প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ জুন : অনলাইন মাধ্যমে ভিন রাজ্যের যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তরুণীর । সেই প্রেমের শেষ পরিণতিও ঘটলো অনলাইনেই। না ,এটা কোন সিনেমার গল্পকথা নয়। বাস্তবেই এমন ঘটনার কথা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনার কুমোরপাড়া এলাকায় । যে ঘটনার কথা শুনে কার্যতই হতবাক হয়ে গিয়েছেন কালনাবাসী ।
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভিন রাজ্যের এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল কুমোরপাড়ার তরুণী কোয়েল রুইদাসের । গালার ওড়নার ফাঁস লাগানোর ছবি সেই প্রেমিকেরই হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠিয়ে আত্মঘাতি হল কোয়েল।মঙ্গলবার কালনা মহকুমা হাসপাতাল মর্গে কোয়েল রুইদাসের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়।কালনা থানার পুলিশ এই মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে ,বছর
১৮ বয়সী কোয়েল রুইদাসের নিজের বাড়ি
পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার পাল্লারোড এলাকায়। তবে সে ছোট বয়স থেকেই কালনার কুমোরপাড়ায় মামার বাড়িতে থাকতো। সেখানকার স্কুলেই দ্বাদশ শ্রেনীতে পড়তো কোয়েল। লকডাউনের সময়ে পড়াশুনার সুবিধার্তে বাবা রাজু রুইদাস তাঁর মেয়ে কোয়েলকে একটি মোবাইল ফোন কিনে দেন । সেই ফোনে আপলোড থাকা ’ফেসবুক’ ও ’হোয়াটসঅ্যাপ’ মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশের এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় কোয়েলের । পরে তাঁদের মধ্যে প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরী হয়।সামনা সামনি একে অপরের সঙ্গে কারুর দেখা সাক্ষাৎ না হলেও অনলাইনে সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যমে উভয়ে দিন রাত প্রেম ভালবাসার কথায় মজে থাকতো। ভাঙা ভাঙা হিন্দি ও ইংরেজিতে উভয়ে কথা বলতো বলে মামা বাড়ির সদস্যরা ভাগ্নি প্রেম করছে এমনটা ঠিক ঝুঝে উঠতে পারেননি ।
মৃতার দাদু মিন্টু রুইদাস এদিন বলেন,’নাতনি কোয়েলকে পড়াশোনার জন্য মোবাইল ফোন কিনে দেয় ওর বাবা । তবে নাতনি যে ফোনে প্রেম ভালোবাসা করছে সেই ব্যাপারে তাঁরা কিছুই জানতাম না । হঠাৎতই সোমবার দুপুরে ঘরের ভিতর গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাঁরা ঝুলতে দেখেন । দ্রুত তাকে উদ্ধার করে কালনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে চিকিৎসক কোয়েলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । মিন্টু বাবু বলেন,’এমন ঘটার পরেই পাল্লারোডে কোয়েলের বাবা মাকে খবর দেওয়া হয় । তারা কুমোরপাড়ার বাড়িতে কোয়েলের মোবাইল দেখতে শুরু করে । তখনই তাঁদের ও অন্যসবার চোখ কপালে ওঠে।মোবাইল ফোন ঘেঁটে দেখা যায় কোয়েল গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস দিচ্ছে এমন একটি ছবি অন্য একজন যুবককে পাঠিয়েছে। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপে ওই যুবকের সঙ্গে প্রেম ভালোবাসা ও সন্দেহ করা সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের মেসেজও দেখা গিয়েছে ।
মিন্টু রুইদাস জানান,’নাতনির প্রেম ভালোবাসার ব্যাপারে তাঁরা কিছুই জানতেন না ।ওই যুবক মঙ্গলবারও বহুবার নাতনির ফোনে ফোন করে।নাতনি কোয়েল যে চিরতরে প্রেমে ইতি টেনে দিয়েছে তা বোধহয় ওই প্রেমিক যুবক বুঝতে পারিনি ।আক্ষেপ প্রকাশ করে মিন্টু দাস বলেন,’নাতনিকে ফোন কিনে দেয়ার পরিণতি যে এমন ভয়ংকর হবে তা তাঁরা কল্পনাও করতে পারছেন না ।’।