এইদিন ওয়েবডেস্ক,লখনউ,১১ অক্টোবর : উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের নীলমাথায় মন্দিরে স্থাপিত মা দুর্গার পাথরের মূর্তি ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মেশিন দিয়ে মায়ের চার হাত কেটে ফেলা হয়। এই খবর পাওয়া মাত্রই মন্দিরে ভিড় জমান বহু মানুষ । হিন্দুদের জনগণের ক্ষোভ দেখে সেখানে ভারী পুলিশ মোতায়েন করেছে । পুলিশ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করছে। জানা গেছে, ক্যান্ট থানা এলাকার নীলমাথার মারি মাতা মন্দিরে মা দুর্গার প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে ৷ বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকালে, মন্দিরের পুরোহিতরা যখন পূজার জন্য পৌঁছান, তারা দেখেন যে প্রতিমার হাত কেটে ফেলা হয়েছে। গ্ল্যাডার মেশিন দিয়ে মূর্তির চার হাত কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এরপর পুরোহিত ঘটনাটি স্থানীয় লোকজনকে জানান। খবর পেয়ে সেখানে ভিড় জমে যায় । দেবীমায়ের মূর্তিকে ওই অবস্থায় দেখে হিন্দুরা চরম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করতে পুলিশ চার দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেয়। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন লখনউয়ের পরিবেশ নষ্ট করতে লাগাতার এই ধরনের কাজ করছে । টানা দ্বিতীয় দিনের মতো হিন্দুদের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করা হয়েছে।
নীলমাথা মন্দিরের ঘটনার বিষয়ে, ক্যান্ট থানার ইনচার্জ গুরপ্রীত কৌর বলেছেন যে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছিল, তবে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক। কৌর বলেছেন যে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত করা হচ্ছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। এডিসিপি ইস্ট পঙ্কজ সিং জানিয়েছেন, নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টাকারীরা মাতার মূর্তি ভেঙে দিয়েছে। রীতি অনুযায়ী মন্দিরে দ্বিতীয় মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানান তিনি। অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুব শিগগিরই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে তিনি জানান ।
এর আগে লখনউয়ের বাজারখালায় মন্দিরের বাইরে এক মুসলিম জিহাদি মহিলা মাংসের টুকরো ফেলে দিচ্ছে। তারপর মন্দিরে প্রতিমার হাত কেটে ফেলা হল বলে তারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ।
উল্লেখ্য,বুধবার (৯ অক্টোবর) শহরের বাজার খলা থানা এলাকায় অবস্থিত একটি মন্দিরের বাইরে মাংসের টুকরো পড়ে থাকতে দেখা যায়। বিষয়টি জানাজানি হতেই তোলপাড় শুরু হয়। পুলিশের তদন্তে জানতে পেরেছে, একটি কুকুর মাংসের টুকরো নিয়ে এসেছে। এই ঘটনায় আলিমা নামে এক মুসলিম নারীকে আটক করা হয়েছে। জানা যায়, ওই এলাকায় বসবাসরত আলীমা নামের এক মুসলিম মহিলা মাংসের দোকান থেকে মাংস এনে কুকুরকে খাওয়াতেন। নবরাত্রির সময়ও তিনি এই কাজ চালিয়ে যান। অবশেষে পুলিশ মহিলার বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করে এবং তাকে গ্রেপ্তার করে।
লখনউ ছাড়াও গোন্ডায়ও পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মহাসপ্তমীর দিন গভীর রাতে, গোন্ডার ছাপিয়া থানা এলাকার অন্তর্গত মাসকানওয়া বাজারে দুর্গাপূজা প্যান্ডেলে ইট-পাথর নিক্ষেপ করে স্থানীয় মুসলিমরা । দুর্গাপূজায় আতশবাজি দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে দুষ্কৃতীরা পাথর ছুড়েছে বলে জানা গেছে । এর জেরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান গোন্ডার ডিএম ও এসপি। তিনি কোনোমতে হিন্দুদের বুঝিয়ে শান্ত করেন। এ ঘটনায় চাপিয়া থানায় গুরুতর ধারায় ডজনেরও বেশি ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সেই সঙ্গে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সোমবার (৭ অক্টোবর) কুশীনগরে দুর্গা প্রতিমা প্রতিষ্ঠার শোভাযাত্রা বের হয়। মিছিলে মাতা রানীর স্তোত্র বাজানো নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর মিছিলে বিপুল সংখ্যক মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ পাথর ছুড়তে থাকে। পালটা হিন্দুরাও উত্তর দেয় । হিন্দু পক্ষের লোকজনের অভিযোগ ছিল, মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন মাতা রানীর মূর্তির মধ্যে নির্মিত সিংহের ক্ষতি করেছে মুসলিমরা । এ ঘটনার খবর পেয়ে পদরুনা থানা এলাকায় এএসপি সিওসহ বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর অনেককে গ্রেফতারও করা হয়েছে বলে জানা গেছে ।।