বেদ ও পুরান অনুসারে প্রথমে এই মহাবিশ্বে কিছুই ছিল না সম্পূর্ন শূন্য ছিল, সেই শূন্যে ছিল শুধুমাত্র এক প্রদীপ্ত গর্ভ যার নাম হিরণ্যগর্ভ, যার মধ্যে ছিল অসীম ও অনন্ত জ্ঞান। ঋক বেদ অনুসারে হিরণ্যগর্ভ থেকেই সৃষ্টি শুরু হয়েছে এবং পরব্রহ্মরই এক রূপ হল এই হিরণ্যগর্ভ: এর মধ্যে বিদ্যমান তত্ব হলেন অসীম ও অনন্ত জ্ঞান। এই হিরণ্যগর্ভ থেকে পরব্রহ্ম তাঁর ইচ্ছা অনুসারে বিরাট রূপ ধারণ করলেন এবং যোগ মায়া কে প্রকাশ করলেন। তাই ইনি (যোগ মায়া) হলেন বিষ্ণু শক্তি। এনারই অপর নাম গিরিজা এবং বিরজা। ইনিই মাতা প্রকৃতি, এই অনন্ত কোটি ব্রহ্মাণ্ডে শ্রী হরি নারায়ণ বাদ দিয়ে এনার মত মায়া অন্য আর কারও নেই তাই ইনি যোগমায়া এবং বৈষ্ণব আচারানুষ্ঠানে এঁনাকে নারায়ণী বলা হয়। শৈবরা এঁনাকে শিবের অর্ধাঙ্গিনী রূপে পূজা করেন, শাক্তরা এঁনাকে আদি শক্তি রূপে পূজা করেন। এই দেবী যোগমায়াই পরে পুরান ও উপ পুরাণে আখ্যায়িত হন দেবী দূর্গা নামে। এই দেবী দূর্গার অন্য একটি রূপ হলেন মা কালী।
এই মা কালীই মহামায়া সনাতনী, শক্তিরূপা, গুণময়ী। তিনি এক, তবু প্রকাশ বিভিন্ন, তিনিই দেবী নারায়ণী, আবার ব্রহ্মশক্তিরূপা ব্রহ্মাণী, কখনো মহেশ্বেরী রূপে প্রকাশমানা, কখনো বা নির্মলা কুমারী রূপধারিণী, কখনো মহাবজ্ররূপিণী ঐন্দ্রী, উগ্রা শিবদূতী, নৃমুণ্ডমালিনী তিনিই আবার তমোময়ী নিয়তি। তিনিই কখনো বা চণ্ডিকা, কখনো বা অম্বিকা, কখনো বা বৈষ্ণবী, কখনো বা মহাগৌরী ,কখনো বা কৌষিকী, কখনো বা কাত্যায়নী, কখনো বা কমলাত্মিকা, কখনো বা ভুবনেশ্বরী ও কখনো বা ললিতা কখনো বা দশমহাবিদ্যা, কখনো বা কালী নামে খ্যাতা।
সংস্কৃতে শ্রী কালী তান্ডব স্তোত্রম হল মা কালীর কাছে শক্তি প্রার্থনা করা । স্তোত্রটি এই জ্ঞান দেয় যে তিনি কে, কেন তিনি সৃষ্টি করেছেন, কেন তিনি ধ্বংস করেন, কে তাঁকে শান্ত করেছে। এছাড়াও এই স্তোত্রম শোনার পর একজন নিজেকে উদ্যমী এবং নির্ভীক বোধ করে। শ্রী কালী তান্ডব স্তোত্রম আমাদের ভিতরের শক্তিকে শক্তিশালী করে।
श्रीकालीताण्डवस्तोत्रम्
হুঁহুঁকারে শভারুঝে নীলনীরজলোচনে।
ত্রৈলোক্যকমুখে দিব্যে কালিকায় নমোহস্তুতে ॥ ১ ॥
প্রত্যালীমপদে ঘোরে মুণ্ডমালাপ্রলম্বিতে ।
খর্বে লম্বোদরে ভীমে কালিকায়ে নমোস্তুতে ॥ ২॥
নবযৌনসম্পন্নে গজকুম্ভোপামস্তানি ।
বাগেশ্বরী শিবে শান্তেলিকায়ে নমোস্তুতে ॥ ৩ ॥
লোলজিহ্বে দুরারোহে নেত্রত্রয়বিভুষিতে।
ঘোরহাস্যস্করে(ঘোরহাস্যস্কটা কারে) দেবী কালিকায় নমোস্তুতে ॥ ৪ ॥
ব্যাঘ্রচর্মম্বরধরে খড়্গকর্ত্রিকর ধরে ।
কপালেন্দিবরে বামে কালিকায় নমোস্তুতে ॥ ৫ ॥
নীলোৎপলজটাভারে সিঁদুরেন্দুমুখোদরে।
স্ফুরদ্বক্তোষ্টদশনে কালিকায় নমোস্তুতে ॥ ৬॥
প্রলয়ানল ধুম্রাভে চন্দ্রসূর্যগ্নিলোচনে।
শৌলবাসে শুভে মাতঃ কালিকায় নমোস্তুতে ॥ ৭।।
ব্রহ্মশম্ভুজলৌগে চ শব মেং প্রসংস্থিতে ।
প্রেতকোটিসমযুক্তে কালিকায় নমোস্তুতে ॥ ৮ ॥
কৃপাময়ি হরে মাতঃ সর্বশপরিপুরিতে।
বরদে ভোগে মোক্ষে কালিকায় নমোস্তুতে ॥ ৯ ॥
হত্যুতত্রান্তরর্গতমম শ্রীকালীতাণ্ডবস্তোত্র সর্বম।
স্ফুরদ্বক্তোষ্টদশনে কালিকায় নমোস্তুতে ॥ ১০ ॥