এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৯ মার্চ : মালদা জেলার মোথাবাড়িতে হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনায় ২০২৬ সালের বিধানসভার ভোটের আগে চাপে পড়ে গেছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস । বেছে বেছে হিন্দুদের দোকান ও ঘরবাড়ি নিশানা করার অভিযোগ উঠেছে । ইতিমধ্যে মোথাবাড়িতে হিন্দুদের উপর হামলার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে । বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে মুখও খুলছেন ক্ষতিগ্রস্তরা । তাদের অভিযোগ যে পাশের মুসলিম বাড়িগুলি অক্ষত রেখে দেওয়া হলেও হিন্দুদের বাড়ি ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়েছে । এনিয়ে এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ও এনআইএ-এর তদন্তের দাবিতে বিজেপির তরফে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে শুক্রবার কলকাতার শ্যামবাজারের সভায় জানিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । এবার তিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর একটা অভিযোগ তুললেন তিনি । শুভেন্দুর অভিযোগ, মোথাবাড়ির ঘটনা ধামাচাপা দিতে হাইকোর্টে ভুয়ো ভিডিও দেখিয়েছে রাজ্য সরকার।
এই বিষয়ে তিনি মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্স-এ লিখেছেন,’মালদা জেলার মোথাবাড়িতে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা ধামাচাপা দিতে রাজ্য সরকার নিজেদের আইনজীবীদের মাধ্যমে মহামান্য উচ্চ আদালত কে আজ বিভ্রান্ত করতে ভুয়ো ভিডিও দেখিয়েছে। দাবি করেছে যে পরিস্থিতি নাকি স্বাভাবিক রয়েছে।’ তিনি প্রশ্ন তুলেছেন,’পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিকই থাকে তবে উত্তপ্ত এলাকার অনেক দূরে ব্যারিকেড বসিয়ে সংবাদ মাধ্যম সহ বিরোধী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে কেন ? আজ মালদহ জেলার বিজেপির প্রতিনিধি দল মোথাবাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করলে কেন পুলিশ পথ আটকালো? কেন ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু দোকানদারদের ও তাদের পরিবারের পাশে থেকে তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করা ও তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে বাধা দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন? এলাকাতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ নং ধারা বলবৎ করা হয়েছে কেন? এমনকি ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।’ সবশেষে তিনি লিখেছেন,’এই সকল ঘটনা থেকেই প্রমাণ হয় যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত ও মমতা সরকার জেনে বুঝে রাষ্ট্রশক্তি প্রয়োগ করে আক্রান্ত হিন্দুদের বিচ্ছিন্ন করে রাখতে চাইছে যাতে সত্য প্রকাশিত না হয়ে যায়।’
শ্যামবাজারের সভায় শুভেন্দু অধিকারী শপথ করেন, ‘কথা দিয়ে গেলাম মোথাবাড়িও ঠান্ডা করব ।’ তার অভিযোগ যে রামনবমীর প্রস্তুতি যাত্রার কোনো শ্লোগানকে কেন্দ্র করে হিন্দুদের উপর মারাত্মক হামলা চালানো হয় । মাইকিং করে ধর্মীয় পতাকা নিয়ে মোথাবাড়ি বাজারের পঞ্চাশের বেশি হিন্দু দোকান বেছে বেছে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে । হামলার আগে ফেসবুক লাইভ করে বিকেল ৩ টের সময় হামলার জন্য লোকজনদের আসার আহ্বান জানানো হয় । দোকান ও গাড়ি ভাঙচুর রাত অব্দি চলে বলে অভিযোগ তার । যাদবসমাজের মানুষদের গাড়ি থেকে ছানা নামিয়ে মেরে রক্তাক্ত করা হয়েছে । অথচ পুলিশ হেলমেট লাগিয়ে, র্যাফের পোশাক পরে, গ্যাস, লাঠি এবং রাবার বুলেটের বন্দুক নিয়ে হামলাকারীদের হাত পা ধরছে ।
শুভেন্দু অধিকারীর কথায়,বলছে হিন্দু শূন্য করে দেবো । মোথাবাড়ির হিন্দুদের পালপাড়া ও চৌধুরীপাড়ায় মূলত এই হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ তার । তিনি আরও অভিযোগ তুলেছিলেন,তৃণমূলের রহিম বক্স এবং সাবিনা ইয়াসমিনের সঙ্গে পুলিশ যুক্তি করে কিছু গরীব মুসলিমকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে জেল খাটানোর জন্য । আর যারা গুন্ডা, দুষ্কৃতি, লুট করেছে শাসক দলের ভরসায় তাদের একজনারো পেশাগ্রহ স্পর্শ করেনি ।’।