অথ চৈনং নিত্যজাতং নিত্যং বা মন্যসে মৃতম্ ।
তথাপি ত্বং মহাবাহো নৈনং শোচিতুমর্হসি ৷৷ ২৬ ৷
হে মহাবাহো ! আর যদি তুমি মনে কর যে, আত্মার বারবার জন্ম হয় এবং মৃত্যু হয়,তা হলেও তোমার শোক করার কোন কারণ নেই।
জাতস্য হি ধ্রুবো মৃত্যুধ্রুবং জন্ম মৃতস্য চ ।
তস্মাদপরিহার্যেহর্থে ন ত্বং শোচিতুমর্হসি ৷৷ ২৭ ৷৷
যার জন্ম হয়েছে তার মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী এবং যার মৃত্যু হয়েছে তার জন্মও অবশ্যম্ভাবী। অতএব অপরিহার্য কর্তব্য সম্পাদন করার সময় তোমার শোক করা উচিত নয়।
অব্যক্তাদীনি ভূতানি ব্যক্তমধ্যানি ভারত ।
অব্যক্তনিধনান্যেব তত্র কা পরিদেবনা ৷৷ ২৮ ৷৷
হে ভারত! সমস্ত সৃষ্ট জীব উৎপন্ন হওয়ার আগে অপ্রকাশিত ছিল, তাদের স্থিতিকালে প্রকাশিত থাকে এবং বিনাশের পর আবার অপ্রকাশিত হয়ে যায়।সুতরাং, সেই জন্য শোক করার কি কারণ?
আশ্চর্যবৎ পশ্যতি কশ্চিদনম্
আশ্চর্যবদ বদতি তথৈব চান্যঃ ।
আশ্চর্যবচ্চৈনমন্যঃ শৃণোতি
শ্ৰুত্বাপ্যেনং বেদ ন চৈব কশ্চিৎ ৷৷ ২৯ ৷৷
কেউ এই আত্মাকে আশ্চর্যবৎ দর্শন করেন, কেউ আশ্চর্যভাবে বর্ণনা করেন এবং কেউ আশ্চর্য জ্ঞানে শ্রবণ করেন, আর কেউ শুনেও তাকে বুঝতে পারেন না।
দেহী নিত্যমবধ্যোইয়ং দেহে সর্বস্য ভারত ।
তস্মাৎ সর্বাণি ভূতানি ন ত্বং শোচিতুমর্হসি ৷৷ ৩০।
হে ভারত! প্রাণীদের দেহে অবস্থিত আত্মা সর্বদাই অবধ্য। অতএব কোন জীবের জন্য তোমার শোক করা উচিত নয়।
স্বধর্মমপি চাবেক্ষ্য ন বিকম্পিতুমর্হসি।
ধর্মাদ্ধি যুদ্ধাচ্ছেয়োহন্যৎ ক্ষত্রিয়স্য ন বিদ্যতে ৷৷ ৩১ ৷৷
ক্ষত্রিয়রূপে তোমার স্বধর্ম বিবেচনা করে তোমার জানা উচিত যে, ধর্ম রক্ষার্থে যুদ্ধ করার থেকে ক্ষত্রিয়ের পক্ষে মঙ্গলকর আর কিছুই নেই। তাই, তোমার দ্বিধাগ্রস্ত হওয়া উচিত নয়।
যদৃচ্ছয়া চোপপন্নং স্বর্গদ্বারমপাবৃতম।
সুখিনঃ ক্ষত্রিয়াঃ পার্থ লভন্তে যুদ্ধমীদৃশম্ ।। ৩২।
হে পার্থ! স্বর্গদ্বার উন্মোচনকারী এই প্রকার ধর্মযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সুযোগ না চাইতেই যে সব ক্ষত্রিয়ের কাছে আসে, তাঁরা সুখী হন।
অথ চেত্ত্বমিমং ধর্মং সংগ্রামং ন করিষ্যসি ।
ততঃ স্বধর্মং কীর্তিং চ হিত্বা পাপমবাপ্স্যসি ।। ৩৩।
কিন্তু, তুমি যদি এই ধর্মযুদ্ধ না কর, তা হলে তোমার স্বীয় ধর্ম এবং কীর্তি থেকে দ্রষ্ট হয়ে পাপ ভোগ করবে।
অকীর্তিং চাপি ভূতানি কথয়িষ্যস্তি তেঽব্যয়াম্ ।
সম্ভাবিতস্য চাকীর্তিমরণাদতিরিচ্যতে || ৩৪ ।।
সমস্ত লোক তোমার কীর্তিহীনতার কথা বলবে এবং যে-কোন মর্যাদাবান লোকের পক্ষেই এই অসম্মান মৃত্যু অপেক্ষাও অধিকতর মন্দ।
ভয়াদ্ রণাদুপরতং মংস্যন্তে ত্বাং মহারথাঃ ।
যেষাং চ ত্বং বহুমতো ভূত্বা যাস্যসি লাঘবম্ ।। ৩৫ ৷৷
সমস্ত মহারথীরা মনে করবেন যে, তুমি ভয় পেয়ে যুদ্ধক্ষেত্র পরিত্যাগ করেছ এবং তুমি যাদের কাছে সম্মানিত ছিলে, তারাই তোমাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য জ্ঞান করবে।
অবাচ্যবাদাংশ্চ বহুূন্ বদিষ্যন্তি তবাহিতাঃ।
নিন্দন্তস্তব সামর্থ্যং ততো দুঃখতরং নু কিম্ || ৩৬।
তোমার শত্রুরা তোমার সামর্থ্যের নিন্দা করে বহু অকথ্য কথা বলবে। তার চেয়ে অধিকতর দুঃখদায়ক তোমার পক্ষে আর কি হতে পারে?
হতো বা প্রাপ্স্যসি স্বর্গং জিহ্বা বা ভোক্ষ্যসে মহীম্ ।
তস্মাদুত্তিষ্ঠ কৌন্তেয় যুদ্ধায় কৃতনিশ্চয়ঃ ৷৷ ৩৭ ৷৷
হে কুন্তীপুত্র! এই যুদ্ধে নিহত হলে তুমি স্বর্গ লাভ করবে, আর জয়ী হলে পৃথিবী ভোগ করবে। অতএব যুদ্ধের জন্য দৃঢ়সঙ্কর হয়ে উত্থিত হও।
★ শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ রচিত “শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা যথাযথ” গ্রন্থের মূল সংস্কৃত শ্লোক ও অনুবাদ ৷