এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০২ নভেম্বর : দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অন্তর্গত বংশীহারী থানা এলাকায় বসবাসকারী দুই বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীর বিরুদ্ধে বারবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুললেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৷ তিনি আজ এক্স-এ বংশীহারী থানায় ২০২৩ সালের ২৭ নভেম্বর দায়ের করা অভিযোগপত্র ও ওই দুই “বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীর” র বাংলাদেশের পরিচয়পত্র শেয়ার করেছেন । অভিযোগটি দায়ের করেন বংশীহারী থানার অন্তর্গত লালপুর গ্রামের বাসিন্দা জনৈক মোঃ ফীরোজ মিঞা নামে এক ব্যক্তি ।
রসিদপুরের আইনজীবী শুভদীপ তালুকদারের মাধ্যমে বংশীহারী থানায় দায়ের করা ওই অভিযোগে দুই বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীকে আব্দুল মান্নান ওরফে বিশু মিঞা ও মোঃ লাভলী বেগম হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে । তাদের মধ্যে প্রথমজনের আদি ঠিকানা লেখা হয়েছে : সাং-২৩৩ জজমিয়া হাফিজ, হাফিজ উদ্দিন ব্যাপারী,পশ্চিম আরিশপুর ডাকঘর-মন্ননগর, গাজীপুর, সদর গাজীপুর সিটি করপোরেশন, গাজিপুর। এবং দ্বিতীয়জনের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে : পিতা- আমির হোসেন, সাং-আই পি. এইচ কলোনি। রসুরবাগ পূর্ব, মহাখালী, ডাকঘর- গুলশান মডেল টাইন-১২১২ গুলশান, ঢাকা ইওর সিটি করপোরেশন, ঢাকা।
অভিযোগে বলা হয়েছে,”উক্ত ১ নং ও ২ নং আসামী বাংলাদেশের নাগরিক। বাংলাদেশ থেকে অবৈধ ও বেআইনি ভাবে, চোরাই পথে ভারতবর্ষে প্রবেশ করিয়া বিভিন্ন নাশকতা মূলক কাজ করিবার উদ্দেশ্যে আমাদের গ্রামে বর্তমানে অবস্থান করিতেছেন। উক্ত ১ নং ও ২ নং বিবাদী নিজেদের আসল পরিচয় গোপন করিয়া মিথ্যাভাবে জালিয়াতি করিয়া জাল কাগজ পত্র তৈরী করিয়া লইয়াছেন। আসামীরা অত্যন্ত ধুরন্ধর, লোভী, আতঙ্কবাদী ও মানুষঘাতী লোক হইতেছেন। আসামীরা যে কোন মুহুর্তে নাশকতা মূলক কার্য সাধন করিতে পারে তাহারই আশঙ্কা করিতেছি যাহার ফলে আমাদের দেশের প্রভূত ক্ষতিসাধন হইবে। ১ নং ও ২ নং আসামী ভারতবর্ষে অনুপ্রবেশ করিয়া বেআইনি ভাবে নিজেদের নাম পরিবর্তন করিয়া আমার ভাইয়ের মিথ্যা পরিচয়ে আমার বাড়িতে জোরপূর্বক প্রবেশ করিয়াছেন। আমি আসামীদের উক্ত মিথ্যা পরিচয় অস্বীকার ও আমার বাড়িতে তাহাদের প্রবেশে বাধা প্রদান করিতে গেলে আসামীরা আমাকে প্রাণে মারিয়া ফেলিবার হুমকি প্রদর্শন করিয়াছেন। আসামীদের দ্বারা আমি অত্যন্ত ভীত সন্ত্রস্ত আমার যে কোন মুহুর্তে প্রাণনাশ ঘটিতে পারে তাহার আশঙ্খা করিতেছি। আসামীরা দুইজনেই বাংলাদেশের নাগরিক তাহারা আতঙ্কবাদী যে কোন মুহুর্তে ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে নাশকতা মূলক কাজ ঘটাইতে পারে। আসামীরা জালিয়াত, মিথ্যা পরিচয়ে আমার বাড়িতে জোরপূর্বক রহিয়াছেন। তাহারা আমার সম্পত্তি দখল করিবার চেষ্টা চালাইতেছেন। ইহার প্রতিবাদ করায় ১ নং আসামী গত ইং ২৫/১১/২০২৩ তারিখে রাত্রি আনুমানিক ১১:৩০ নাগাদ আমাকে শাসরোধ করিয়া মারিয়া ফেলিবার উপক্রম করিলে আমার স্ত্রী দেখিতে পায় তখন ১ নং আসামী আমাকে ছাড়িয়া দেয় এবং শাসন গর্জন করিয়া বলেন যে, আমি যদি তাহাদের কোন কাজে বা প্রদান করিলে এবং আমি যদি তাহাদের বিরুদ্ধে কোন জায়গায় অভিযোগ করি তাহা হইলে তাহারা আমাকে কেটে কুচিকুচি করে জলে ভাসাইয়া দিবে এবং আমার পরিবারকে প্রাণে মারিয়া ফেলিবেন। উক্ত ১ নং আসামী আমার স্ত্রীর উপর চড়াও হইয়া শ্লীলতাহানির, প্রাণনাশের হুমকি দিতেছে। প্রকাশ থাকে যে, আসামীদের বিছানার নিছে থেকে গোপনে আমার স্ত্রী দুইটি ভোটার কার্ড থেকে জেরক্স কপি সংগ্রহ করিয়া দেখিয়া নিশ্চিত হই যে উক্ত দুইটি ভোটার কার্ড বাংলাদেশ সরকার দ্বারা অনুমোদিত ও আসামীরা বাংলাদেশের নাগরিক এবং তাহারা উপরোক্ত ঠিকানার বাসিন্দা। উক্ত দুইটি ভোটার কার্ডের জেরক্স কপি অত্র এজাহারের সহিত দাখিল করা হইল। এমতাবস্থায় আসামীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা লইবার জন্য আপনার শরনাপন্ন হইয়াছি।বিধায় প্রার্থনা উপরোক্ত অবস্থাধীনে আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত যথাযথ ব্যবস্থা লইয়া আমার সুবিচারে মহাশয়ের বিনম্র আজ্ঞা হয়। নিবেদন ইতি তাং-২৭/১১/২০২৩।”
সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন,দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অন্তর্গত বংশীহারী থানায় দুইজন বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীর বিরুদ্ধে বারবার লিখিত অভিযোগ পত্র দেওয়া সত্ত্বেও রাজ্য পুলিশের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না! অভিযোগকারী ব্যক্তি যথেষ্ট প্রামান্য নথি (অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বাংলাদেশের সচিত্র পরিচয়পত্র) দিলেও পুলিশের অবস্থান একেবারে নির্বিকার। কারণ একটাই — ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী @MamataOfficial – এর কড়া নির্দেশ, কোনও অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা না নেওয়া হয়। দেশের প্রকৃত নাগরিকদের নিরাপত্তা, দেশের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা চুলোয় গেলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়োজন স্রেফ অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ভোট! কারণ এরাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় ভোট ব্যাঙ্ক।’।

