প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০২ সেপ্টেম্বর : আরজি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত মহিলা ডাক্তার কে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চলছে রাজ্য জুড়ে।ঘটনার পর থেকে দিন যত গড়াচ্ছে ততই প্রকাশে আসছে বঙ্গের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বাসা বেধে থাকা দুষ্ট চক্রের নানা কুকীর্তি কাহিনী । যে কাহিনীর অন্যতম কাণ্ডারী ডাঃ আভীক দে’র বিরুদ্ধে এখন ক্ষোভে ফুঁষছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গোটা ডাক্তার কুল।তারা আরজি কর কাণ্ডের ন্যায় বিচার এবং ডাক্তার অভীক দে’র বর্ধমান হাসপাতালে খবরদারি করা আটকাতে এখন একাট্টা হয়ে আন্দোলন চালাচ্ছেন ।
আন্দোলনকারী ডাক্তাররা সোমবার অভিযোগ করেন ১১ আগস্ট রাতে লেকচার থিয়েটার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে মেডিকেল কলেজে ঢুকে বৈঠক করলেন ডাঃ অভীক দে। হাসপাতালের ডাক্তার বা কোন পদাধীকারি না হয়েও কোন স্পর্ধায় অভীক দে এমনটা করতে পারলেন সেই প্রশ্ন সামনে এনেই এদিন জিবি মিটিংয়ে সরব হন চিকিৎসক পড়ুয়ারা।
প্রতিবাদী চিকিৎসক পড়ুয়ারা এদিন বলেন,আমাদের কাছে অভীক দে নিজে স্বীকার করেছেন মহিলা ডাক্তার খুন হওয়ার দিন তিনি আর জি কর মেডিকেল কলেজের হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। মহিলা ডাক্তারকে কেউ ধর্ষণ করে নি বলে ওই দিন
ডাঃ অভীক দে দাবি করেছিলেন।এক অভিও বার্তায় সেটা ভাইরালও হয়েছে। এখানেই শেষ নয়,পড়ুয়া চিকিৎসকরা তাঁদের অভিযোগে আরও বলেন, ‘উত্তরবঙ্গ লবির’ চিকিৎসক ডাঃ অভীক দে বর্ধমান মেডিকেলের সঙ্গে যুক্ত নন ।তা সত্ত্বেও এখানকার বেশ কয়েকজন জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে তিনি মিটিং করে যান। তিনি কিভাবে , কোন স্পর্ধায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজে আসেন ,সেই প্রশ্নও তুলেছেন আন্দোলনকারীরা।তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ডাঃ গৌরাঙ্গ প্রামাণিক বলেন,“অভীক দে বর্ধমান মেডিকেল কলেজের ভিতর কি ভাবে ঢোকেন।কি অধিকারে তার এখানে আসা যাওয়া সেই প্রশ্ন তুলে তিনিও সরব হন।
আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের এদিন এও জানান, গত শুক্রবার যখন মেডিকেল কলেজে জিবি মিটিং চলছিল সেই সময় বহিরাগত ও পাশ আউট কিছু চিকিৎসক আন্দোলনকারীদের আন্দোলন বন্ধ করার জন্য আজেবাজে মন্তব্য করতে শুরু করে। শুধু তাই নয় আন্দোলনকারীদের হস্টেল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি ছাড়াও পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না বা রেজিস্ট্রেশন করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেয়।যদিও আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন ,’তারা কোনভাবেই আন্দোলন থেকে সরে যাবেন না। তাদের ভয় দেখিয়ে আটকে রাখা যাবে না।
উত্তরবঙ্গ লবির ডাঃ অভীক দে বহিরাগত হয়েও বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কতটা আধিপত্য কায়েম করেছিলেন তার নানা কাহিনিও ফাঁস করেছেন আন্দোলনকারীরা । তাঁদের কথায় ডাক্তার অভীক দের ’আইবুড়ো ভাতের ’অনুষ্ঠান করা হয়েছিল বর্ধমান মেডিকেল কলেজের ক্যাম্পাসের গেস্ট হাউসে। শুধু তাই নয় ডাঃ অভীক দের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় মেডিকেল কলেজের গেস্ট হাউসের একটি রুমে। সেই অনুষ্ঠানে খোদ মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল ডাঃ মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায়, এম এস ভি পি তথা বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার ডা: তাপস ঘোষ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি স্বরাজ ঘোষ উপস্থিত ছিলেন। সরকারি জায়গায় একজন বহিরাগতর আই বুড়ো ভাতের অনুষ্ঠান এইভাবে কি করে করা যায় সেই প্রশ্ন তুলেছেন মেডিকেল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। তাদের অভিযোগ,এইভাবেই দিনের পর দিন নিজের প্রভাব খাটিয়ে যা খুশি তাই ডাঃ অভীক দে করে গিয়েছেন।।