এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৬ মে : বৃহস্পতিবার সুব্রত বক্সি এবং অরূপ বিশ্বাসের হাত ধরে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা ৷ আর তৃণমূলের যোগ দিয়েই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিরুদ্ধে তিনি তোপ দাগেন । দলত্যাগী জন বার্লার অভিযোগ,’রেলের জমিতে ১০০ শতাংশ অনুদান নিয়ে, ১৬০ কোটির হাসপাতাল তৈরি করতে গিয়েছিলাম। রেল জমিও বেছে দিয়েছিল। শুধু মউ স্বাক্ষর বাকি ছিল। কিন্তু এখন যিনি বিরোধী দলনেতা, উনি যেভাবে কাজ আটকে দেন…মানুষ আশীর্বাদ দিয়ে আমাকে মন্ত্রী বানান। কিন্তু নিজেদের দলের লোকই, এখনকার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী…এখান থেকে ফোন গেল আর আমাকে আটকে দেওয়া হল। এভাবে উন্নয়নমূলক কাজ আটকে দেওয়া হলে কে এমন দল করবে? মানুষ আমাকে নির্বাচিত করে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু আমাকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছিল না। এমন দল কেন করব, যারা আমাকে বাধা দেয়?’
এদিকে বার্লার এই মন্তব্যের পর তাকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী । ইমেলে পাঠানো সেই নোটিশের স্ক্রীন শর্ট এক্স-এ ভাগ করে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’গতকাল অলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী, যাঁকে দল পুনরায় মনোনয়ন না দেওয়ায় উনি দল বদল করে চোরেদের দলে নাম লিখিয়েছেন, বিনিময়ে ওনার নতুন দলের মালিক, যাঁকে আমি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে ১৯৫৬ ভোটে পরাজিত করেছিলাম, ওনাকে খুশি করতে আমার বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ ছাড়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। তিনি আগে থেকে আই-প্যাক এর লিখে দেওয়া চিত্রনাট্য মুখস্ত করে সর্বসমক্ষে আউড়েছেন।এই মিথ্যা বক্তব্যের বিরুদ্ধে আমি আমার আইনজীবী শ্রী সূর্যনীল দাসের মাধ্যমে ওনাকে একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছি।’
তিনি আরও লিখেছেন,’নোটিশে আমি নিম্নলিখিত দাবি জানিয়েছি: ক) ৭ দিনের মধ্যে আমার কাছে লিখিতভাবে এবং প্রকাশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে। খ) এই ক্ষমাপ্রার্থনা প্রধান ইংরেজি ও বাংলা সংবাদপত্রে এবং যে মিডিয়া চ্যানেলে এই মানহানিকর বক্তব্য প্রচারিত হয়েছে, সেখানে প্রকাশ করতে হবে।
গ) ভবিষ্যতে আমার বিরুদ্ধে অন্য কোনো মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া বা ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যদি এই দাবিগুলি পূরণ না হয়, তবে আমি দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হব।’
প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন ধরেই জন বার্লার তৃণমূলে যোগদান নিয়ে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল । অবশেষে গতকাল তিনি শিবির বদল করেন । যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, ‘। ছ’-সাত মাস আগে থেকেই কথা চলছিল। দিদিও মাঝে ফোন করেছিলেন। কাজ করতে বলছিলেন। আমি চাইছিলাম, নিজের ক্ষেত্র, চা-বাগান নিয়ে যেমন করতাম…মন্ত্রী ছিলাম যখন কাজ করতে গিয়ে বাধা পেতাম ।’ এখন আসন্ন বিধানসভার ভোটের ঠিক আগেই আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন সাংসদ জন বার্লার দলত্যাগে উত্তরবঙ্গে বিজেপির উপর কতটা প্রভাব পড়ে সেটাই দেখার বিষয় ।।

