এইদিন ওয়েবডেস্ক,আবুজা,১৬ জুলাই : ‘বাড়িতে অনাহারে থাকুন,অথবা সাভানার সবুজ বনে চাষ করতে গিয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি নিন’ : নাইজেরিয়ার মালভূমি রাজ্যের আদিবাসী খ্রিস্টান কৃষকরা এখন মুসলিম সন্ত্রাসীদের দেওয়া এই ভয়ঙ্কর পছন্দের মুখোমুখি হয়েছে । গত ১০ জুলাই মধ্য নাইজেরিয়ার মালভূমি রাজ্যের জোসের (Jos) ৩০ মাইল দক্ষিণ- পশ্চিমে বছর চল্লিশের দুই খ্রিস্টান মহিলা মাঠে চাষের কাজ করে সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ আগে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের শিকার । তাদের রিম(Rim) গ্রামের কাছে লম্বা গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসীরা গুলি করে তারা হত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় খ্রিস্টান নেতা তথা অ্যাটর্নি ডালিওপ সলোমন(Dalyop Solomon) । আগের দিন ওই গ্রাম থেকে ৫ মাইল দূরে ৮ খ্রিস্টানকে হত্যা করেছিল ইসলামি সন্ত্রাসবাদীরা । যারা ফুলানি নামে মুসলিম জাতিগোষ্ঠীর সদস্য । এদিকে একটি বিশাল সামরিক টাস্ক ফোর্স জোস রাজ্য জুড়ে অবস্থান করা সত্ত্বেও বারবার এই হামলা হওয়ায় খ্রিস্টানদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে । নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদীদের সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠছে । এনিয়ে জোসের রাস্তায় নেমে শত শত খ্রিস্টান মহিলা বিক্ষোভ দেখায় ।
আন্তর্জাতিক মনিটরিং গ্রুপ ইন্টারসোসাইটির মতে, চলতি বছরের ১৬ মে থেকে এই অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদীরা খ্রিস্টানদের নরসংহার চালাচ্ছে । হামলায় ৩৫০ জনেরও বেশি খ্রিস্টানের প্রাণ গেছে । প্রসঙ্গত, আফ্রিকার অন্যতম বৃহৎ উপজাতি হল ফুলানিরা । তারা গবাদি পশু পালনের দক্ষতার জন্য পরিচিত । নাইজেরিয়াতে ১০ মিলিয়ন ফুলানি জাতিগোষ্ঠীর উপস্থিতির দাবি করা হয় । সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বোকো হারাম নামে পরিচিত সন্ত্রাসী সংগঠনের চেয়ে তিনগুণ বেশি খ্রিস্টান হত্যার অভিযোগ রয়েছে ফুলানি সম্প্রদায়ের একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে । ইন্টারসোসাইটির রিপোর্ট অনুসারে, শুধুমাত্র চলতি বছরে ফুলানি জঙ্গিরা ২,৫০০ জনের বেশি নাইজেরিয়ান খ্রিস্টানকে হত্যা করেছে, যার মধ্যে অন্তত ৫০০ জন মালভূমি রাজ্য জোসে রয়েছে ।
মালভূমি রাজ্যের বিধায়ক বালা ফাওয়ানজে সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন,’মাঙ্গুতে হামলার উদ্দেশ্য মূলত জমি দখল এবং জাতিগত স্থানচ্যুতি ।’ তিনি ইসলামি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বৃদ্ধির জন্য সামরিক বাহিনীর উদাসীনতাকে দায়ি করেছেন ৷ ফাওয়ানজে বলেন, ‘গত দুই মাসে মাঙ্গু কাউন্টিতে আমাদের ৫০টিরও বেশি সম্প্রদায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আমাদের লোকেরা আর তাদের খামার বা বাড়িতে যেতে পারে না, তাসত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে না ।’।