এইদিন ওয়েবডেস্ক,দারভাঙ্গা,৩১ মার্চ : বিহারের দারভাঙ্গায় নবরাত্রির প্রথম দিনেই হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে । স্থানীয় মুসলিমরা মহম্মদ আলাউদ্দিন নামে এক ব্যক্তির নির্মিয়মান বাড়িতে জড়ো হয়ে শোভাযাত্রায় পাথর ছুঁড়ে মারে, যাতে অনেক মানুষ আহত হয়। পাথরবাজির ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে। এটি সেই একই জায়গা যেখানে হোলির দিনে হিন্দুদের উপর আক্রমণ করা হয়েছিল। যদিও পুলিশ এবং গ্রামবাসীদের মধ্যে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি তখন সমাধান করা হয়েছিল । কিন্তু নবরাত্রির প্রথম দিনে পাথর ছোঁড়ার পর পুরো এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে এবং তিনটি থানার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, কুশেশ্বরস্থান থানা এলাকার কেভাতগামা পঞ্চায়েতে কলশ শোভা যাত্রা শেষে দুর্গা মন্দির থেকে ফিরে আসা ভক্তদের উপর হঠাৎ পাথর বর্ষণ শুরু করে মুসলিমরা । এই আক্রমণ এতটাই হিংসাত্মক ছিল যে মহিলা এবং শিশুরা চিৎকার করে এদিক ওদিক ছুটাছুটি করতে শুরু করে । হিন্দুদের অভিযোগ, কলশ যাত্রায় হামলা চালানোর জন্য আগে থেকেই মহম্মদ আলাউদ্দিন নামে এক ব্যক্তির নির্মিয়মান বাড়িতে জড়ো হয়ে অপেক্ষা করছিল মুসলিমরা ।
রবিবার (২০ মার্চ, ২০২৫) বিকেল ৪:৩০ টার দিকে এই হামলার ঘটনাটি ঘটে। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, পাছিয়ারি রাহি গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের বাড়ির ছাদে মুসলিমরা জড়ো হয়েছিল। মিছিলটি পাশ দিয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই এই লোকেরা পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। হঠাৎ উপর থেকে বড় বড় ইঁট ও পাথর পড়তে শুরু করে, যার কারণে নীচে হেঁটে যাওয়া ভক্তরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কিছু মহিলা বলেছিলেন যে নিজেদের বাচ্চাদের বাঁচাতে তারা রাস্তায় শুয়ে পড়েছিলেন যাতে পাথরের আঘাতে তাদের কোনও ক্ষতি না হয়। হামলার ফলে অনেকেই সামান্য আহতও হয়েছেন।
এদিকে পাথর ছোঁড়ার খবর পাওয়ার সাথে সাথেই কুশেশ্বরস্থান, তিলকেশ্বর এবং বিরাউল থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী গ্রামে পৌঁছায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও গ্রামের পরিবেশ এখনও উত্তেজনাপূর্ণ । মানুষ তাদের বাড়িতে থাকতেও ভয় পাচ্ছে এবং বাইরে বের হতে দ্বিধা করছে। পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান অলোক কুমার ওরফে বিকাশ কুমার বলেন,’এই ধরনের ঘটনা গ্রামের ঐক্য ভেঙে দিচ্ছে।’
কুশেশ্বরস্থান থানার ইনচার্জ রাকেশ কুমার সিং বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে এবং গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’ এসএসপি জগুনাথ রেড্ডিও আশ্বস্ত করেছেন যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং কারও চিন্তার কোনও কারণ নেই। কিন্তু গ্রামবাসীরা বলে যে এই শান্তি ক্ষনিকের; মানুষের মধ্যে ভয় এবং রাগ এখনও ভেতরে ভেতরে রয়ে গেছে।
খবর অনুসারে,সপ্তাহ দুয়েক আগে হোলির দিনেও একই রকম ঘটনা ঘটেছিল। সেদিন, মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু লোক গ্রামে হোলি খেলতে থাকা যুবকদের উপর আক্রমণ করে। প্রথমে সামান্য তর্ক-বিতর্ক হয়, কিন্তু পরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় এবং লাঠিসোঁটা সহ পাথর ছোঁড়া শুরু হয়। অনেক যুবক আহত হয় এবং গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সেই সময়, পুলিশ উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে এবং তাদের পিআর বন্ড পূরণ করে বিষয়টি সমাধান করে। গ্রামবাসীরা আশা করেছিল যে এখন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে, কিন্তু রবিবার আবার পাথর ছোঁড়ার ঘটনাটি পুরনো ক্ষতগুলিকে আবার নতুন করে ফুটিয়ে তুলেছে।।

