এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,৩০ অক্টোবর : রেশন দূর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু । ইডির জেরার মুখোমুখি হতে হয়েছে জ্যোতিপ্রিয় কন্যা প্রিয়দর্শিনী মল্লিককেও । রবিবার সকালে একাধিক নথি নিয়ে তিনি সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির দপ্তরে হাজির হন । রেশন দুর্নীতির তদন্তে ইডির র্যাডারে চলে এসেছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাদা দেবপ্রিয় মল্লিকও । আজ সোমবার সকাল ১০ টায় দেবপ্রিয় মল্লিককে সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করা হয়েছে বলে খবর । নির্ধারিত সময়ের আগেই তিনি ইডির দপ্তর সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছেও যান ।
এদিকে রেশন দূর্নীতি মামলায় রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের উদ্দেশ্যে একের পর এক কটাক্ষ ছুড়ে দিচ্ছে রাজ্যের প্রধান বিরোধীদল বিজেপি । শুভেন্দু অধিকারী মন্তব্য করেছেন,’বালুর হস্ত করে সমস্ত রাজ্যবাসীর রেশন চুরি।’
এদিন নিজের ফেসবুক পেজে একটা বড়সড় পোস্ট করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি লিখেছেন,’পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হয়, ভবিষ্যতে পরীক্ষা’র খাতায় এই ধরনের প্রশ্নোত্তর দেখা যেতে পারে:-
প্রশ্ন) ভাবসম্প্রসারণ করো –
এ জগতে, হায়, সেই বেশি চায়, আছে যার ভূরি ভূরি;
বালুর হস্ত করে সমস্ত রাজ্যবাসীর রেশন চুরি।
উত্তর) মূলভাব –
বালুর সম্পদের প্রাচুর্য আছে, তাই সে চায় তার সম্পদের পরিমাণ আরও বাড়াতে। এতে সে নীতি নৈতিকতা বিসর্জন দিতেও কুন্ঠাবোধ করে না।
সম্প্রসারিত ভাব :-
পশ্চিমবঙ্গে তোলামূল নেতাদের বে-আইনী অর্থের তৃষ্ণা কখনাে মিটে না। চুরি করে বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েও তাদের বে-আইনী অর্থ স্পৃহার অবসান হয় না। তাদের ‘যত পাই, তত চাই’ অবস্থা। তারা সম্পদ বাড়ানাের নেশায় দুর্দমনীয় হয়ে ওঠে। ভালাে-মন্দ, হিত-অহিত, সত্য-মিথ্যা, নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে নিজেদের নামে, আত্মীয় স্বজনদের নামে, “বান্ধবীদের” নামে কেবলই ধন-সম্পদ, সোনা হীরা, ফ্ল্যাট, খামার বাড়ি ইত্যাদি আহরণ করতে থাকে। ঐশ্বর্য ভান্ডার বৃদ্ধি করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য হয়ে ওঠে। গরু পাচার, কয়লা পাচার, খাদান থেকে বালি-পাথর পাচার করেই ক্ষান্ত হয় না এরা; গরিব দরিদ্রদের বঞ্চিত করতে চিট ফান্ড কেলেঙ্কারিতে যুক্ত হওয়া, মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের অন্যায়ভাবে সরকারী চাকরী থেকে বঞ্চিত করে টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের চাকরি বিক্রি করে দেওয়া ও সাধারণ গরিব মানুষের রেশন এবং মিড ডে মিল পাওয়া শিশুদের খাদ্য শস্য চুরি করা থেকেও এরা বিরত থাকতে পারে না।
অন্যের সম্পদ করায়ত্ত করতেও তারা দ্বিধাবােধ করে না, তা সে কালীঘাটের ৩৫ টা জমির প্লট হোক অথবা বীরভূমের জনৈক ব্যবসায়ীর চাল-কল কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য করা হোক কিংবা গাড়ি হাতিয়ে নেওয়া হোক।
ফলে বিত্তশালী মন্ত্রী আমলা ও ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীর সীমাহীন লােভ এবং অন্তহীন চাওয়ার কাছে কোটি কোটি দরিদ্র মানুষের অধিকার কে হেরে যেতে হয়। পক্ষান্তরে, এই রাজ্যে কাজের অভাবে দীন-দুঃখীদের ভীন রাজ্যে পাড়ি দিতে হয় দু’মুঠো অন্ন জোগাড় করার পাশাপাশি আর একটু বেশি আয় করার লক্ষ্যে, যারা কোনো কারণে যেতে পারে না, তাদের একটা বড় সম্বল হল রেশনের খাদ্যশস্য। সেটাও লুঠ করে নিচ্ছে বালুর মত তোলামূলী নেতারা ।’
শুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশি বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা দিলীপ ঘোষ লিখেছেন,’মুখ্যমন্ত্রীর প্রাণের ভাই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক(বালু) সভা করে বলেছিল, আমার ঠ্যাং ভেঙে দেওয়া হবে । দিলীপ ঘোষ এখনো দু’পায়ে দাঁড়িয়ে আছে । তিনি আজ কোথায়? আর তার দিদি কিন্তু একপায়ে হাঁটছে ।’।