এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৭ জানুয়ারী : ফের হিন্দু ধর্মকে আক্রমণ করল তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ দল সিপিএম । সিপিএম নেতা তথা কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য দেবী কালীকে ‘ডাকাত’ এবং কার্তিক ও গণেশকে ‘চোর’ বলে অভিহিত করেছেন । তার কথায় মা কালি যদি ডাকাত হতে পারে তাহলে তার সন্তানরা চোরছ্যাঁচর কেন হবে না ? তবে যথারীতি ইসলাম বা খ্রিস্টান ধর্ম সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি বিকাশ । সিপিএমের ওই বর্ষীয়ান নেতার এই প্রকার “ভন্ডামী”কে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিকাশ রঞ্জন মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন ।
আসলে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের এক ‘বিদূষী বান্ধবী’র লেখা বইয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তিনি । সেই বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপিং শেয়ার করেছেন শুভেন্দু অধিকারী । যেখানে সিপিএমের বিকাশকে বলতে শোনা গেছে, ‘কলকাতা শহরে আমি কিন্তু কার্তিক পুজো সার্বজনীন দেখতে পাচ্ছি,যা ইতিপূর্বে আমরা দেখনি ।’ একথা শোনার পর উপস্থিত শ্রোতারা হেসে গড়াগড়ি খায় এবং হাততালি দিয়ে ওঠে । বিকাশ নিজেকে ‘বিশ্লেষণাত্মক লেখাপড়া’ করা ব্যক্তি উপাধিতে ভূষিত করে বলেন,’আমরা দেখতে পাচ্ছি যে সব ঘটনা কি দেবত্বে আরোপ করা যায় । দেবত্ব প্রকৃতপক্ষে মানব সমাজেরই প্রতিবিম্ব । দেবতাদের দিয়ে মানুষ তৈরি হয়নি, মানুষই দেবতা তৈরি করেছে । বিষয় হলো যে মানুষ সমাজে যা কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি, বাড়াবাড়ি, খুনুখুনি ছলচাতুরি, চৌর্যবৃত্তি, ধর্ষণ যা কিছু আছে তা সবই কিন্তু দেবতাদের মধ্যে আছে ।’
বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, সতী প্রথাকে বেআইনি ঘোষণা করার জন্য লড়াই হয়েছিল । কিন্তু আমরা বলছি সতী প্রথা থাকুক… থাকবে না কেন ? সতীপতা থাকার মানে উচ্চবর্ণ ব্রাহ্মণদের নারী ভোগের একটা চূড়ান্ত সুযোগ । আর সম্পত্তি লোপাট করার সুযোগ ।’
বিকাশ ভট্টাচার্যের কথায়, ডাকাতে কালিতে মা যদি ডাকাত হয় তাহলে সন্তান-সন্ততিটা চোর জোচ্চর হবে না ? এটা হয় নাকি ? আর কালী মন্দিরের আশেপাশে যে নেত্রী ঘোরাফেরা করেন তার মধ্যে চৌর্যবৃত্তি তো বৃদ্ধি পাবেই । তাই বিষয়ে আরেকটু পড়াশোনা করতে হবে, সংস্কৃত তো জানিনা । বাংলাটাও পুরোপুরি জানিনা ।’
এরপর বিকাশ বলেন, এই চৌর্যবৃত্তি সম্পর্কে হয়ত কারোর কাছে শুনেছেন… কার্তিক পুজো বাড়াও কার্তিক চুরি করতে পারে… গণেশ পুজো বাড়াও…. ছেলেবেলায় আমি কালীঘাটে বড় হয়েছি… হালখাতার সময়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের গণেশ ঠাকুর হাতে নিয়ে যেতে দেখতাম । এইটুকুই গণেশ দেখা । এখন গণেশ তো শুড় তুলে কলকাতার বুকে… রাস্তা জুড়ে প্যান্ডেল হয়ে তিন দিন ধরে নাচ গান হচ্ছে । দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ।’
বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের ‘বিদূষী বান্ধবী’র ‘জীবন্ত গবেষণা অনুধাবন’ করতে পারলে ‘ওদের'(হিন্দুত্ববাদী) ‘আক্রমণ করতে পারব’ বলে মন্তব্য করে বলেন, ‘চৌর্যবৃত্তিকে তোমরা দেবত্বে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করো না । কারন আদৌ কার্তিক গণেশ দেবতা ছিলেন না । তোমার বাড়ির পাঁচটি অতিরিক্ত রুটি যদি ক্ষুধার্ত মানুষ কেড়ে নেয় তখন যদি তুমি তাকে চোর বলে পেটাতে যাও… ওহে,সে টাকেও তোমরা গণেশের কম্ম মনে কর,কার্তিকের কম্ম মনে কর । ক্ষুধা পাইলে চুরি করিবে এটাও মনে রেখো ।’
সিপিএমের বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের এই প্রকার হিন্দু বিদ্বেষী বক্তব্যের তীব্র ধিক্কার জানিয়ে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’বামপন্থার বস্তা পচা মনোভাব কে ধিক্কার জানাই… সিপিএম এর বিকাশরঞ্জন ভট্টাচাৰ্য হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী লোকজনের ভাবাবেগে আঘাত হেনে নিজেকে একজন “সেকুলার” প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এর পূর্বে ও খোলা রাস্তায় নানারকম কৌশলজনিত চমকপ্রদ কান্ড কারখানা করে দেখিয়েছেন। কিন্তু ভোট বাক্সে তার প্রতিফলন মেলেনি। ওনার ও ওনার দলের প্রাপ্ত ভোট কমতে কমতে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে !
তিনি আবারও হিন্দু ধর্মের আরাধ্য দেব দেবীদের নিয়ে বেশ কিছু আপত্তিকর, অপমানজনক ও ঘৃণ্য মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন দেবতারা অশিক্ষিত, তিনি মা কালী কে ডাকাত বলছেন সিদ্ধিদাতা শ্রীগণেশ, দেব সেনাপতি কার্তিক’কে চোর বলছেন।
আমি বিকাশবাবুকে বলতে চাই সেকুলারিজমের নামে আপনারা হিন্দু ধর্মের আস্থা এবং বিশ্বাসের উপর আঘাত হানা বন্ধ করুন। হিন্দুরা সহনশীল, তাই আমাদের ধর্ম নিয়ে এবং আমাদের আস্থা, বিশ্বাস বা উপাস্য দেবদেবীদের নিয়ে সমালোচনা করা সহজ, এই রকম যদি অন্য কোনো ধর্মের বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের আস্থা নিয়ে আপনি বলতেন এতক্ষণে আপনি নিজের বাসভবন থেকে বেরোতে পারতেন কিনা সন্দেহ। সেকুলারিজমের নামে আপনাদের এই হিন্দু বিরোধী রূপ ও বিদ্বেষ এখন মানুষের সামনে উন্মুক্ত। তাই পশ্চিমবঙ্গের জনগন আপনাদের আস্তাকুঁড়েতে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। আপনাদের অস্থিত্ব এখন নোটার থেকেও নীচে এসে দাঁড়িয়েছে।’
সব শেষে তিনি সিপিএমের বিকাশকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন,’আমি শুধু আপনাকে সাবধান করতে চাই আপনি সনাতন ধর্মের অনুসারী দের,হিন্দুদের আস্থা ও বিশ্বাসে এই ধরনের আলপটকা মন্তব্য করা বা আঘাত হানা বন্ধ করুন। নয়তো মানুষ মনে করবে যে আপনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন।’।