এইদিন ওয়েবডেস্ক,দক্ষিণ ২৪ পরগণা,০৭ মার্চ : বাংলাদেশ নয়,খাস পশ্চিমবঙ্গে দেবদেবী মুর্তি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে । দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বারুইপুর রামনগরে শীতলা মায়ের মূর্তি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে । বিজেপি বিধায়িকা অগ্নিমিত্রা পালের দাবি,আত্রাক মোল্লা নামে একজন জিহাদি এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে । এনিয়ে তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আবার হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি ভাঙা হলো এই রাজ্যে। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের বারুইপুর পূর্ব বিধানসভা রামনগর গ্রামে ভোরে একটি বড় দল এসে মা কালী মন্দির ভাঙচুর করে। স্থানীয় দুই সাহসী ব্যক্তি আত্রক মোল্লা নামে একজন দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে। দুষ্কৃতী কে বাঁচাতে সক্রিয় পুলিশ। এখন স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছে বারুইপুর থানা ৷’ ঘটনার প্রতিবাদে বারুইপুর থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন অগ্নিমিত্রা পাল । সেই ভিডিও শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ‘বারুইপুর রামনগরে শীতলা মায়ের মূর্তি ভাঙ্গার প্রতিবাদে, এবং বারুইপুর পূর্ব বিধানসভার বিধায়ক বিভাস সর্দার এর নির্দেশে বিজেপির মুখপাত্র রাজস্বী লাহিড়ী উপর আক্রমণের প্রতিবাদে বারুইপুর থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভে উপস্থিত আছি ।’

এদিকে মুর্তি ভাঙচুরের পর ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে রামনগর গ্রামে৷ প্রচুর সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত হয় ঘটনাস্থলে । পুলিশকে ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসী । সেই ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করেছেন অভীক বৈরাগ্য সাহা নামে একজন ব্যবহারকারী । অগ্নিমিত্রা পালের মতই একই দাবি করেছেন তিনি । এই ঘটনায় বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে । তার মধ্যে একটা ভিডিওতে একজন অভিযুক্তকে খুঁটিতে বেঁধে রাখতে দেখা গেছে৷ একজন পুলিশ কর্মী তাকে উদ্ধার করতে গেলে জনৈক এক মহিলাকে বলতে শোনা যায়, ‘ওকে খুলছেন কেন? প্রোটেশন দিচ্ছেন আপনার ?’ এই ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ঘটনার দায় জনৈক এক বিজেপি বিজেপি কর্মীর উপর চাপানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠছে৷ একজন তৃণমূল নেতাকে একটা ভিডিওতে পুলিশের উদ্দেশ্যে বলতে শোনা যায়, ‘কাউকে গ্রামে ঢুকতে দেবেন না৷ এটা নিয়ে ওরা রাজনীতি করছে ।’
রাস্তায় বসে বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় অগ্নিমিত্রা পাল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন,’বৃহস্পতিবার রামনগর-২ পঞ্চায়েতের শীতলা মায়ের মূর্তি ভাঙচুর ও আগুন লাগানো হয়েছে৷ অবাক ব্যাপার হলো যে যারা ভাঙচুর করতে এসেছিল তাদের মধ্যে একজনকে গ্রামের মানুষ ধরে ফেলে । অনেকক্ষণ বাদে যখন পুলিশ আসে তখন সেই দুষ্কৃতিকে গ্রামের মানুষের হাত থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে যায় । তাকে কোথায় রাখা হয়েছে আমরা কেউ কিছু জানি না । সেই দুষ্কৃতির নাম আত্রাক মোল্লা । তার ভাষা শুনে মনে হচ্ছে সে আমাদের দেশের লোক নয়, বাংলাদেশ থেকে এসেছে৷ কারণ বাংলাদেশের ভাষার মতো তার ভাষা ছিল৷ সে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী ।’ তিনি বলেন,’এখানকার যে বিধায়ক সে গ্রামের মানুষকে গিয়ে হুমকি দিচ্ছে ‘তোমরা এটা করিয়েছো । তোমরাই মন্দির ভেঙেছ তোমরাই মন্দিরে আগুন লাগিয়েছো । তোমরা এখানে রাজনীতি করার চেষ্টা করছো । তোমাদের আমরা দেখে নেব ।’ অগ্নিমিত্রা পাল বলেন,’আমাদের প্যানেলিস্ট এবং রাজ্যের নেতা রাজশ্রী লাহিড়ীকে তৃণমূল বিধায়কের গুন্ডা চোখে ঘুষি মারে । তার ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে । আপনাদের সংবাদ মাধ্যমেরও ফোন কেড়ে নেওয়ারও চেষ্টা হয় ।’
তিনি বলেন,’আমার প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে, যে তুষ্টিকরণের আর কত দূরে যাবেন ? দূর্গা পূজার সময় দুর্গা পুজো করতে দেবেন না । লক্ষী পূজোর সময় ফলতাতে মা লক্ষ্মীর মুখ ভেঙ্গে দেওয়া হচ্ছে । মুর্শিদাবাদের কার্তিক পুজো করতে দেবেন না । মুখ্যমন্ত্রীর কলেজে সরস্বতী পুজো পুলিশ পাহারায় করতে হবে এবং আদালত থেকে অনুমতি আনতে হবে । এই তুষ্টিকরের রাজনীতিতে তো আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে । আমরা তো বাংলাদেশে আছি ।’ তিনি বলেন,’ভাবতে পারেন পাকিস্তান আফগানিস্তান বাংলাদেশ মসজিদ ভাঙ্গা হলো এবং এবং ভাঙচুর কারীকে পুলিশ আড়াল করে দিয়ে যাচ্ছে ? হতে পারে কখন এটা ? একমাত্র পশ্চিমবঙ্গে সেটা হয়।’ অগ্নিমিত্রা পালের অভিযোগ,স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক বিভাস সরকার জিহাদীদের গ্রেফতার করার পরামর্শ না দিয়ে উল্টে গ্রামবাসীদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন । সমগ্র ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়িকা ।।