প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৫ জানুয়ারি : সরস্বতী পুজোর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিকভাবে জড়িয়ে রয়েছে সাবেকি হাতে খড়ি প্রথা। অর্থাৎ প্রথম লিখতে শেখার পাঠ।বাঙালি তথা হিন্দুধর্মালম্বীরা দেবী সরস্বতীর সামনে তাঁর শিশু সন্তানের হাত স্লেট ও চক খড়ি ধরিয়ে দিয়ে প্রথম মাতৃভাষায় আক্ষর লেখা শেখান।কারণ তাঁরা মনে করেন,দেবী সরস্বতীর পুজো করে তাঁকে সাক্ষী রেখে শিশু সন্তানের হাতেখড়ি দিলে সন্তান বিদ্বান৷ হবে। তাই হাতেখড়ির মধ্যদিয়েই সন্তানের লেখা পড়া শেখার শুভারম্ভ হয় । সাবেক কাল থেকে বাঙালির ঘরে ঘরে চলে আসছে এই প্রথা।বর্তমানেও এই প্রথা চালু রয়েছে,তবে তাতে লেগেছে ডিজিটালাইজেশনের ছোঁওয়া ।
পাথরের স্লেট আর চক খড়ি এখনকার ডিজিটাল যুগে যেন অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। বাঙালি ঘরের শিশুদের হাতে খড়ির জন্য পাথরের স্লেটের পরিবর্তে এখন ডিজিটাল শ্লেটই যেন পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।তাই সরস্বতী পূজোর প্রাক্কালে পূর্ব বর্ধমান জেলার বাজার গুলিতেও ডিজিটাল স্লেটের চাহিদাই তুঙ্গে । কাঠের কাঠামো লাগানো কালো পাথরের তৈরি স্লেট বুধবার যেন কদরই পেলনা । সবই বাজারে ঘুরে ঘুরে খুঁজছেন ডিজিটাল স্লেট । বিষয়টা এমন যেন,ডিজিটাল যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সন্তানের হাতে খড়িও মা বাবারা ডিজিটাল স্লেটেই করানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। সন্তানের মা বাবার এই অভিপ্রায়ের কথা বুঝতে পেরে জেলার মেমারির ব্যবসায়ীরারও দোকানে ডিজিটাল স্লেট বিক্রিতেই জোর দিয়ে বসেছেন । বিক্রিও ভালই হচ্ছে ।
মেমারির পাল্লারোড এলাকার ব্যবসায়ী পিকু ঘোষ জানান ,’এখন ডিজিটাল স্লেট ভালই বিক্রী হচ্ছে। ডিজিটাল স্লেটর সাথেই মিলছে ডিজিটাল পেন্সিল। ডিজিটাল স্লেটে লেখার পর তাতেথাকা সুইচ টিপলে লেখা মুছেও যাচ্ছে। পাথরের স্লেটের চাইতে ডিজিটাল স্লেটের দাম কম, ব্যবহার করতেও সুবিধা ।এইসবের জন্যই মা বাবারা তাঁদের সন্তানের হাতেখড়ি দেবার জন্য দোকানে এসে ডিজিটাল স্লেটই চাইছেন ।’
জনৈক শিশুর পিতা মৃণালকান্তি কোলে জানান,
তিনি তাঁর ছোট ছেলের জন্য একটা ডিজিটাল স্লেট কিনেছেন। মেয়ের জন্যেও এদিন একটা ডিজিটাল স্লেট কিনেছেন। তাঁর মতে ডিজিটাল স্লেট হাত থেকে কোনভাবে মাটিতে পড়ে গেলেও ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা কম।শিশুদের মধ্যেও ডিজিটাল স্লেটে আকর্ষণ বাড়ছে ।সন্তানের হাতে খড়ি পাথরের স্লেট আর চক খড়ি দিয়ে হোক , কিংবা ডিজিটাল স্লেটে হোক ,দেবীর আশীর্বাদে সন্তান বিদ্বান হওয়াটাই সব বাবা মায়ের কাছে মূল কাম্য বলে মৃণালকান্তি বাবু মন্তব্য করেছেন ।।