এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৬ জুন : আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দিরে বুলডোজার চালিয়ে ভেঙে দেওয়া করিয়েছে মহম্মদ ইউনূস । এমনকি দেবদেবীর মুর্তি পর্যন্ত বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে । এক দৃশ্য দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ । ঢাকার দুর্গামন্দিরে বুলডোজার চালানোর তীব্র নিন্দা করেছেন এরাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি মন্দিরে বুলডোজার চালানোর মুহুর্তের ভিডিও এক্সে শেয়ার করে লিখেছেন,’বাংলাদেশের ইউনুস সরকারের আমলে গত কয়মাস ধরে সেখানকার হিন্দুদের উপর অমানবিক নির্যাতন চলছে, যা এখনো থামার কোনো নাম নেই। প্রায় তিন শতাধিক হিন্দু মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে বেশ কয়টি আবার অতি প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী মন্দির। এবার সেখানে নতুন সংযোজন ঢাকার খিলক্ষেতের সার্বজনীন দুর্গা এবং কালী মন্দির। মহাপ্রভু শ্রীশ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার আগেই আজ সরকারি ভাবে কোনো নোটিশ ছাড়াই খিলক্ষেতের দুর্গা ও কালী মন্দির ভাঙচুরের সাথে সাথে দেবদেবীর প্রতিমাগুলিও ভাঙচুর করা হয়েছে। স্থানীয় হিন্দুরা বাধা দেবার চেষ্টা করলে তাদের উপর বলপ্রয়োগ করা হয়। উগ্র মৌলবাদের সমর্থক বাংলাদেশের বর্তমান ইউনুস সরকারের প্ররোচনায় হিন্দুরা যেভাবে সেখানে অত্যাচারিত হচ্ছেন তাতে আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশে হিন্দুদের অস্থিত্ব থাকবে না ।’
তিনি অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশের মতই পশ্চিমবঙ্গেও ‘হিন্দুদের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছে’ । তিনি লিখেছেন,’পশ্চিমবঙ্গেও মমতা ব্যানার্জীর তোষনের রাজনীতির ফলে দিকে দিকে বাংলাদেশের মতো হিন্দুদের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দুদের উপর অত্যাচার, মন্দির, প্রতিমা ভাঙচুর করা হচ্ছে।’
তিনি লিখেছেন,’দিন তিন চারেক আগে, নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের দূত । সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী নাকি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসকে শুভেচ্ছাও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তা এই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি বাংলাদেশী হিন্দুদের স্বার্থে একটা শব্দ খরচ করেছিলেন, নাকি আর কত বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করানো যায় সেই বিষয়ে চর্চা হয়েছিল? আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে কিভাবে জেহাদীদের তাতিয়ে দেওয়া যায়, কি ভাবে আরোও মন্দির, দেব-দেবীর মূর্তির ওপর হামলা চালানো যায়, হিন্দুদের কোণঠাসা করা যায়, সেই আলোচনা হয়েছিলো? কারণ এতদিন চরমপন্থীরা হামলা চালাতো, এই বৈঠকের পর একেবারে বাংলাদেশের সরকার মাঠে নেমে পড়েছে মন্দির ভাঙতে ! এখনই রাজ্যের হিন্দুরা ঐক্যবদ্ধ না হলে এরাজ্য ও বাংলাদেশ হতে বেশী দেরী নেই। কারণ ইউনুস আর মমতা একই কয়েনের এপিঠ আর ওপিঠ।জাগো হিন্দু জাগো !’
প্রসঙ্গত,ঢাকার খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দিরটি ছিল করগেট দিয়ে নির্মিত । দীর্ঘ অর্ধ শতাব্দীর অধিক সময় ধরে সেখানে প্রতি বছর শারদ্যোৎসব পালন হয়ে আসছিল । ছিল দেবী কালির স্বায়ী প্রতিমাও । নিয়মিত দেবীর নিত্যসেবা হয়ে আসছে । স্থানীয় হিন্দুদের আবেগের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এই জরাজীর্ণ মন্দিরটি । কিন্তু গত ২৪ জুন রাতে খিলক্ষেত বাজারের ইসলামিয়া সুইট এন্ড লাইভ বেকারির কর্ণধার মুফতি মাহমুদুল হাসান ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন খিলখেত থানার সভাপতি আব্দুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে মন্দিরে হামলা চালায় মুসলিম জনতা । ভাঙচুরের চেষ্টার পাশাপাশি তারা মন্দির ভেঙে ফেলার জন্য পরের দিন দুপুর ১২ টা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়ে যায় । মন্দিরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করার চেষ্টা করে এবং উপস্থিত ভক্তদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দেয়। অবশেষে আজ সকালে রাষ্ট্রীয়ভাবে ভেঙে দেওয়া হল ওই মন্দিরটি ।।