াকলাপকে তীক্ষ্ণ ভাষায় সমালোচনা করল সে দেশের সুপ্রীম কোর্ট । আদালত পরিষ্কার শব্দে জানিয়ে দিয়েছে, ‘সেনার কাজ দেশ রক্ষা করা,ব্যাবসা নয় ।’ এরপর আদালত নির্দেশ দেয়, ‘তারা যদি ওই সমস্ত জমি সামরিক কাজের উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করে, তাহলে তা সরকারকে ওই জমি ফিরিয়ে দিক ।’
মঙ্গলবার পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি গুলজার আহমেদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এই বিষয়ে শুনানি করেন । সরকারি জমিতে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যাবহারের ঘটনায় পাক সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতিরা । সেই সঙ্গে সরকারি জমিতে সেনার এই ধরনের ক্রিয়াকলাপকে অসাংবিধানিক ও বেআইনি বলে আখ্যা দেয় আদালত । নিরাপত্তা বাহিনীর মালিকানাধীন জমিতে সিনেমা হল, বিয়েবাড়ি, পেট্রোল পাম্প, হাউজিং সোসাইটি, শপিংমল তৈরি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি । তাঁর কথায় ওই সমস্ত বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত নয় । অথচ দেশের অনেক ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের জমিতে দিনের পর দিন ধরে এই ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন । এরপর আদালত স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয়, ‘জমির মালিক সরকার । এখন জমি যদি প্রতিরক্ষামূলক কাজে ব্যবহার না করা হয় তাহলে তা সরকারের কাছে ফেরত দিতে হবে ।’
আদালত বলে,সেনাবাহিনীর জমিতে তৈরি বাড়ি বিক্রি হচ্ছে ১০০ কোটিতে। জমি ফেরত নেওয়ার সময় এই টাকা কে দেবে ? সম্প্রতি এনিয়ে প্রতিরক্ষা সচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত ) মিয়া মোহাম্মদ হিলাল হোসেনের তরফ থেকে আদালতে একটি হলফনামা পেশ করা হয়েছিল । তাতে তিনি দাবি করেন,সরকারি জমিতে নির্মিত অবৈধ ভবনগুলি ভেঙে ফেলা হয়েছে । এই হলফনামা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত । আদালত বলেন, বাড়িগুলো এখনো আছে । আদালত প্রতিরক্ষা সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ।।