এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৯ ফেব্রুয়ারী : মঙ্গলবার বিধানসভা অধিবেশন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন, ‘একটা ধর্মের নাম নিয়ে কুৎসা করছেন। এত অপ্রচার করছেন। একদিন তাঁরা যদি একটা আন্দোলনের ডাক দেয়, সামলাতে পারবেন তো?’ আজ বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের জবাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পালটা ‘চ্যালেঞ্জ’ ছুড়ে দিলেন বিরোধী দলনেতা । তিনি লিখেছেন, ‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়া, গতকাল বিধানসভায় আপনি দিঘার জগন্নাথ ‘মন্দির’ নিয়ে আমাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন ও আমার “বুকের পাটা” সংক্রান্ত মন্তব্য করার ঔদ্ধত্য দেখিয়েছেন ।’
তিনি লিখেছেন,শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,যেহেতু আপনি দাবি করছেন যে, সনাতন ধর্মের অন্যতম পীঠস্থান; পুরীর জগন্নাথ ধামের অনুকরণ করে ‘মন্দির’ নির্মাণ করছেন দিঘায় তীর্থক্ষেত্র স্থাপন করার উদ্দেশ্যে, তাই আমি আপনাকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি, যদি আপনার “বুকের পাটা” রয়েছে, তাহলে: ১) আজই নির্দেশ দিন যে, সরকারী অর্থ ব্যয় করে, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সমস্ত সরকারি নথিতে “জগন্নাথ ধাম সংস্কৃতি কেন্দ্র” শব্দবন্ধটি ব্যবহার করেছেন, তা বদলে “শ্রীশ্রী জগন্নাথ মন্দির” করে দেওয়া হোক। WBHIDCO এর টেন্ডার ও ওয়ার্ক অর্ডারের নথি, যা আমি সংযুক্ত করেছি, সেখানে যেনো এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
২) পুরীর শ্রীশ্রী জগন্নাথ মন্দিরে হিন্দু ব্যতীত আর কোনও অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষজনের প্রবেশাধিকার নেই। মন্দিরের সিংহদ্বারের কাছে পাথরের ফলকে পাঁচটি ভাষায় (হিন্দি, ওড়িয়া, বাংলা, ইংরেজি এবং উর্দু) স্পষ্ট ভাবে প্রবেশ সংক্রান্ত নির্দেশনাবলী লেখা রয়েছে। ছবিটি এই পোস্টের সাথে সংযুক্ত করলাম।
আপনিও নির্দেশ দিন উৎকলের শ্রীক্ষেত্র; পুরীর জগন্নাথ ধামের মতোই দিঘা তেও প্রধান দ্বারের পাশে ফলক লাগানো থাকবে যে “হিন্দু ব্যতীত অন্য কোনও ধর্মাবলম্বী মানুষজনের প্রবেশাধিকার নিষেধ।”
আপনি আমার “বুকের পাটা” নিয়ে মন্তব্য করেছেন, তাই আপনার জ্ঞাতার্থে আর একবার স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, আপনি যখন ২০২১ সালে নন্দীগ্রামে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এসেছিলেন, তখন “বুকের পাটা” ছিল বলেই ১৯৫৬ ভোটে আপনাকে হারিয়েছিলাম। চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন ও এই দুটি কাজ করে দেখান, তবে বুঝবো যে আপনার “বুকের পাটা” আছে এবং চাপে পড়ে ‘বক ধার্মিক’ সাজছেন না। জয় জগন্নাথ।’
মঙ্গলবার মমতা বলেছিলেন,আমাকে বলেছে, আমি নাকি হিন্দুধর্মকে তাচ্ছিল্য করি। আর আমি মুসলিম লিগ করি। এত সংগ্রাম করার পর আমাকে এই জীবনে এসেও শুনতে হবে যে জম্মু ও কাশ্মীরের জঙ্গিদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক। আর বাংলাদেশি জঙ্গিদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক। বাংলার মানুষকে বলব, যদি প্রমাণ করতে পারেন, একদিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়ে চলে যাব।’ বিরোধী দলনেতাকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,’আপনি মুখের ভাষায়, বিরোধী দলনেতা হিসেবে যে অভিযোগ করেছেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে জানাব, একথা আপনি বলতে পারেন কি না। আর যদি আমি জঙ্গি হই, প্রধানমন্ত্রী আমাকে জানাবেন।’
মমতা বলেন,’আমরা আছি বলে বাংলা এখনও শান্ত আছে। বাংলাদেশ এই পরিস্থিতির পরও তার আঁচ রাজ্যে পড়েনি। এটা সর্বধর্ম সমন্বয়ের বাংলা। এটা সব ধর্মের দান। এটা সব জাতির মানুষের দান।’ শুভেন্দুকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন,’আপনারা তো বর্ডারে গিয়ে উসকেছিলেন। বাংলার মানুষকে উসকেছিলেন। ভুলে গিয়েছিলেন বাংলাটা দেশের মধ্যেই, দেশের বাইরে নয়।’।