এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেহেরান,০৫ নভেম্বর : ইরানে জরুরি ভিত্তিতে গণভোটের দাবি তুললেন এক শীর্ষস্থানীয় সুন্নি মুসলিম নেতা । শুক্রবার মৌলভী আবদুল হামিদ নামে ওই নেতা দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর জাহাদানে জুমার নামাজের পর এই দাবি তোলেন । তিনি বলেছেন,’আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিতে এই গণভোট হওয়া উচিত যাতে জনগণের দাবির ভিত্তিতে ইরানের নীতিতে পরিবর্তন আনা যায়।’ তিনি কওম মাদ্রাসা এবং ইরানের কর্তৃপক্ষকে পঞ্চাশ দিন ধরে বিক্ষোভকারী লোকদের কণ্ঠস্বর শোনার আহ্বান জানান । যদিও ইরান সরকার এই অনুরোধের বিষয়ে এখনো কিছু জানায়নি ।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ হিজাব বিধি পালন না করার অভিযোগে ইরানের নৈতিক পুলিশ মাহসা আমিনী নামে ২২ বছরের এক তরুনীকে গ্রেপ্তার করেছিল । পুলিশের নির্মমভাবে মারধরের কারনে কোমায় চলে যান ওই তরুনী । পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয় । তারপর থেকে ইরানের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে । ইরানের ধর্মীয় শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনের দাবি তুলছে বিক্ষোভকারীরা । ইতিমধ্যে কয়েক’শ বিক্ষোভকারীকে গুলি করে মেরেছে ইরানি পুলিশ । কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে মৃত্যদণ্ড পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে ।
সম্প্রতি তেহরানের কাছে কারাজে একটি বিক্ষোভের সময় ইরানি পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায় । গুলিতে মৃত্যু হয় বছর বাইশের হাদিস নাজাফি নামে এক টিকটকারের । নাজাফির বোনের সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি কলের পর বৃহস্পতিবার হাজার হাজার শোকাহত বেহেশত সাকিনেহ তাঁর কবরস্থানে পৌঁছানোর চেষ্টা করলে রাস্তা বন্ধ করে দেয় ইরানি পুলিশ । মানুষ ‘স্বৈরশাসকের মৃত্যু’র স্লোগান দেয় । তখন পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ও বেপরোয়া গুলি ছুড়তে শুরু করে । গত সপ্তাহে আমিনির ৪০ তম দিবসের স্মরণে আয়োজিত স্মরণ সভায় পুলিশ শোকাহতদের উপর বেপরোয়া গুলি চালায় বলে জানা গেছে । নরওয়ে ভিত্তিক একটি ইরানি কর্মী গোষ্ঠী দাবি করেছে যে ওই বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ৪০ জন শিশু, ২৪ জন মহিলাসহ ২২৭ জন নিহত হয়েছে ।।