তস্য সঞ্জনয়ন হর্ষং কুরুবৃদ্ধঃ পিতামহঃ।
সিংহনাদং বিনদ্যোচ্চৈঃ শাং দখৌ প্রতাপবান্ ৷৷ ১২ ৷৷
তখন কুরুবংশের বৃদ্ধ পিতামহ ভীষ্ম দুর্যোধনের হর্ষ উৎপাদনের জন্য সিংহের গর্জনের মতো অতি উচ্চনাদে তাঁর শঙ্খ বাজালেন।
ততঃ শঙ্খাশ্চ ভের্যশ্চ পণবানকগোমুখাঃ ।
সহসৈবাভ্যহন্যস্ত স শব্দস্তুমুলোহভবৎ ৷৷ ১৩ ৷৷
তারপর শঙ্খ, ভেরী, পণব, আনক, ঢাক ও গোমুখ শিঙাসমূহ হঠাৎ একত্রে ধ্বনিত হয়ে এক তুমুল শব্দের সৃষ্টি হল।
ততঃ শ্বেতৈইয়ৈযুক্তে মহতি স্যন্দনে স্থিতৌ ।
মাধবঃ পাণ্ডবশ্চৈব দিব্যৌ শঙ্খৌ প্ৰদঋতুঃ ৷৷ ১৪ ৷৷
অন্য দিকে, শ্বেত অশ্বযুক্ত এক দিব্য রথে স্থিত শ্রীকৃষ্ণ ও অর্জুন উভয়ে তাঁদের দিব্য শঙ্খ বাজালেন।
পাঞ্চজন্যং হৃষীকেশো দেবদত্তং ধনঞ্জয়ঃ।
পৌণ্ড্রং দখৌ মহাশঙ্খং ভীমকর্মা বৃকোদরঃ || ১৫ ৷৷
তখন, শ্রীকৃষ্ণ পাঞ্চজন্য নামক তাঁর শঙ্খ বাজালেন, অর্জুন বাজালেন, তাঁর দেবদত্ত নামক শঙ্খ এবং বিপুল ভোজনপ্রিয় ও ভীমকর্মা ভীমসেন বাজালেন পৌণ্ড্র নামক তাঁর ভয়ংকর শঙ্খ।
অনন্তবিজয়ং রাজা কুন্তীপুত্রো যুধিষ্ঠিরঃ।
নকুলঃ সহদেবশ্চ সুঘোষমণিপুষ্পকৌ ৷৷ ১৬ ৷৷
কাশ্যশ্চ পরমেষ্বাসঃ শিখণ্ডী চ মহারথঃ।
ধৃষ্টদ্যুম্নো বিরাটশ্চ সাত্যকিশ্চাপরাজিতঃ ।। ১৭
দ্রুপদো দ্রৌপদেয়াশ্চ সর্বশঃ পৃথিবীপতে।
সৌভদ্রশ্চ মহাবাহুঃ শঙ্খান্ দম্মুঃ পৃথক্ পৃথক্ ৷৷ ১৮ ৷৷
কুন্তীপুত্র মহারাজ যুধিষ্ঠির অনন্তবিজয় নামক শঙ্খ বাজালেন এবং নকুল ও সহদেব বাজালেন সুঘোষ ও মণিপুষ্পক নামক শঙ্খ। হে মহারাজ! তখন মহান ধনুর্ধর কাশীরাজ, প্রবল যোদ্ধা শিখণ্ডী, ধৃষ্টদ্যুম্ন, বিরাট, অপরাজিত সাত্যকি,ধ্রুপদ, দ্রৌপদীর পুত্রগণ, সুভদ্রার মহা বলবান পুত্র এবং অন্য সকলে তাঁদের নিজ নিজ পৃথক শঙ্খ বাজালেন।
স ঘোষো ধার্তরাষ্ট্রীণাং হৃদয়ানি ব্যদারয়ৎ ।
নভশ্চ পৃথিবীং চৈব তুমুলোহভ্যনুনাদয়ন্ ৷৷ ১৯।
শঙ্খ-নিনাদের সেই প্রচণ্ড শব্দ আকাশ ও পৃথিবী প্রতিধ্বনিত করে ধৃতরাষ্ট্রের পুত্রদের হৃদয় বিদারিত করতে লাগল।
অথ ব্যবস্থিতান দৃষ্ট্বা ধার্তরাষ্ট্রান কপিধ্বজঃ।
প্রবৃত্তে শস্ত্রসম্পাতে ধনুরুদ্যম্য পাণ্ডবঃ।
হৃষীকেশং তদা বাক্যমিদমাহ মহীপতে ৷৷ ২০ ৷৷
সেই সময় পাণ্ডুপুত্র অর্জুন হনুমান চিহ্নিত পতাকা শোভিত রথে অধিষ্ঠিত হয়ে,তাঁর ধনুক তুলে নিয়ে শর নিক্ষেপ করতে প্রস্তুত হলেন। হে মহারাজ! ধৃতরাষ্ট্রের পুত্রদের সমরসজ্জায় বিন্যস্ত দেখে, অর্জুন তখন শ্রীকৃষ্ণকে এই কথাগুলি বললেন–
অর্জুন উবাচ
সেনয়োরুভয়োর্মধ্যে রথং স্থাপয় মেহচ্যুত ।
যাবদেতান্নিরীক্ষেঽহং যোদ্ধকামানবস্থিতান্ ৷৷ ২১ ৷৷
কৈর্ময়া সহ যোদ্ধব্যমস্মিন্ রণসমুদ্যমে ।। ২২ ৷৷
হে অচ্যুত! তুমি উভয় পক্ষের সৈন্যদের মাঝখানে আমার রথ স্থাপন কর, যাতে আমি দেখতে পারি যুদ্ধ করার অভিলাষী হয়ে কারা এখানে এসেছে এবং এই মহা সংগ্রামে আমাকে কাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে।
যোৎস্যমানানবেক্ষেঽহং য এতেহত্ৰ সমাগতাঃ ।
ধার্তরাষ্ট্রস্য দুর্বুদ্ধেযুদ্ধে প্রিয়চিকীর্ষবঃ ৷৷ ২৩ ৷৷
ধৃতরাষ্ট্রের দুর্বুদ্ধিসম্পন্ন পুত্রকে সন্তুষ্ট করার বাসনা করে যারা এখানে যুদ্ধ করতে এসেছে, তাদের আমি দেখতে চাই।
সঞ্জয় উবাচ
এবমুক্তো হৃষীকেশো গুড়াকেশেন ভারত ।
সেনয়োরুভয়োমধ্যে স্থাপয়িত্বা রথোত্তমম্ ।। ২৪
সঞ্জয় বললেন- হে ভরত বংশধর! অর্জুন কর্তৃক এভাবে আদিষ্ট হয়ে, শ্রীকৃষ্ণ সেই উত্তম রথটি চালিয়ে নিয়ে উভয়পক্ষের সৈন্যদের মাঝখানে রাখলেন ।
★ শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ রচিত “শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা যথাযথ” গ্রন্থের মূল সংস্কৃত শ্লোক ও অনুবাদ ৷