এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৪ জুন : আর মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যাবে দিল্লির মসনদে কারা বসবে- নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ নাকি ইন্ডি জোট । অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে ‘অবকি বার ৪০০ পার’-এর শ্লোগান তুলেছিল বিজেপি । অন্যদিকে ইন্ডি জোটের চালিকা শক্তি কংগ্রেস দাবি করেছে যে তাদের জোট ২৯৮ টি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসবে । কিন্তু বুথ ফেরত সমীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয় বারের জন্য সরকার গড়বেন নরেন্দ্র মোদী । এদিকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আজ মঙ্গলবার সকালে একটি ভিডিও বার্তায় তৃণমূল ও রাজ্য পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন । তৃণমূল নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন যে বিজেপি কর্মীদের রক্ত ঝড়লে তাদের নরক দেখিয়ে দেবেন । পাশাপাশি রাজ্য পুলিশকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন,চটি চাটলে পরে তাদের ধুলো চাটাবেন ।
শুকান্ত মজুমদার বলেছেন,’আমি গোটা রাজ্যের আমাদেরর দলের কর্মীদের কাছে আবেদন করতে চাই যে আমি নিজের আসন বালুরঘাটের গণনা নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও গোটা রাজ্যের উপর আমার নজর থাকবে । বিজেপি কর্মীদের বলে রাখছি, ভোটে যেমন প্রাণ দিয়ে লড়াই দিয়েছেন তেমনি গণনার দিন ধৈর্য ধরে শেষ পর্যন্ত মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে হবে । জয়ের আনন্দে মাতলেও কেউ কোন উস্কানিতে পা দেবেন না,তেমনই পরিকল্পনা করে রেখেছে ভাইপো বাহিনী । তবে তৃণমূল যদি আক্রমণ করতে আসে তাহলে সবাই একসঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন ।’
পাশাপাশি তিনি তৃণমূল ও রাজ্য পুলিশকে সতর্ক করে বলেছেন,’আর তৃণমূল নেতাকর্মীরা কান খুলে শুনে রাখুন, বিজেপি কর্মীদের আক্রমণ করলে কেউ কিন্তু পার পাবেন না । আমি সুকান্ত মজুমদার বলে রাখছি, প্রতিটি আক্রমণের হিসাব না হবে, কোথায় কিভাবে সব ঠিক করা আছে । কোন বিজেপি কর্মীর রক্ত ঝরলে আপনাদের নরক দেখানোর ব্যবস্থা করে ছাড়বো । একই সঙ্গে পুলিশ কর্মী এবং সরকারি আমলা অফিসারদের বলে রাখছি,চটি চাটলে আগামী দিনে কিন্তু ধুলো চাটতে হবে । গোটা রাজ্যে আমার নজর রয়েছে । কোথায় কোন পুলিশ কর্তা তৃণমূলের দলদাস তার তালিকাও আছে আমার কাছে ।’
সুকান্ত সবশেষে বলেন,’আর ভোট গণনায় কোনো রকম গোলমালের চেষ্টা করার খবর যদি আমি পাই, আমি বলে রাখছি কেউ পার পাবেন না । যার টিকি যেখানেই বাধা থাক, মাথা অব্দি টেনে রাস্তায় নামাবো । সুতরাং শান্তিতে ভোট গণনা হতে দিন । আর ফল প্রকাশের পরে শান্তি বজায় রাখুন । উসকানি দিলে সমূলে উৎপাটন করা হবে । তৃতীয় মোদি সরকার গঠনের আগাম অভিনন্দন সকলকে জানিয়ে রাখলাম।’
অন্যদিকে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ বলেছেন ‘বাংলার ফল ব্যতিক্রমী হবে’ । তিনি নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘স্ট্রং রুম পাহাড়ে দেওয়ার কথা বলছেন মমতা ব্যানার্জি, অভিষেক ব্যানার্জি । এই কথা এর আগে বিরোধীরা বলতেন । বাংলার ফল এবার ব্যতিক্রমী হতে চলেছে । অনুমান করেই ইভিএম আগলে রাখার কথা বলছেন । মানুষ রায়দান করে ফেলেছেন । আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা । সব হিসাব হবে ।’
প্রসঙ্গত,বুথ ফেরত সমীক্ষা যদি বাস্তব প্রমাণিত হয় তাহলে রাজ্যে কার্যত তোলপাড় শুরু হয়ে যাবে । কারণ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী আগে থেকে বলে রেখেছেন বিজেপি ৩০ আসন পেলে চলতি বছরেই এ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হবে । দিনগুলোকে আগে কলকাতায় শুভেন্দু অধিকারীর পাশে বসে সাংবাদিক সম্মেলনের বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমিক ভট্টাচার্য বলেছিলেন ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই’ রাজ্যের মালা বদল হবে এবং অচিরেই হবে । রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহলের মতে,এই গণতান্ত্রিক পদ্ধতির আড়ালে তিনি আদপে তৃণমূল কংগ্রেসের ভাঙনের ইঙ্গিত দিয়েছেন । বিজেপি যদি দেশজুড়ে বিপুল সংখ্যায় আসন পায় তাহলে তৃণমূলের অনেক তাবর নেতা দলত্যাগ করে গেরুয়া শিবিরে চলে যেতে পারে বলে অনুমান করছেন তারা । কিন্তু অন্যদিকে বিজেপি যদি ভালো ফলে রাজ্য না করতে পারে তাহলে নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়বে মমতা-অভিষেক । সে ক্ষেত্রে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল অনেকটাই অ্যাডভান্টেজ পাবে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞমহল ।।