এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১০ ফেব্রুয়ারী : আজ সোমবার বাঘের হামলায় গুরুতর জখম হয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার কুলতলির মৈপিঠের বোসেরঘেড়ি এলাকার অস্থায়ী বনকর্মী গণেশ শ্যামল । বাড়ি সুন্দরবন কোস্টাল থানার অন্তর্গত মধ্য গুড়গুড়িয়া এলাকায় । বাঘের হামলার পর তাকে গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে জামতলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, তারপর বারুইপুর সাব ডিভিশনাল হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছিল । কিন্তু শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সন্ধ্যার দিকে গণেশকে এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে ভর্তি করা হয় । তার মাথা ও বাম হাতে গুরুতর জখম রয়েছে । ডান হাতেও অল্প জখমের পাশাপাশি শরীরের একাধিক জায়গায় গুরুতর আঘাত লেগেছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। ।
জানা গেছে, রবিবার রাতে নদী পেরিয়ে একটা বাঘ ঢুকে পড়েছিল মৈপিঠের বোসেরঘেড়ি এলাকায় । রাতেই গ্রামের একাংশ লোহার জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয় । বাঘটিকে এলাকা ছাড়া করতে পাঠানো হয়েছিল বনদপ্তরের ৩২ জন সদস্যের কুইক রেসপন্স টিম । তাদের হাতে ছিল শুধু ছিল একটা করে লাঠি । কিন্তু সকাল হওয়ার আগেই বাঘটি অবস্থান বদল করে । কুইক রেসপন্স টিমের কাছে সকালে খবর আসে যে একজন বৃদ্ধ বাঘটির মুখে পড়ে একটা ছোট গাছের উপর উঠে বসে আছেন । তাকে বাঁচাতে লাঠি হাতেই ছোটে ওই দলটি । সেখানে যাওয়ার পর বৃদ্ধকে বাঁচাতে লাঠি হাতেই বাঘের দিকে তেড়ে যান গণেশ শ্যামল।আর তখনই বাঘটি তার উপর মারাত্মক হামলা চালিয়ে দেয় ।
এমতবস্থায় ঘুমপাড়ানি বন্দুক ছাড়া কেন কুইক রেসপন্স টিমকে একটা ক্ষুধার্ত, হিংস্র বাঘের মুখে ঠেলে দেওয়া হল ? এনিয়ে বন দপ্তরের কর্তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । আক্রান্ত গণেশ শ্যামলের দাদা মঙ্গল শ্যামল বলেন,’আমাদের হাতে শুধু একটা করে বাড়ি(ছোট লাঠি) ছিল ।’ কিন্তু ঘুম পাড়ানি বন্দুক কোথায় ? উত্তরে তিনি বলেন,’যতক্ষণ না ঘেরাও হচ্ছে ততক্ষণ ঘুম পাড়ানি বন্দুক দেবে না ।’ তিনি স্পষ্ট বলেন,’আমরা খুব ঝুঁকি নিয়ে কাজ করি ।’
জানা গেছে,বনদপ্তর মূলত স্থানীয় গ্রামবাসীদের নিয়ে কুইক রেসপন্স টিম গঠন করে । অস্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত ওই কর্মীদের দৈনিক ১ হাজার টাকা মজুরিতে কাজ করানো হয় । আক্রান্ত গণেশ শ্যামল ও তার দাদা মঙ্গল শ্যামল দু’জনেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বন বিভাগের কুইক রেসপন্স টিমের সদস্য । দু’জনেই বিবাহিত । গণেশের বাড়িতে রয়েছে স্ত্রী ও ৩ নাবালিকা কন্যাসন্তান । তার উপার্জনেই চলে চারজনের সংসার । এখন বাঘের আক্রমণে স্বামী যখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তখন তিন নাবালক সন্তানকে নিয়ে অতান্তরে পড়েছেন গণেশের স্ত্রী ।।