এইদিন ওয়েবডেস্ক,সুদান,০৮ জানুয়ারী : সরকারি এক অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় প্যান্টে প্রস্রাব করে ফেললেন উত্তর আফ্রিকার দেশ দক্ষিণ সুদানের প্রেসিডেন্ট ৭১ বর্ষীয় সালভা কির (Salva Kiir)। ঘটনাটি গত বছরের ডিসেম্বরের হলেও সেদেশের সংবাদ মাধ্যমে খবরটি প্রকাশিত হয়নি । কিন্তু সম্প্রতি ভিডিওটি ফাঁস দেন সুদানের কয়েকজন সাংবাদিক । আর তাঁদের সেই অপরাধের জন্য ৬ জন সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে দক্ষিণ সুদানের পুলিশ । দক্ষিণ সুদানের সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি প্যাট্রিক ওয়েট বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল দক্ষিণ সুদান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনে কাজ করা ওই সাংবাদিকদের মঙ্গলবার ও বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে । গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিকরা হলেন ক্যামেরা অপারেটর জোসেফ অলিভার ও মোস্তফা ওসমান, ভিডিও সম্পাদক ভিক্টর লাডো, কন্ট্রিবিউটর জ্যাকব বেঞ্জামিন এবং নিয়ন্ত্রণ কক্ষের চেরবেক রুবেন ও জোভাল টুম্বে । তবে সাংবাদিকদের গ্রেফতারের বিষয়ে মুখ খোলেননি দেশটির তথ্যমন্ত্রী মাইকেল মাকুয়েই ও জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার মুখপাত্র ডেভিড কুমুরি ।
গত ডিসেম্বরের ওই ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট সালভা কির একটি সড়কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। সড়কটির উদ্বোধনের আগে অতিথিদের সাথে নিয়ে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত গাইছিলেন তিনি। সেই সময় হঠাৎ তার পরনের ধূসর প্যান্টের বাম দিকের পায়ের উপর থেকে কালো রেখা লক্ষ্য করা যায় । ক্রমশ সেই রেখা স্পষ্ট হতে হতে থাকে । তারপর প্যান্টের নিচে দিয়ে জলে ধারা বয়ে যেতে দেখা যায় । দৃশ্যটি খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে । কিন্তু সরকারের হুঁশিয়ারি থাকায় ভিডিওটি কোনও টেলিভিশনে প্রচার করা হয়নি বা এনিয়ে কোনো সংবাদপত্রে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়নি । কিন্তু কিছু সাংবাদিক সম্প্রতি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করলে ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসে ।
দেখুন ভিডিও :-
গত এক দশকের বেশির ভাগ সময় সংঘাতে কেটেছে দক্ষিণ সুদানের । ২০১১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে দক্ষিণ সুদানের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন কির। বয়স জনিত কারনে তিনি বারবার অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাঁর তরফ থেকে প্রতিবারই অসুস্থতার খবর অস্বীকার করা হয় । এবার প্যান্টে প্রস্রাব করে ফেলার ঘটনার পর অনেকে প্রশ্ন করেছে যে কির এখনও দক্ষিণ সুদান শাসন করার জন্য যথেষ্ট উপযুক্ত কিনা ।
সাংবাদিকদের গ্রেফতারের প্রসঙ্গে সিপিজে-এর সাব-সাহারান আফ্রিকার প্রতিনিধি মুথোকি মুমোর অভিযোগ,’যখনই পুলিশ কর্মকর্তারা কভারেজকে প্রতিকূল মনে করেন তখনই নির্বিচারে আটকে রাখা হয় সাংবাদিকদের ৷ এটাই এদেশের নিরাপত্তা কর্মীদের স্বচ্ছতার নমুনা । কর্তৃপক্ষের উচিত ওই ছয় সাংবাদিককে নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেওয়া এবং ভয়ভীতি বা গ্রেপ্তারের হুমকি ছাড়াই সাংবাদিকরা যাতে কাজ করতে পারে তা নিশ্চিত করা ।’।