প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৮ জানুয়ারি : ‘নোটবন্দীর সময়ে গোটা পশ্চিমবঙ্গে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারা নোট বদল করেছেন । ভাইপোও করেছে । ভাইপো তার পিএ-কে দিয়ে এবং কিছু নির্দিষ্ট ক্যাডারকে দিয়ে নোট বদলিয়েছে । বর্ধমানে বারের মালিক এক যুবনেতার মাধ্যমেও টাকার বদল ঘটানো হয়েছে। এছাড়াও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের স্ত্রীর নামে ৪ কোটি টাকা পরিবর্তন করা হয়েছে বিধানধগরের ব্যাঙ্কে । আর প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অর্ধেন্দু মাইতি নোটবন্দীর সময়ে মুখবেড়িয়া কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে ১৫ কোটি টাকা নোট বদল করেছেন।এই সংক্রান্ত সমস্ত ডকুমেন্টস আমার কাছে আছে’- রবিবার বর্ধমানে এসে সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেত শুভেন্দু অধিকারী । একইসঙ্গে তিনি বলেন,’জলশক্তি দফতরের টাকার কাজের টেন্ডার ভাইপোর সচিব উল্গানাথন ১৫ জানুয়ারির মধ্যে করে দিতে বলেছে। এটা একদমই বেআইনি। যদি বেআইনি ভাবে ফিফটিন ফিনান্সের টাকা এদিক ওদিক করা হয় তাহলে এ ক্ষেত্রেও আমরা আবাস যোজনা ও মানরোগার মতই ব্যবস্থা নেব ।’
বর্ধমানের গাংপুরে সংলগ্ন প্যামরায় রবিবার অনুষ্ঠিত হয় বিজেপির সভা ।সেই সভার প্রধান বক্তা ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সভায় বক্তব্য রাখতে উঠে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, চারবার চেষ্টার পর বর্ধমানের উপকন্ঠে বিজেপির সভা করা হল। সভা করার জন্য আগে চারবার প্রশাসনের অনুমতি পাওয়া। রাজ্য সরকারের দুর্নীতি বিরোধী ওই সভায় শুভেন্দু অধিকারীর আক্রমনের নিশানায় ছিল এই রাজ্যের তৃণমূল সরকার এবং আবাস যোজনা থেকে শুরু করে বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তীতে বিজেপি নেতা ও কর্মীদের উপর হামলা ও সন্ত্রাস চালানোর ঘটনা। শুভেন্দু বাবু দাবি করেন,শুধুমাত্র মেদিনীপুর ও মালদায় নয় । তার অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের আরো১৪ টি জেলায় আবাস যোজনা নিয়ে তদন্তে আসবে কেন্দ্রীয় টিম ।
মোমিনুপুরের ঘটনা প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী এদিন বলেন,কলকাতা পুলিশ গোটাটাই গট আপ অ্যারেস্ট করেছিল ওই এলাকার তৃণমূলের দায়িত্বে থাকা নেতার সাথে কথা বলে। একমাস দু’মাস জেলে থাকতে পারে এমন লোককে তুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমতায় তৃণমূল কর্মী খুন নিয়ে তিনি বলেন,আমরা হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। যে কোন মৃত্যু দুঃখের। তবে বিস্তারিত না জেনে এর বিষয়ে আর কিছু বলতে তিনি অস্বীকার করেন । পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, গোটা তৃণমূল দলটাই চোর। কর্পোরেটের মত ওই দল চলছে।২০২২ শে ৫২৮ কোটি টাকা কারা তৃণমূকে ইলেকটরাল বণ্ড দিল তার তালিকা প্রকাশের দাবি করেন বিরোধী দলনেতা। এত টাকা কি মদের কোম্পানিগুলো দিল?এই প্রশ্নও তিনি তুলেছেন । এবারের পঞ্চায়েত ভোটে মানুষের জোট হবে হবে বলেও বিরোধী দলনেতা মন্তব্য করেছেন। ।এদিনের সভায় শুভেন্দু ছাড়াও সাংসদ সৌমিত্র খান ; জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা সহ রাজ্য এবং জেলার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিরোধী দলনেতার এদিনের বক্তব্য প্রসঙ্গে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন,’উনি কি হেডমাস্টার নাকি? ওর বিরুদ্ধেই তো বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। তার পরেও উনি লম্বা চওড়া কথা কোন মুখে বলছেন। কে চোর,কে হাত পেতে টাকা নিয়েছে তা আর নতুন করে আমাদের বলতে হবে না।বাংলার মানুষ সব জানে ।’।