এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৬ নভেম্বর : কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে যে নতুন নিয়োগে কোনোভাবেই সুযোগ দেওয়া যাবে না । কিন্তু রাজ্য সরকার যথারীতি আদালতের সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে চলেছে বলে অভিযোগ উঠছে ৷ শনিবার সন্ধেয় একাদশ-দ্বাদশের নতুন নিয়োগের প্যানেলের ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশিত হতেই তালিকায় থাকা একটা নাম ঘিরে তোলপাড় পড়ে গেছে রাজ্য রাজনীতিতে । রাজ্য বিজেপির যুবমোর্চার সহ-সভাপতি ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে প্রকাশিত ওই তালিকার ১৪ নম্বরের নাম সামনে এনে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন । নীতীশ রঞ্জন বর্মণ নামে ওই চাকরিপ্রার্থীকে তিনি অযোগ্য বলে চিহ্নিত করেছেন ।
তরুনজ্যোতি তিওয়ারি লিখেছেন,’SSC দুর্নীতি কে কেন্দ্র করে নতুন বিস্ফোরক তথ্য । কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই একাধিক নিয়োগ বাতিল করেছে এবং স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে যে SSC-কে চিহ্নিত চাকরি-চোরদের সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। আদালত একাধিকবার সতর্ক করে বলেছে—“যদি সেই দুর্নীতিগ্রস্ত প্রার্থীদের একজনও কোনোভাবে আবার পরীক্ষায় বসে, নম্বর পায় বা সুযোগ পায়, তাহলে তার পরিণতি শুভ হবে না।”
তারপরও চোরে না শুনে ধর্মের কথা—যেমন ডাকাত নিজের স্বভাব বদলায় না, তেমনি SSC এবং রাজ্য সরকারও সে পথে হাঁটছে। ঘটনার মূল কেন্দ্রবিন্দু: নীতিশ রঞ্জন বর্মন । একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। পরিচিত কয়েকজনের মাধ্যমে একটি নাম পাওয়া গেছে—নীতিশ রঞ্জন বর্মন। তার নাম আগের “চোরেদের লিস্টে” ছিল—যা আদালতের নির্দেশে পাবলিশ করা হয়েছিল। (দ্বিতীয় ছবি দেখবেন)
তিনি লিখেছেন,অবাক করার মতো বিষয়, গতকাল প্রকাশ পাওয়া নতুন লিস্টেও তার নাম রয়েছে। (তৃতীয় ছবি দেখবেন)। এবার আবার সে অভিজ্ঞতার নম্বরে ভর করে ইন্টারভিউর ডাক পেয়েছে। ক্যাটাগরি হিসেবে PH (Persons with Disabilities) দেখানো হয়েছে।
বাড়ির লোক অন্যরকম তথ্য দিয়েছে, যা এই ঘটনার সত্যতা নিয়ে আরও সন্দেহ তৈরি করছে।এখন প্রশ্ন—
এরা যদি দুই ভিন্ন ব্যক্তি হয়, তাহলে কমিশন সেটা স্পষ্ট করে জানাবে। আর যদি একই ব্যক্তি হয়, তবে SSC-কে অবিলম্বে দায় স্বীকার করতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো—যে কমিশন আদালতের রায় মানেনি, যে সরকার স্বচ্ছতার বদলে দুর্নীতিকে ঢাকতে ব্যস্ত,
তরুনজ্যোতির কথায়,তাদের থেকে সৎ উত্তরের আশা করাই বৃথা।যেমন চোর হাজার বোঝালেও নিজেদের স্বভাব বদলায় না, তেমনি SSC এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার—দুর্নীতির নেশায় এতটাই অন্ধ যে, তারা চিরদিনই ভুল কাজ করবে।দুর্নীতি-চিহ্নিত ব্যক্তিও আবার ডাক পাচ্ছে—এটাই প্রমাণ করে যে নিয়োগব্যবস্থা এখনো একই নোংরা পথে চলছে।’
জানা গেছে,অযোগ্য হয়েও চাকরির পরীক্ষায় বসার অভিযোগ করেছেন খোদ নীতীশ রঞ্জন বর্মণের স্ত্রী । আসলে, অতিরিক্ত পনের দাবিতে স্ত্রীকে অত্যাচার করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নীতীশের বিরুদ্ধে । মাস ছয়েক ধরে তিনি বাপের বাড়িতেই আছেন । সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের এসএসসির গোটা প্যানেল বাতিল করে দিলে চাকরি হারাতে হয় নীতীশ রঞ্জন বর্মণকে । দাগিদের তালিকায় তার নাম ছিল বলে অভিযোগ নীতীশের স্ত্রীর । তারপরেও কিভাবে তিনি পরীক্ষা দিলেন এবং ইন্টারভিউ তালিকায় তার নাম উঠল এনিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।।

