এইদিন ওয়েবডেস্ক,লন্ডন,০৭ ডিসেম্বর : কোভিডের দুটি ডোজ নেওয়ার পরেও প্রাপ্তবয়স্করা কোভিড আক্রান্ত হলে তাঁদের বেশিরভাগই এখন শুধুমাত্র সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ অনুভব করছেন । এমনই জানিয়েছেন,লন্ডনের কিংস কলেজের জেনেটিক এপিডেমিওলজির(genetic epidemiology)
অধ্যাপক টিম স্পেক্টর (Tim Spector) । একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে,ঠান্ডার কারনে যাদের ঘ্রাণের সমস্যা অথবা সাধারণ সর্দি-কাশির উপসর্গ রয়েছে তাদের তিন জনের মধ্যে একজনের প্রকৃতপক্ষে করোনভাইরাস রয়েছে ।
উল্লেখ্য,কিংস কলেজ লন্ডন জো কোভিড অধ্যয়নের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রফেসর টিম স্পেক্টর । তিনি জানান, দশ লক্ষ ব্রিটিশদের নিয়ে একটি কোভিড স্টাডি ট্র্যাকিং ডেটা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত প্রাপ্তবয়স্কদের শুধুমাত্র হালকা ঠান্ডা-সদৃশ উপসর্গ দেখা দেয় । এমন অনেক লোক যারা সংক্রামিত হয়েছিলেন অথচ পার্টিতে যাচ্ছেন । ফলে নিজের অজান্তেই তাঁরা চারপাশে ছড়িয়ে দিচ্ছেন এই ভাইরাস । সেই সঙ্গে তিনি জানান,নাক দিয়ে জল পড়া বা গলা ব্যথার মত উপসর্গ থাকলে স্ব-বিচ্ছিন্ন হওয়া (self-isolate) এবং নেগেটিভ রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত পর্যন্ত সমস্ত প্রকার অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলা উচিত ।
প্রফেসর স্পেক্টর বলেন, ‘আমরা অনুমান করছি কোভিডের কারণে ৩-৪ জনের মধ্যে একজনের মধ্যে সর্দি হয়। তাই সর্দির মতো উপসর্গ যাদের আছে তাদের অন্তত কয়েক দিনের জন্য আলাদা করতে হবে । কিন্তু এমন অনেক মানুষ আছেন যারা এই সমস্ত সংক্রমণ থাকা সত্ত্বেও পার্শ্বীয় প্রবাহ পরীক্ষা (lateral flow test) বা পিসিআর পরীক্ষা(PCR test) না করেই পার্টিকে যান । আর ভাইরাস ছড়িয়ে দিয়ে আসেন ।’
তিনি বলেন, ‘ক্রমে এটি যদি ওমিক্রনে স্থানান্তরিত হয় তবে আমরা সমস্যাটিকে অনেক দ্রুত জটিল করতে যাচ্ছি । তাই ওমিক্রনের বিস্তার রোধ করতে সর্দি-কাশির লক্ষণযুক্ত মানুষদের কিছু দিনের জন্য বাড়িতে থাকা উচিত ।’ প্রফেসর স্পেক্টর বলেন, ‘তখনই আপনি সবচেয়ে সংক্রামক হন,যে সময় আপনার থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি হয় । সেটি একটি শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস হোক বা সাধারণ সর্দি অথবা ওমিক্রন বা ডেল্টা ভাইরাস ।’
সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে প্রফেসর স্পেক্টরের পরামর্শ দেন, ‘তাই আমাদের উচিত লোকেদের অফিসে না আসার জন্য উৎসাহিত করা । তারা অসুস্থ বোধ করলে যেন কোনও পার্টিতে না যান । প্রথমে একটি পরীক্ষা করুন এবং তারপরে লক্ষণগুলি কমে গেলে নির্ভয়ে বেরিয়ে আসতে পারেন । শুধুমাত্র উপসর্গ শুরু হওয়ার প্রথম কয়েক দিনের জন্য এই সতর্কতা অবলম্বন করুন । দশ দিন ঘরে বসে থাকার কোনও দরকার নেই ।’
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিনোলজির সহযোগী অধ্যাপক ম্যাথিউ স্নেপ(Matthew Snape) জানান,বিজ্ঞানীরা আশাবাদী যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আরও গুরুতর লক্ষণ সৃষ্টি করবে পারবে না ।ভ্যাকসিন দ্বারা প্রদত্ত টি-সেল (T-cell) অনাক্রম্যতা (T-cell immunity) গুরুতর রোগ প্রতিরোধ করবে । টি-সেল হল এক ধরনের শ্বেত রক্তকণিকা যা কোভিডকে মেরে ফেলে । ভ্যাকসিনগুলি ওমিক্রন প্রতিরোধে কতটা সহায়ক তা জানতে যুক্তরাজ্যে পরীক্ষা চলছে বলে জানিয়েছেন ম্যাথিউ স্নেপ ।।